
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সহকারী সামরিক সচিবের সিল-স্বাক্ষর জালিয়াতির মামলার আসামি লালমনিরহাটের করিম মিয়াকে জামিন না দিয়ে পুলিশে সোর্পদ করেছেন হাইকোর্ট।
করিম মিয়ার আগাম জামিনের আবেদন খারিজ করে বুধবার বিচারপতি শেখ মো. জাকির হোসেন ও বিচারপতি কেএম জাহিদ সারওয়ারের বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালত থেকেই করিম মিয়াকে শাহবাগ থানার পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। পরে পুলিশ তাকে চালান করে দেয় বলে জানিয়েছেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম। আদালতে জামিন আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মো. আমজাদ হোসেন।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম বলেন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সহকারী সামরিক সচিব মো. সাইফ উল্লাহর সিল-স্বাক্ষর জাল করেছেন আসামি করিম মিয়া। পরে তিনজনের বিরুদ্ধে জালিয়াতির মামলা হয়।
তিনি বলেন, এই মামলায় দুই আসামি গ্রেফতার হলেও করিম মিয়া পলাতক ছিলেন। এর মধ্যে তিনি হাইকোর্টের আগাম জামিন চেয়ে আবেদন করেন। আজ (বুধবার) তার আবেদনটির শুনানির পর জামিন না দিয়ে আদালত শাহবাগ থানার পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছেন।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আরও বলেন, আদালত বলেছেন- প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের স্বাক্ষর জালের যে প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে তা ক্ষমার অযোগ্য। এদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়াটা জরুরি।
গত বছর ১৪ ফেব্রুয়ারি রংপুর-বগুড়া মহাসড়কে বড় ঈদগাহ হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির সামনে রাত্রীকালীন পাহাড়ার সময় বরাগ বাঁশবোঝাই লালমনিরহাট থেকে ঢাকাগামী একটি ট্রাক থামায় হাইওয়ে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদে ট্রাকের ড্রাইভার মো. আজিম উদ্দিন ও তার সহযোগী (হেলপার) মো. মোতালেব হোসেন জানান, এই বাঁশ প্রধানমন্ত্রীর বাস ভবনে রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানের জন্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। তখন তারা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সহকারী সামরিক সচিব মো. সাইফ উল্লাহর সিল-স্বাক্ষর দেওয়া একটি চিঠি দেখায়।
জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে ড্রাইভার আজিম উদ্দিন জানান, এ চিঠিটি ট্রাকের মালিক মো. করিম মিয়া তাকে দিয়েছেন। এতে পুলিশের সন্দেহ হলে বাঁশভর্তি ট্রাক ও চিঠিটি জব্দ করে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা হাইওয়ে পুলিশের বগুড়া অঞ্চলের সুপার ও সহকারী পুলিশ সুপারকে জানান।
পুলিশ সুপার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সহকারী সামরিক সচিব মো. সাইফ উল্লাহর সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি জানান যে, তিনি লেফট্যানেন্ট কর্নেল নন, তিনি কর্নেল। তাছাড়া প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে এ ধরনের কোনো চিঠি দেওয়া হয়নি। তখন আসামিরা স্বাক্ষর জালের কথা স্বীকার করেন।
পরে ট্রাকের মালিক করিম মিয়াসহ তাদের বিরুদ্ধে মামলা করেন রংপুরের পীরগঞ্জের বড়দরগাহ পুলিশ ফাঁড়ির এসআই মোয়াজ্জেম হোসেন।
ট্রাকের মালিক আসামি করিমের বাড়ি লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার উত্তর বালাপাড়া গ্রামে। ট্রাকের ড্রাইভার মো. আজিম উদ্দিনের বাড়ি একই উপজেলার উত্তর বত্রিশ হাজারী গ্রামে। আর ড্রাইভারের সহযোগী (হেলপার) মো. আজিম উদ্দিনের বাড়ি উপজেলার হরেরাম গ্রামে।