চট্টগ্রামে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ব্যবসায়ীকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে মুক্তিপণ আদায়ের অভিযোগে দায়ের হওয়া মামলায় চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) ৬ পুলিশ সদস্যকে জিজ্ঞাসাবাদে ২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
মঙ্গলবার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ শহিদুল্লাহ কায়সারের আদালত রিমান্ডের এ আদেশ দেন।
চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের কোর্ট পরিদর্শক সুব্রত ব্যানার্জী জানান, আনোয়ারা থানায় ৬ পুলিশের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলায় জিজ্ঞাসাবাদে পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়। শুনানি শেষে আদালত তাদের প্রত্যেকের দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।
৬ পুলিশ সদস্য হলেন-সিএমপি কমিশনার সালেহ মোহাম্মদ তানভীরের দেহরক্ষী কনস্টেবল মোরশেদ বিল্লাহ, নগর পুলিশের উপ-কমিশনার গোয়েন্দা (পশ্চিম) মনজুর মোরশেদের দেহরক্ষী কনস্টেবল মো. মাসুদ, নগরীর দামপাড়া রিজার্ভ ফোর্স অফিসে কর্মরত কনস্টেবল শাকিল খান ও এস্কান্দর হোসেন, নগর পুলিশের সহকারী কমিশনার কর্ণফুলী কার্যালয়ের কম্পিউটার অপারেটর কনস্টেবল মনিরুল ইসলাম ও নগর গোয়েন্দা পুলিশ (উত্তর) কর্মরত কনস্টেবল আবদুল নবী।
ডিবি পুলিশ পরিচয়ে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে মুক্তিপণ আদায়ের অভিযোগে মামলাটি দায়ের করেন আনোয়ারা উপজেলার পূর্ব বৈরাগ এলাকার আবদুল মান্নান। তিনি ঠিকাদারি ব্যবসা করেন।
মামলার এজাহারে ভিকটিম মো. আবদুল মান্নান অভিযোগ করেন, গত ৩ ফেব্রুয়ারি রাত ২টায় চারটি মোটরসাইকেল নিয়ে ৮ জন ব্যক্তি তাকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায়। ৪টি মোটরসাইকেলের একটিতে তাকে মাঝখানে বসিয়ে দুইজন আরোহী ২ জন এবং অপর ৩টি মোটরসাইকেলে ২ জন করে মোট ৮ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি পটিয়া থানাধীন ভেল্লাপাড়া ব্রিজের পূর্বপাশে কৈয়গ্রাম রাস্তার মাথা এলাকার একটি টং চায়ের দোকানে নিয়ে যায়।
ওই স্থানে নিয়ে গিয়ে তাকে বলে তার বিরুদ্ধে ডিবিতে অভিযোগ আছে। অভিযোগ থেকে নাম কাটাতে ১০ লাখ টাকা লাগবে। আবদুল মান্নানের মোবাইল থেকে আত্মীয়স্বজনকে ফোন দিয়ে টাকা আনতে বলা হয়। অনেক দর কষাকষির করে অবশেষে ১ লাখ ৮০ হাজার ৫০০ টাকা এনে দিলে তাকে উক্ত জায়গা থেকে ছেড়ে দিয়ে ভোর ৫টার দিকে তারা পটিয়াগামী সড়ক দিয়ে মোটরসাইকেলে চলে যায়।
এ সময় আবদুল মান্নান লাল রংয়ের একটি পালসার ব্যান্ডের মোটরসাইকেল নম্বর শনাক্ত করেন। যার রেজি. নম্বর চট্টমেট্রো-ল-১২-২৪২১। অপর তিনটি মোটরসাইকেল সুজুকি এসএফ (নীল রং), সুজুকি জিক্সার (লাল রং), ইয়ামাহা এফজেড (খয়েরী রং) নম্বর প্লেটবিহীন। ৮ জনের মধ্যে একজনের গায়ের একটি জ্যাকেটে ইংরেজিতে ‘ডিবি’ লেখা ছিল।
৭ ফেব্রুয়ারি আনোয়ারা থানায় দায়ের করা আবদুল মান্নানের এই মামলার বিষয়ে অনানুষ্ঠানিক তদন্ত শুরু করেন সিএমপির বিশেষ শাখার একজন কর্মকর্তা। ওই কর্মকর্তা খোঁজ-খবর নিয়ে জানতে পারেন আবদুল মান্নানকে তুলে নিয়ে মুক্তিপণ আদায়ে জড়িত সবাই পুলিশ সদস্য।
তারা সিএমপিতে কর্মরত আছেন। মূলত ওই পুলিশ কর্মকর্তার নিজস্ব তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ার পরই আনোয়ারা থানা পুলিশ ৬ পুলিশ সদস্যকে গ্রেফতার করে।