কুমিল্লার দেবিদ্বারে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার ও মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিস্তম্ভ উদ্বোধন করা হয়েছে। বুধবার দুপুরে সংসদ সদস্য রাজী মোহাম্মদ ফখরুল উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গনে প্রায় ১৭ লক্ষ টাকা ব্যয়ে নব নির্মিত কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারটি উদ্বোধন করেন।
রাজী ফখরুল বলেন, ভাষা আন্দোলনের প্রতীক শহীদ মিনার। ভাষা শহীদদের স্মৃতিকে অমর করে রাখার জন্য দেবিদ্বার উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে দৃষ্টিনন্দন শহীদ মিনারটি উদ্বোধন করা হয়েছে। আমি মনে করি নতুন প্রজম্ম এ শহীদ মিনার থেকে ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস জানতে পারবে। ভাষার জন্য যারা জীবন দিয়েছে তাঁরা এ শহীদ মিনারের মাধ্যমে আমাদের হৃদয়ে হাজার বছর ধরে বেঁচে থাকবে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) হাজী মো. আবুল কাশেম ওমানী, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাকিব হাসান, সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. গিয়াস উদ্দিন, অফিসার ইনচার্জ ওসি মো. জহিরুল আনোয়ার, স্বেচ্ছাসেবকলীগের যুগ্ম আহবায়ক জিএস আবদুল মান্নান মোল্লা, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য প্রভাষক মো. সাইফুল ইসলাম শামীম, উপজেলা ছাত্রলীগের আহবায়ক মো. ইকবাল হোসেন রুবেল, উত্তর জেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সদস্য মো. সাদ্দাম হোসেন।
ইউএনও রাকিব হাসান বলেন, উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে একটি ছোট শহীদ মিনার ছিলো, যেখানে শহীদ দিবসে শ্রদ্ধা জানাতে মানুষেরা হিমসীম খেতে হয়। পরে ছোট শহীদ মিনারটির স্থান পরিবর্তন করে আরও বড় আকারে প্রায় ১৭ লক্ষ টাকা ব্যয়ে নতুন করে নির্মাণ করা হয়েছে। এটি নতুন প্রজন্মের জন্য মাতৃভাষা দিবসের উপহার। তিনি আরও বলেন, দেশভাগের পর থেকেই ভাষার দাবিতে বিভক্ত হয়ে পড়ে পাকিস্তান। পূর্ব পাকিস্তানের প্রায় ৯৯ শতাংশ মানুষের ভাষা ছিল বাংলা। কিন্তু বাংলা ভাষাভাষীদের উপর উর্দু ভাষাকে চাপিয়ে দেয়ার গুঞ্জনেই প্রতিবাদী হয়ে উঠে বাঙ্গালীরা। ১৯৪৭ সালের নভেম্বর-ডিসেম্বরে ভাষার দাবিতে বিক্ষোভ শুরু হলেও ১৯৪৮ সালের মার্চ মাসে আন্দোলনে রূপ নেয়, যা ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি চরম প্রকাশ ঘটে। ওই দিন ছাত্ররা ১৪৪ ধারা অমান্য করে রাজপথে বেরিয়ে এলে পুলিশ তাদের ওপর গুলি চালায়। এতে আবুল বরকত, আবদুল জব্বার, আবদুস সালামসহ বেশ কয়েকজন ছাত্র-যুবক হতাহত হন। যারা ভাষা জন্য আত্মত্যাগ করেছেন তাদের স্মৃতি শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করার জন্য এই শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়েছে।
অপরদিকে একই দিনে জাফরগঞ্জ ইউনিয়নের বারুর গ্রামে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতি স্তম্ভ উদ্বোধন করেছেন রাজী ফখরুল। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাকিব হাসানের পরিকল্পনা ও ব্যবস্থাপনা স্মৃতি স্তম্ভটি নির্মাণ করা হয়েছে।
জানা যায়, ১৯৭১ সালের ৬ সেপ্টেম্বর বারুর গ্রামের স্মৃতি স্তম্ভ স্থানে পাক হানাদার বাহিনী ও রাজাকারদের সাথে সম্মুখ যুদ্ধে ওই গ্রামের ৫জন মুক্তিযোদ্ধা ও ৩ জন নিরীহ বাঙ্গালী শহীদ হন, পরে ৮নভেম্বর কালিকাপুরে বারুর গ্রামের আরও দুইজন শহীদ হন।