পরীক্ষা বিবেচনায় করোনায় আক্রান্তের হার
৫ শতাংশের নিচে নামলেই সেটিকে স্বস্তিদায়ক মনে করা হয়। বাংলাদেশে কয়েক দিন
ধরেই এই হার পাঁচের নিচে রয়েছে। সোমবার আক্রান্তের এই হার ছিল ২.৩ শতাংশ।
এটি অবশ্যই স্বস্তিদায়ক। তবে যেকোনো সময় পাল্টে যেতে পারে এই চিত্র। নানা
কারণে হঠাৎ করেই বেড়ে যেতে পারে আক্রান্তের হার। আর যুক্তরাজ্য বা দণি
আফ্রিকায় ভাইরাসের উচ্চ সংক্রমণযোগ্য যেসব ধরন পাওয়া গেছে, সেগুলো কোনো
কারণে দেশে ছড়িয়ে পড়লে তো কথাই নেই। দ্রুত বেড়ে যাবে সংক্রমণের হার। তাই
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, সংক্রমণের হার কমা কিংবা টিকা দেওয়া শুরু হলেও একটি
নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা অত্যন্ত জরুরি।
কিন্তু রাস্তাঘাট, হাট-বাজার, গণপরিবহন বা সামাজিক মেলামেশার স্থানগুলোতে
দেখা যায় উল্টো চিত্র। বেশির ভাগ মানুষই মাস্ক পরছে না। জনসমাগমের
স্থানগুলোতে আগে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা থাকলেও এখন তা নেই বললেই চলে। ন্যূনতম
দূরত্বও মানা হচ্ছে না। এটি কোনোক্রমেই ভালো লক্ষণ নয়। বিষয়টি
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনারও উদ্বেগের কারণ হয়েছে। তাই তিনি সবাইকে মাস্ক
পরা, হাত ধোয়াসহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছেন এবং সাবধানে
থাকতে বলেছেন। সোমবার মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে সভাপতিত্বকালে
প্রধানমন্ত্রী এই আহ্বান জানান। একই সঙ্গে তিনি নিবন্ধনের বয়সসীমা ৫৫ থেকে
কমিয়ে ৪০ বছর করার এবং নিবন্ধনপ্রক্রিয়া আরো সহজ করার নির্দেশ দেন।
দেশব্যাপী
গণটিকাদান কর্মসূচি শুরু হয়েছে রবিবার। প্রথম দুই দিনে টিকা দেওয়া হয়েছে
৭৭ হাজার ৬৬৯ জনকে। প্রথম দুই দিনের তুলনায় গতকাল তৃতীয় দিনে মানুষের
উৎসাহ-উদ্দীপনা বেশি দেখা গেছে। কেন্দ্রে উপস্থিতিও বেশি ছিল। টিকা নিয়ে
মানুষের মধ্যে যে দ্বিধাদ্বন্দ্ব কিংবা ভয়ভীতি ছিল, সেসব দ্রুত কেটে
যাচ্ছে। সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত টিকা নেওয়ার জন্য নিবন্ধন করেছেন
পাঁচ লাখ ১২ হাজার পাঁচজন। আগে থেকে নিবন্ধন না করে এনআইডিসহ কেন্দ্রে গিয়ে
নিবন্ধনের সুযোগ রাখায় মানুষ টিকাদান কেন্দ্রে বেশি যাচ্ছে। বয়সসীমা ৪০
করায় এখন টিকাগ্রহীতার সংখ্যা আরো বেড়ে যাবে। টিকা নেওয়ার বিষয়ে
গ্রামাঞ্চলে মানুষের মধ্যে এখনো কিছুটা দ্বিধা থাকলেও প্রধানমন্ত্রী আশা
করেন, দ্রুতই তা কেটে যাবে। প্রধানমন্ত্রী এক মাস বা দুই মাসের মধ্যে
সেকেন্ড ডোজ দিয়ে ফেলার কথাও বলেছেন। এ ছাড়া টিকা কার্যক্রম দ্রুততার সঙ্গে
সম্পন্ন করার জন্য তিনি বেশ কিছু নির্দেশনা দেন।
করোনা মহামারি
মোকাবেলায় আমাদের সঠিক কর্মপরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। সে জন্য এলাকা
ভিত্তিতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা জানা জরুরি। দ্বিতীয় দিনেও দেশের বেশ কিছু
স্থানে অনিয়ম-বিশৃঙ্খলা দেখা গেছে। সেগুলো দূর করতে হবে। মানুষকে টিকা নিতে
উদ্বুদ্ধ করতে হবে। একই সঙ্গে সবাইকে মাস্ক পরা, হাত ধোয়াসহ জরুরি
স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।