সয়াবিন তেলের দাম আরও বেড়েছে
Published : Saturday, 13 February, 2021 at 12:00 AM
এক
সপ্তাহের ব্যবধানে আরেক দফা বেড়েছে সয়াবিন তেলের দাম। বোতলজাত সয়াবিনের
পাশাপাশি খোলা সয়াবিনের দামও বেড়েছে। বেড়েছে খোলা পাম অয়েলের দামও। সরকারি
বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) -এর হিসাবেই গত এক
সপ্তাহে খোলা সয়াবিনের দাম বেড়েছে দুই দশমিক ১৯ শতাংশ। খোলা পাম ওয়েলের দাম
বেড়েছে এক দশমিক দুই শতাংশ। আর পাঁচ লিটার সয়াবিনের দাম বেড়েছে এক দশমিক
৬৮ শতাংশ। ডাল, ময়দা, মসলার মতো অন্যান্য নিত্যপণ্য এবং সবজির দামও বাড়ছে।
বাজারের
তথ্য বলছে, এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি লিটার সয়াবিনের দাম বেড়েছে দুই
টাকা করে। গত সপ্তাহে পাঁচ লিটারের বোতলের দাম ছিল ৬২০ টাকা। এই সপ্তাহে
সেই সয়াবিন বিক্রি হচ্ছে ৬৩০ টাকায়। অর্থাৎ পাঁচ লিটারের বোতলে দাম বেড়েছে
১০ টাকা। প্রসঙ্গত, দুই সপ্তাহ আগে ৬০০ টাকায় পাওয়া যেত এই সয়াবিন। দুই
সপ্তাহের ব্যবধানে পাঁচ লিটারের বোতলের দাম বেড়েছে ৩০ টাকা। এছাড়া এখন এক
লিটার বোতল ১৪০ টাকা পর্যন্ত উঠেছে। যদিও কয়েক মাস আগে এই তেলের দাম ছিল
১০৫ টাকা।
এ প্রসঙ্গে রাজধানীর সেগুনবাগিচা এলাকায় থাকা মনিরুল ইসলাম
জানান, তার জীবনে সয়াবিনের দাম এতটা বৃদ্ধি হওয়ার ঘটনা দেখেননি। তিনি বলেন,
শুধু সয়াবিনের দামই নয়, অন্যান্য জিনিসপত্রের দামও বেড়েছে।
রাজধানীর
বাজারগুলো ঘুরে দেখা যায়, দাম বাড়ার তালিকায় রয়েছে আদা, ময়দা, হলুদ,
তেজপাতাও। কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে আমদানি করা আদা এখন বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকায়।
৩৬
টাকা কেজি খোলা ময়দা বিক্রি হচ্ছে ৩৮ টাকা দরে। ১৭০ টাকা কেজি হলুদ এখন
বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা দরে। ১২০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া তেজপাতা এখন বিক্রি
হচ্ছে ১৪০ টাকা। ১৩০ টাকা কেজি ধনে এখন বিক্রি হচ্ছে ১৭০ টাকা। এছাড়াও দাম
বেড়েছে ব্রয়লার মুরগির।
এর বাইরে মসুর ডাল ও অ্যাংকর ডালের দামও কিছুটা বেড়েছে। শুধু তা-ই নয়, সবজির বাজারও ধীরে ধীরে অস্থির হচ্ছে।
বাজারের
তথ্য বলছে, চালের দাম এখনও রয়েছে সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে। গরিবের
মোটা চালের দাম এখনও ৪৬ টাকা থেকে ৫০ টাকা কেজি। চিকন বা সরু চালের কেজি
এখন ৬২ থেকে ৬৫ টাকা। আর মাঝারি আকারের চালের দাম প্রতি কেজি ৫৫ থেকে ৫৮
টাকা।
সব মিলিয়ে নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন সাধারণ
মানুষ। এ প্রসঙ্গে রাজধানীর মানিকনগর এলাকায় বসবাসকারী আবদুল হাকিম আলী
জানান, সীমিত আয়ের মানুষদের জন্য নিত্যপণ্য কেনাও যেন এখন কঠিন ব্যাপার।
তার মতে, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেড়েছে যেকোনও সময়ের চেয়ে বেশি।
অবশ্য
দাম কমেছে পেঁয়াজের। শুক্রবার (১২ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর বিভিন্ন বাজার
ঘুরে দেখা গেছে, খুচরা পর্যায়ে পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকা, যা গত
সপ্তাহে এক লাফে ৪০ টাকায় উঠেছিল। তার আগে পেঁয়াজের কেজি ৩০ টাকায় বিক্রি
হচ্ছিল।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, খুচরার পাশাপাশি পাইকারিতেও সপ্তাহের
ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম কমেছে। গত সপ্তাহে ১৭৫ টাকা পাল্লা বিক্রি হওয়া
পেঁয়াজ এখন ১২৫ থেকে ১৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সেই হিসাবে পাইকারিতে এক কেজি
পেঁয়াজের দাম পড়ছে ২৫ থেকে ২৭ টাকা।
এদিকে পেঁয়াজের পাশাপাশি আলু ও
ডিমের দামও কিছুটা কমেছে। খুচরা বাজারে এক কেজি নতুন আলু বিক্রি হচ্ছে ১৫
থেকে ১৮ টাকা, যা গত সপ্তাহে ২০ টাকায় উঠেছিল। আর গত সপ্তাহে ১০০ টাকা ডজন
বিক্রি হওয়া ডিমের দাম কিছুটা কমে ৯০ থেকে ৯৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে
গত সপ্তাহের মতো পাকা টমেটোর কেজি বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ৩০ টাকা। শসার
কেজি বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ৩০ টাকার মধ্যে। শিমের কেজি বিক্রি হচ্ছে ২০
থেকে ৪০ টাকা। মুলার কেজি বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ২৫ টাকা, বেগুনের কেজি ৩০
থেকে ৪০ টাকা, পেঁপের কেজি ৩০ থেকে ৩৫ টাকা, গাজরের কেজি ১৫ থেকে ২৫ টাকা
বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহের মতো ফুলকপি ও বাঁধাকপির পিস বিক্রি হচ্ছে ১৫
থেকে ২০ টাকা। তবে লাউ বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা পিস, যা আগের সপ্তাহে
ছিল ৪০ থেকে ৫০ টাকা।