Published : Saturday, 13 February, 2021 at 12:00 AM, Update: 13.02.2021 12:02:35 AM
মাসুদ আলম ।।
৯
মাসের শিশু ইমি ও তার ৪ বছর বয়সী ভাই আরাফাত। ইমির এখন মায়ের কোলে শুয়ে
দুধ খাওয়া আর আরাফাতের মায়ের আঁচল ধরে ঘুরঘুর করে বেড়ানোর কথা। শিশুদুটির
সেই দিন শেষ। ওদের মা আর বেঁচে নেই। পাষ- বাবার হাতে খুন হয়ে তিনি আজ কবরে
শুয়ে আছেন। একই সঙ্গে খুন হয়েছেন ওদের নানিও। আর এই দুই খুনের দায়ে ওদের
বাবা পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়ে আছে কারাগারে। শিশুদুটিকে দেখার আর কেউ
থাকে না এই পৃথিবীতে। দুটি অবুঝ শিশুর জীবনে যখন এমনই এক অন্ধকার নেমে আসে,
ঠিক সেই সময় আলোকিত হাত বাড়িয়ে এগিয়ে আসে পুলিশ। হত্যাকা-ের তদন্ত করতে
এসে অসহায় শিশুদুটির মুখের দিকে তাকিয়ে কেঁদে ওঠে পুলিশের মন। পরে কুমিল্লা
জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে ঘোষণা দেওয়া হয়, শিশুদুটির লালন-পালন, ভরণ-পোষণের
সব দায়িত্ব পালন করবে তারা।
কুমিল্লা জেলার বুড়িচং উপজেলার হালগাঁও
গ্রামে গত ৯ ফেব্রুয়ারি ওই মর্মান্তিক হত্যাকা-ের ঘটনা ঘটে এবং একদিন পরই
জেলা পুলিশ হৃদয়স্পর্শী এই মহৎ উদ্যোগ নেয়।
গত ৯ ফেব্রুয়ারি পারিবারিক
কলহের জের ধরে হালগাঁও গ্রামের লোকমান হোসেন তার স্ত্রী ফারজানা আক্তার
(২৫) ও শাশুড়ি বানু বিবিকে (৫৫) কুপিয়ে হত্যা করে। এই হত্যাকা-ের ঘটনায়
লোকমানকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পওে আদালত তাকে কারাগারে পাঠায়। এভাবে শিশু
ইমি ও আরাফাতের মা ও নানি কবরে এবং বাবা কারাগারে চলে যাওয়ায় ওদের বেঁচে
থাকা ও আশ্রয় দেওয়ার মতো জগৎ-সংসারে আর কেউই থাকে না। তখনই কুমিল্লা জেলা
পুলিশ সুপার মো. ফারুক আহমেদের নির্দেশক্রমে গত বৃহস্পতিবার জেলা পুলিশের প
থেকে অসহায় শিশুদুটির জন্য উপহার সামগ্রী ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি
পৌঁছে দেয়া হয় এবং ওদের সার্বিক দায়িত্ব বহনের কথা জানানো হয়।
জেলা
পুলিশের এমন সহায়তার কথা নিশ্চিত করে বুড়িচং থানার ওসি মোজাম্মেল হক বলেন,
শিশু ইমি ও আরাফাতের মা ও নানীকে কুপিয়ে হত্যা কওে ওদেরই বাবা। এরপর তাকে
গ্রেফতার করা হয়। মা ও নানী কবরে এবং বাবা কারাগারে চলে যাওয়ায় শিশুদুটি
অসহায় হয়ে পড়ে। ওদের বেঁচে থাকার কথা চিন্তা করে পুলিশ সুপার মো. ফারুক
আহমেদের নির্দেশে জেলা পুলিশ ওই দুই শিশুর খাদ্য-বস্ত্র-চিকিৎসাসহ সব ধরনের
ভরণপোষণের দায়িত্ব নেওয়ার কথা জানায়।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা চেয়েছি
শিশুদুটিকে নিয়ে আসতে। তখন তাদের চাচা-চাচি ওদের দেখভাল করার কথা জানান।
পওে আলোনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত হয়, তাদের কাছে শিশুদুটি থাকবে আর জেলা পুলিশ
ওদের সব খরচ বহন করবে।’ ##