নিজস্ব
প্রতিবেদক: দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় ২৯১ জন কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়েছে, যা গত
বছরের ১৬ এপ্রিলের পর সর্বনি¤œ। একদিনে শনাক্ত রোগী প্রায় তলানিতে নেমে
এলেও আগের দিনের চেয়ে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েছে।
শনিবার বিকালে সংবাদ মাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর কোভিড-১৯ সংক্রমণ পরিস্থিতির সর্বশেষ তথ্য তুলে ধরে।
গত একদিনে আরও ২৯১ জনের মধ্যে সংক্রমণ ধরা পড়ায় দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ৫ লাখ ৪০ হাজার ২৬৬ জন হয়েছে।
এক দিনে ১৩ জনের মৃত্যুতে দেশে করোনাভাইরাসে মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮ হাজার ২৬৬ জন।
স্বাস্থ্য
অধিদপ্তরের হিসাবে বাসা ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরও ৩৭৪ জন রোগী সুস্থ হয়ে
উঠেছেন গত এক দিনে। তাতে এ পর্যন্ত সুস্থ রোগীর মোট সংখ্যা বেড়ে ৪ লাখ ৮৬
হাজার ৭৬৭ জন হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, শনিবার বেলা আড়াইটা পর্যন্ত
টিকার জন্য নিবন্ধন করেছেন মোট ১৪ লাখ ৯২ হাজার ৩৪৫ জন। তাদের মধ্য টিকা
নিয়েছেন ৫ লাখ ৪২ হাজার ৩০৯ জন।
বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ
ধরা পড়েছিল গত বছরের ৮ মার্চ; এর মধ্যে গত বছরের ২ জুলাই ৪ হাজার ১৯ জন
কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়, যা এক দিনের সর্বাধিক শনাক্ত।
প্রথম রোগী
শনাক্ত হওয়ার পর প্রতিদিনই রোগীর সংখ্যা বাড়ছিল, ১৭ এপ্রিল ২৬৬ জন রোগী
শনাক্তের খবর জানিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। পরদিন ১৮ এপ্রিল সংখ্যাটি ৩০০
ছাড়িয়ে যায়, এরপর গত ৬ ফেব্রুয়ারি অবধি এক দিনের জন্য দিনে শনাক্ত রোগী ৩০০
এর নিচে নামেনি।
গত কিছু দিন ধরে সংক্রমণে ধীর গতির মধ্যে ৭ ফেব্রুয়ারি
শনাক্ত রোগী ২৯২ তে নেমে এসেছিল। এরপর সপ্তাহজুড়ে রোগীর সংখ্যা বাড়লেও তা
৫০০ এর নিচেই ছিল। ১৩ ফেব্রুয়ারি ফের ৩০০ এর নিচে নামল।
স্বাস্থ্য
অধিদপ্তর বলছে, গত এক সপ্তাহে নমুনা পরীক্ষার হার দেড় শতাংশ বাড়লেও রোগী
শনাক্তের হার প্রায় ১৮ শতাংশ কমেছে। মৃত্যুর হারও ৩ শতাংশ কমেছে। গত ২৪
ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার দাঁড়িয়েছে ২ দশমিক ২৬ শতাংশ।
মৃত্যুর হার দাঁড়িয়ে ১ দশমিক ৫৩ শতাংশ।
দেশে প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন
পর গত বছরের ১৮ মার্চ প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
এ বছর ২৩ জানুয়ারি তা আট হাজার ছাড়িয়ে যায়।
এর মধ্যে গত বছরের ৩০ জুন এক দিনেই ৬৪ জনের মৃত্যুর খবর জানানো হয়, যা এক দিনের সর্বোচ্চ মৃত্যু।
জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় বিশ্বে শনাক্তের দিক থেকে ৩২তম স্থানে আছে বাংলাদেশ, আর মৃতের সংখ্যায় রয়েছে ৩৮তম অবস্থানে।
শনিবারের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় যে ১৩ জন মারা গেছেন, তাদের মধ্যে পুরুষ ৭ জন, নারী ৬ জন।
মৃতদের
মধ্যে ৬ জনের বয়স ৬০ বছরের ঊর্ধ্বে। এছাড়া ৪ জনের বয়স ৫১-৬০ বছরের মধ্যে।
বাকি ২ জনের ১ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ এবং ১ জনের ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্য।
গত
২৪ ঘণ্টায় ঢাকা বিভাগে মারা গেছেন ৭ জন। বাকিদের মধ্যে ২ জন চট্টগ্রাম
বিভাগের, ২ জন রাজশাহী বিভাগের, ১ জন সিলেট বিভাগের এবং ১ জন ময়মনসিংহ
বিভাগের।
এই পর্যন্ত যারা মারা গেছেন, তাদের বয়সভিত্তিক বিশ্লেষণে
জানানো হয়, ষাটোর্ধ্ব রোগীদের মৃত্যুর হার ৫৫ দশমিক ৫২ শতাংশ, ৫১ থেকে ৬০
বয়সী রোগীদের মৃত্যুর হার ২৪ দশমিক ৯১ শতাংশ, ৪১ থেকে ৫০ বছর বয়সী রোগীদের
মৃত্যুর হার ১১ দশমিক ৩৭ শতাংশ, ৩১ থেকে ৪০ বছর বয়সী রোগীদের মৃত্যুর হার ৫
শতাংশ, ২১ থেকে ৩০ বয়সী রোগীদের মৃত্যুর হার ২ দশমিক ০২ শতাংশ, ১১ থেকে ২০
বছর বয়সী বয়সী রোগীদের মৃত্যুর হার শূন্য দশমিক ৭৫ শতাংশ ও শূন্য থেকে ১০
বছর বয়সী রোগীদের মৃত্যুর হার শূন্য দশমিক ৪৪ শতাংশ।
এলাকাভিত্তিক
বিশ্লেষণে মৃতের হার ঢাকা বিভাগে ৫৫ দশমিক ৭৭ শতাংশ, চট্টগ্রাম বিভাগে ১৮
দশমিক ৩৫ শতাংশ, রাজশাহীতে ৫ দশমিক ৭১ শতাংশ, খুলনায় ৬ দশমিক ৭৩ শতাংশ,
বরিশালে ৩ দশমিক ০১ শতাংশ, সিলেটে ৩ দশমিক ৭৪ শতাংশ, রংপুরে ৪ দশমিক ৩৪
শতাংশ ও ময়মনসিংহে ২ দশমিক ৩৫ শতাংশ।
এ পর্যন্ত ঢাকা বিভাগে মারা গেছেন,
৪ হাজার ৬১০ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ১ হাজার ৫১৭ জন, রাজশাহীতে ৪৭২ জন,
খুলনায় ৫৫৬ জন, বরিশাল ২৪৯ জন, সিলেটে ৩০৯ জন, রংপুরে ৩৫৯ জন ও ময়মনসিংহ
বিভাগে ১৯৪ জন।