তুরস্ক জানিয়েছে, নিষিদ্ধ সংগঠন কুর্দিস্তান ওয়ার্কাস পার্টির (পিকেকে) জঙ্গিরা অপহৃত ১৩ তুর্কির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছে।
উত্তর ইরাকের একটি গুহায় তাদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয় বলে রোববার জানিয়েছেন তুরস্কের কর্মকর্তারা।
যাদের দণ্ড কার্যকর করা হয়েছে তাদের মধ্যে সৈন্য ও পুলিশ সদস্যরাও রয়েছেন বলে জানিয়েছেন তারা।
পিকেকের বিরুদ্ধে একটি সামরিক অভিযান চলার মধ্যেই এ ঘটনা ঘটল বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
১০ ফেব্রুয়ারি ইরাকের উত্তরাঞ্চলীয় গারা অঞ্চলে পিকেকের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান শুরু করে তুরস্ক। অঞ্চলটি তুরস্কের সীমান্ত থেকে ৩৫ কিলোমিটার দক্ষিণে।
নিজেদের সীমান্ত সুরক্ষিত রাখতে ও পূর্ববর্তী বিভিন্ন সময়ে অপহৃত নাগরিকদের উদ্ধার করতে অভিযানটি শুরু করা হয়েছে বলে তুরস্কের প্রতিরক্ষামন্ত্রী হুলুসি আকার এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন।
তিনি জানান, সামরিক অভিযান চলাকালে ৪৮ পিকেকে জঙ্গি নিহত হয়, অপরদিকে তুরস্কের তিন সৈন্য নিহত ও তিন জন আহত হয়েছে।
অপহৃত তুর্কিদের মধ্যে ১২ জনকে মাথায় ও অপরজনকে কাঁধে গুলি করা হয় বলেও জানিয়েছেন তিনি।
ইরাক সীমান্তের নিকটবর্তী অভিযান নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রে এক সংবাদ সম্মেলনে আকার বলেন, “জীবিতাবস্থায় ধৃত দুই সন্ত্রাসীর দেওয়া প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, অভিযানের শুরুতেই ওই গুহাটির দায়িত্বে থাকা সন্ত্রাসীরা আমাদের নাগরিকদের শহীদ করে।”
তুরস্কের দক্ষিণপূর্বাঞ্চলীয় মালাটিয়া প্রদেশের গভর্নর জানিয়েছেন, ওই গুহায় নিহতদের মধ্যে ছয় সৈন্য ও দুই পুলিশ কর্মকর্তা রয়েছেন যাদের ২০১৫ ও ২০১৬ সালে দুটি পৃথক ঘটনার সময় অপহরণ করা হয়েছিল।
নিহতদের মধ্যে তিন জনের পরিচয় এখনও শনাক্ত হয়নি। মালাটিয়ায় নিহতদের ময়না তদন্ত করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
নিহতদের মধ্যে তুরস্কের গোয়েন্দা কর্মীরাও রয়েছেন বলে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তারা রয়টার্সকে জানিয়েছেন।
পিকেকের ওয়েবসাইটে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ওই এলাকায় সংঘর্ষ চলাকালে তাদের কাছে থাকা কিছু বন্দি মারা গেছেন যাদের মধ্যে তুরস্কের গোয়েন্দা, পুলিশ ও সামরিক বাহিনীর সদস্যরা রয়েছেন।
তারা কখনো কোনো বন্দিকে আঘাত করেনি বলে দাবি করেছে কুর্দিদের এ গোষ্ঠীটি।
পিকেকে ১৯৮৪ সাল থেকে তুরস্কের কুর্দি অধ্যুষিত দক্ষিণপূর্বাঞ্চলে সশস্ত্র বিদ্রোহ শুরু করে। তারপর থেকে ওই অঞ্চলে তুরস্কের নিরাপত্তা বাহিনী ও বিদ্রোহীদের মধ্যে লড়াইয়ে এ পর্যন্ত ৪০ হাজারেরও বেশি লোক নিহত হয়েছে।
তুরস্ক, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) পিকেকে-কে একটি সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে।