ই-পেপার ভিডিও ছবি বিজ্ঞাপন কুমিল্লার ইতিহাস ও ঐতিহ্য যোগাযোগ কুমিল্লার কাগজ পরিবার
মাদকাসক্ত বন্ধুর সঙ্গে যেতে না দেওয়ায় স্ত্রীকে কুপিয়ে হত্যা
Published : Monday, 15 February, 2021 at 12:00 AM, Update: 15.02.2021 1:17:53 AM
মাদকাসক্ত বন্ধুর সঙ্গে যেতে না দেওয়ায় স্ত্রীকে কুপিয়ে হত্যামো. হাবিবুর রহমান, মুরাদনগর  ।।
মাদকাসক্ত বন্ধুর সাথে যেতে বাধা দেওয়ায় স্ত্রীকে দা-বটি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছে স্বামী। এই নির্মম ঘটনার সাথে জড়িত দুজনকে আটক করেছে পুলিশ। ঘাতক স্বামী পুলিশের কাছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দিয়েছে। গত শনিবার রাতে কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার ধামঘর ইউনিয়নের পরমতলা গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।
মামলা ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, ঘটনার শিকার পরমতলা গ্রামের মৃত মনু মিয়ার মেয়ে আঁখি আক্তারকে (২৮) ১২ বছর আগে বিয়ে করেন পাশের দেবিদ্বার উপজেলার রাজামেহার গ্রামের শহীদ মিয়ার ছেলে সুমন মিয়া (৩০)। বিয়ের পর থেকেই সুমন ঘরজামাই হয়ে শ^শুরবাড়িতে বসবাস করছিল। কিছুদিন পর আঁখি আক্তার টের পান, তার স্বামী মাদকাসক্ত। স্বামীকে মাদক থেকে ফিরিয়ে আনতে স্বজনদের নিয়ে শত চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন আঁখি।
এরই মধ্যে তাদের কোলজুড়ে আসে দুই মেয়ে ও এক ছেলে। কিন্তুু মাদক থেকে ফিরে আসেনি সুমন মিয়া। বরং তার বন্ধু একই গ্রামের আব্দুল মালেকের ছেলে সাদ্দাম হোসেনকে সাথে নিয়ে মাদক সেবনে আরো বেপরোয়া হয়ে ওঠে সে। শনিবার সন্ধ্যায় আঁখি স্বামী সুমন মিয়াকে মাদকাসক্ত বন্ধুর সাথে না গিয়ে তার জন্য ওষুধ আনতে বলায় তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে আঁখির মা নিজেই মেয়ের জন্য ওষুধ আনতে দোকানে চলে যান। ঘর খালি পেয়ে মাদকাসক্ত সুমন ও তার বন্ধু সাদ্দাম হোসেন সবজি কাটার বটি ও দা দিয়ে আঁখি আক্তারের গলা, পেটসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে।
ওদিকে আাঁখির মা হঠাৎ চোর চোর শব্দ শুনে ওষুধ না নিয়েই বাড়ির দিকে রওয়ানা হন। পথিমধ্যে শুনতে পান, জামাই সুমন মিয়া তার মেয়ে আঁখি আক্তারকে দা দিয়ে কুপিয়েছে। বাড়িতে গিয়ে ঘরে ঢুকেই তিনি মেয়ে আঁখিকে রক্তাক্ত অবস্থায় মেঝেতে পড়ে থাকতে দেখেন। প্রতিবেশীদের সহযোগিতায় দ্রুত মেয়েকে দেবিদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। অবস্থার অবনতি হওয়ায় কর্তব্যরত ডাক্তার আঁখিকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। শনিবার রাত দেড়টায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় আঁখি আক্তার মারা যান।
খবর পেয়ে কুমিল্লা কোতয়ালী থানার পুলিশ আঁখির লাশের ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়। অন্যদিকে মুরাদনগর থানার পুলিশ খবর পেয়ে ঘাতক সুমন মিয়াকে দেবিদ্বার ও তার বন্ধু সাদ্দাম হোসেনকে নিজ বাড়ি পরমতলা থেকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে আসে।
এ ঘটনায় দায়ের করা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মুরাদনগর থানার এসআই আবু হেনা মোহাম্মদ মোস্তফা রেজা ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে দৈনিক কুমিল্লার কাগজকে বলেন, বন্ধুর সাথে মাদক সেবনে যেতে না দেওয়ায় সুমন মিয়া তার স্ত্রী আঁখি আক্তারকে বটি-দা দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে। বন্ধু সাদ্দাম হোসেন তাকে সহায়তা করে। এ ঘটনায় নিহতের মা খোরশেদা বেগম (৫৫) বাদী হয়ে রবিবার বিকেলে মুরাদনগর থানায় একটি হত্যা মামলা রুজু করেছেন। আটকদের সোমবার আদালতে সোপর্দ করা হবে।