নিজস্ব
প্রতিবেদক: ভালোবাসা ণিকের নয়, ভালোবাসা চিরন্তন। ভালোবাসা শুধু
প্রেমিক-প্রেমিকা বা শুধু স্বামী-স্ত্রীর মধ্যেই নয়। এ ভালোবাসা বয়সের
ফ্রেমে বাঁধা নয়, এটা প্রসারিত হয় বন্ধু-বান্ধব, পরিচিতজনসহ সবার মাঝেই।
তবে ভালোবাসা দিবসে যুগলদের মনের উচ্ছ্বাসকে বাড়িয়ে দেয় কয়েকগুণ। বাতাসে
গুণগুণ, এসেছে ফাগুন। রঙে রঙিন হয়ে ঋতুরাজ বসন্তকে বরণ করে নেওয়ার দিনে
বাঙালি বিশ্ব ভালোবাসা দিবসও উদযাপন করছে।
ভালোবাসার অনুভূতির কাছে
নিজেকে নিশ্চিন্তে সঁপে দিতে এসেছে ভালোবাসার বিশেষ দিবস বিশ্ব ভালোবাসা
দিবস। বিশ্বে আজকের এ দিনটি সব যুগলের জন্য একটু বেশিই বিশেষ। সেই সঙ্গে
কুমিল্লায় ঋতুরাজ বসন্ত আর ভালোবাসা দিবসে বাঙালি মনের ভালোবাসা আর
উচ্ছ্বাসের কোনো কমতি নেই। ফলে কুমিল্লা জুড়েই তরুণ-তরুণী, যুগলের ঢল
নেমেছে নগরীর ধর্মসাগর পাড়, নগর উদ্যানসহ কুমিল্লার দর্শনীয় স্থানগুলোতে।
সব মিলিয়ে বসন্ত আর ভালোবাসার বহুমাত্রিক রূপ-সৌরভে ভরপুর কুমিল্লার
চারদিক। এ ভালোবাসা যেমন মা-বাবার প্রতি সন্তানের, তেমনি মানুষে-মানুষে
ভালোবাসাবাসির দিনও এটি।
মহামারীর করোনাকালিন সময়ের কারণে গতবছর মার্চের
পর কুমিল্লাসহ সারাবাংলাদেশে কোনো উৎসবই আর সেই উৎসবের আমেজ থাকেনি। গত এক
বছরে করোনাভাইরাস বাংলাদেশে ৮ হাজারের বেশি মানুষের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে।
এবারের ভালোবাসা দিবসে তাই প্রিয়জন হারানোর বেদনাও অনেকের সঙ্গী। বসন্ত
উৎসব আর ভালোবাসা দিবসে সকাল থেকেই অনেকে জড়ো হতে শুরু করে কুমিল্লার
ধর্মসাগর পাড় এবং নগর উদ্যানে।
রবিবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) শুধু ভালোবাসা
দিবসই নয় ঋতুরাজ বসন্তেরও প্রথম দিন। প্রকৃতিতে এখন নতুন উন্মাদনা। এবার
ভালোবাসার হাত ধরেই এসেছে বসন্ত।
এই দুই দিবসকে ঘিরে কুমিল্লা
পার্কগুলো ঘুরে দেখা যায়, মেয়েরা বাসন্তি আর লাল শাড়ি, সেই সঙ্গে লাল গোলাপ
হাতে আর ছেলেরা বাহারি পাঞ্জাবী পরে ভালোবাসার জোয়ারে ভাসছে। সবার হাতেই
আছে বিভিন্ন বাহারি জাতের দৃষ্টিনন্দন ফুল। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের
ক্যাম্পাস, কোটবাড়ি শালবন বিহার, নগীরর প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত ধর্মসাগর পাড়
ও নগর উদ্যানসহ কুমিল্লা সরকারি-বেসরকারিভাবে গড়ে উঠা পার্কগুলোর পুরো
এলাকায় তাদের পদচারণায় মুখরিত।
কুমিল্লার ধর্মসাগর পাড়ে ঘুরতে আসা
ফারজানা প্রীতি বলেন, ভালোবাসা দিবস শুধু প্রেমিক প্রেমিকাদের জন্য নয়।
বন্ধুদের জন্যও তাই তো আমারা সব বন্ধুরা মিলে বেরিয়েছি দিনটা উপভোগ করার
জন্য। বসন্তের সঙ্গে ভালোবাসা দিবস মিলিয়ে একটা আলাদা মাত্রা যোগ হয়েছে।
তাই তো সবাই বাসন্তি রঙের শাড়ি আর বন্ধুরা পাঞ্জাবি পড়ে ঘুরতে বেরিয়েছি
কাজল
নামে এক ব্যক্তি বলেন, প্রেমের জন্য ধরাবাধা কোনো নিয়ম, দিন কি থাকে! তবুও
এ দিনটি বসন্তের প্রথম দিন। মহামারীর একটি বছর ঘরবন্দি জীবনে সব রঙই তো
হারিয়ে গেল জীবন থেকে। কী দুঃসহ দিন গেছে আমাদের। সেই করোনাভাইরাস এখন
অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে। তাই স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে বসন্ত উৎসবে যোগ দিয়েছি।
খোরশেদ
নামে এক ব্যক্তি স্ত্রীকে নিয়ে উদযাপনে যোগ দিতে এসেছিলেন কুমিল্লার নগর
উদ্যানে। তিনি বললেন, প্রতি বছরই বসন্ত উৎসব ও ভ্যালেন্টাইনস ডেতে আমরা
দিনভর ঘুরে বেড়াই। ক্যাম্পাস লাইফের দিনগুলোর কথা মনে করি। আমাদের বিয়েটা
প্রেমের। ১৩ বছর আগের ক্যাম্পাস জীবনের উত্তাল প্রেমের দিনগুলো এখানে এসে
একটু মনে করি। বন্ধুরাও স্ত্রীদের নিয়ে চলে আসে। একটা জম্পেশ আড্ডাও হয়ে
যায়।