নিজেদের মূল ব্যবসা মডেলে বড় ধরনের পরিবর্তন আনার কথা ‘ভাবছে’ গুগল। ব্যবহারকারীর ওয়েব ব্রাউজিং হিস্ট্রির উপর ভিত্তি করে বিজ্ঞাপন বিক্রি বন্ধ করতে চাইছে এই বিজ্ঞাপন জায়ান্ট।
বাড়তি হিসেবে ব্যবহারকারীর ডেটা সুনির্দিষ্টভাবে ট্র্যাক করার লক্ষ্যে কোনো টুল আর নিজেদের সেবার জন্য তৈরিও করবে না প্রতিষ্ঠানটি। সম্প্রতি এ ব্যাপারে আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়েছে তারা। ক্রোমে তৃতীয়-পক্ষীয় কুকি সমর্থন সরিয়ে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পরপরই এ ব্যাপারে জানালো গুগল।
ক্রোমের পদক্ষেপটির ফলে বিজ্ঞাপনদাতা ও ওয়েবসাইটের ডেটা ট্র্যাকিংয়ের মূল উৎস বন্ধ হয়ে যাবে। প্রযুক্তিবিষয়ক ব্লগ এনগ্যাজেট মন্তব্য করেছে, গুগল যা বলছে, তা যদি আসলেও করে, তাহলে গত কয়েক দশক ধরে চলে আসা বিজ্ঞাপন ব্যবসার চিরচেনা রূপ পাল্টে যাবে।
“সংশ্লিষ্ট বিজ্ঞাপনের সুবিধা পেতে মানুষের ওয়েব জুড়ে ট্র্যাক হওয়ার সম্মতি দেওয়াটা অনুচিত। এবং বিজ্ঞাপনদাতাদের ডিজিটাল বিজ্ঞাপনের সুবিধা পেতে একজন ভোক্তাতে ওয়েব জুড়ে ট্র্যাক করার কোনো প্রয়োজন নেই।” – বলেছেন গুগল’স অ্যাডস প্রাইভেসি অ্যান্ড ট্রাস্ট টিমের পণ্য ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডেভিড টেমকিন।
গুগলের কাছ থেকে এরকম বিবৃতি আসার ব্যাপারটি অনেকটাই অকল্পনীয়। প্রতিষ্ঠানটি নিজেদের সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছে ব্যবহারকারীদের ডেটা মনেটাইজ করার মধ্য দিয়ে। টেমকিন জানিয়েছেন, সার্চ জায়ান্ট গোপনতা-সংরক্ষক এপিআই ব্যবহারের পরিকল্পনা করেছে। এরকম এপিআইয়ের মধ্যে রয়েছে ‘ফেডারেটেড লার্নিং অফ কোহর্টস এপিআই’ (এফএলওসি), এর মাধ্যমে সহজেই সংশ্লিষ্ট বিজ্ঞাপন দেখানোর কাজ করা সম্ভব হবে।
পুরো প্রক্রিয়াটি একক ব্যবহারকারীর উপর নির্ভর না করে, এক দল ব্যবহারকারীর একই ধরনের আগ্রহের ভিত্তিতে সম্পন্ন হবে। ফলে সুনির্দিষ্ট ব্যবহারকারীকে আর ট্র্যাক করার প্রয়োজন পড়বে না।
“আমরা মনে করছি না যে এ সমাধানগুলো ব্যবহারকারীর গোপনতা প্রত্যাশা পূরণ করতে পারবে, বা সেগুলো নিয়ন্ত্রক নিষেধাজ্ঞা রাতারাতি তুলে নিতে পারবে, এজন্য এটি দীর্ঘমেয়াদী টেকসই বিনিয়োগ নয়।” – বলেছেন টেমকিন।
এ মাসের শেষ নাগাদ ‘এফএলওসি কোহোর্টস’ ক্রোমে পরীক্ষা করা শুরু করবে গুগল। দ্বিতীয় প্রান্তিকে গুগল অ্যাডসেও বিজ্ঞাপনদাতাদের জন্য কোহোর্টসের পরীক্ষা শুরু করবে তারা।