শান্তিরঞ্জন ভৌমিক ।।
সুলতান
মাহ্মুদ মজুমদারের ‘ফুলের জলসায় নীরব কেন কবি’ মূলত স্মৃতিচারণমূলক বই।
এছাড়া ৮৪-১০৮ পৃষ্ঠা ব্যাপী নজরুল প্রতিভার পরিচয় দেয়া আছে। স্মৃতিচারণ
বলেই ‘কবির সাথে মজুমদার সাহেবও আত্মপ্রকাশ করেছেন।’
বইটির অন্যতম
বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, মজুমদার সাহেব বেশ কিছু বিতর্ক বিষয়কে দৃঢ়তার সাথে
উপেক্ষা করে স্বাধীন অভিমত ব্যক্ত করেছেন। ফলে বিতর্ক নিজস্ব অবস্থানে থেকে
গেছে, তিনি আপন বিশ্বাসে নিজস্ব অবস্থানে প্রত্যয়ী থেকেছেন। যেমন-
১.
‘পিতা তাকে একদিন আদর করে বুঝালেন মুসলমান মাত্রকেই কোরআন শরীফ পাঠ করতে
হয়। বিশেষ করে তাঁরা মহল্লার মোল্লা। লোকের বাড়ী গিয়ে তাঁদের কোরআন পাঠ
করতে হয়, দরকার হয় দোয়া পড়তে। আরবী ভাষা ও কোরআন পাঠ নজরুলকে শিখতেই হবে।
নজরুলের পিতা তাঁকে বলেছেন, তিনি নিজেই তাঁর জন্মমুহূর্তে আজান দিয়েছেন।
(নজরুল সে‘কথা আমাকে বলেছেন।)’
[পৃ:৬]
উল্লেখ্য ১৯০৮ সালে নজরুলের
পিতা ফকির আহমদ মারা যান। তখন নজরুলের বয়স প্রায় ৯ বছর। পিতার অকালমৃত্যুতে
বালক নজরুল কিছুকাল মক্তবের মাস্টারি, মসজিদের ঈমামতি ও ‘মহল্লার
মোল্লাকী’ ও করেছেন। ‘মহল্লার মোল্লাকী’ (পৃ:৭)-এ তথ্যটি নতুন।
২.
‘নববর্ষের সন্ধ্যায় তাঁদের (ইন্দ্রকুমার সেনদের) বাসার নিকটবর্তী উত্তর
দিকে বসন্তবাবুর বৈঠকখানায় (পরে বসন্তস্মৃতি পাঠাগার) গানের মজলিশ হবে ঠিক
হয়। সে গানের বৈঠকে নজরুলের সংগে আমার প্রথম পরিচয়।’
(পৃ: ১৫)
নজরুল
প্রথম আলী আকবর খানের সঙ্গে কোলকাতা থেকে কুমিল্লায় ইন্দ্রকুমার সেনগুপ্তের
বাড়িতে আসেন চৈত্রের এক সকালে। এখানে অনেকেই লিখেছেন- নজরুল চৈত্রের শেষ
এপ্রিলের মাঝামাঝি এসেছিলেন এবং ২/৩ দিন ছিলেন। নববর্ষের দিন কুমিল্লায়
ছিলেন কিনা তা কেউ স্পষ্ট করে বলেননি। মজুমদার সাহেব তাঁর প্রথম পরিচয়ের
সূত্রটি যেভাবে উপস্থাপন করেছেন, তা নির্ভুল ও নতুন তথ্য হিসেবে গ্রহণ করা
যায়।
৩. ‘নজরুলের আগ্রহাতিশর্যে নার্গিস ও নজরুলের বিয়ে সাব্যস্ত হয়।’ (পৃ:১৭)
অনেক
সমালোচক লিখেছেন-আলী আকবর খানের আগ্রহাতিশর্যে নার্গিস ও নজরুলের বিয়ে হয়।
নজরুল একজন যুবক। আবেগ ও আতিশর্য তাঁর চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য। কাজেই নজরুল এ
ব্যবস্থাপনায় কোনো প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেননি। কবি নিজেও বন্ধুকে চিঠি
লিখে জানিয়েছেন- ‘এক অচেনা পল্লী-বালিকার কাছে এত বিব্রত আর অসাবধান হয়ে
পড়েছি, যা কোন নারীর কাছে কখনও হইনি।’
পরবর্তীতে বিয়ের রাতে নজরুল
নার্গিসকে ত্যাগ করে চলে আসায় মজুমদার সাহেবের এ উক্তিটি বিতর্কের সৃষ্টি
করেছে। তবে নজরুলের সম্মতি বা আগ্রহ না থাকলে ‘বিয়ে’ নামক জীবন নাট্যের
এরূপ ঘটনা কীভাবে ঘটে। সুতরাং মজুমদার সাহেবের তথ্যটির গ্রহণযোগ্যতা
বিবেচনা করা যায়।
৪. ‘গৃহের কর্ত্রী নার্গিসের বড় খালার
সন্তুষ্টির জন্যে কথা হলো, তখন শুধু আক্দ হবে, পরে নজরুলের আত্মীয় স্বজন
নিয়ে শ্রাবণ মাসে রুছুমাত হবে।’ (পৃ:১৮)
এবং
‘আক্দই যে মুসলমানদের
বিয়ে এটা হয়তো বিরজাসুন্দরী জানেন না। অবশ্য বাসর যাপন (পড়হংঁসসধঃরড়হ)
বিয়ের পরিসমাপ্তি ঘটে। বাসর যাপন না হলে বিয়ে হলো না একথা বলা চলে না। যদি
বাসর না হয় তাহলে বিয়ে ভঙ্গের বেলায় মোহরানা সম্পর্কে ভিন্নরূপ মীমাংসার
বিধান আছে।’ (পৃ:১৮-১৯)
এতদিন পর্যন্ত একটি
বিতর্ক অমীমাংসিতভাবে আলোচিত হয়ে আসছে যে, নার্গিস বেগমের সাথে নজরুলের
বিয়ে হয়েছিল কি না। এখানে মজুমদার সাহেব মুসলমান বিয়ে সম্পর্কে যে ব্যাখ্যা
দিলেন এবং নার্গিস-নজরুলের আক্দ পর্বটি যে বিয়ে অনুষ্ঠান-তা যদি
বিধানঅনুযায়ী হয়ে থাকে, তবে এখানেই এ বিতর্কটির অবসান হয়ে গেছে।
এক্ষেত্রে মুজফফর আহমদ মুসলিম বিয়ে সম্পর্কে ভিন্নমত পোষণ করেছেন। তিনি ‘নজরুল ইসলাম : স্মৃতিকথা’য় লিখেছেন-
‘প্রথমেই
পরিষ্কার হওয়া দরকার মুসলিম বিবাহ আধ্যাত্মিক বিবাহ নয়, এটা নিতান্তই
নারী-পুরুষের মধ্যে একটা চুক্তি বা কনট্রাক্টের ব্যাপার। ইংরেজীতে যে আমরা
‘সিবিল ম্যারিজ’ বলি এটা ঠিক তাই। কনট্রাক্টকে আরবী ভাষায় ‘আকদ’ বা নিকাহ
বলে। কনট্রাক্টের একটা পরিবর্তন (আরবী কথা ইবজ বা এওজ) থাকা আবশ্যক। এই
পরিবর্তন হচ্ছে নারী-পুরুষের সহবাস, আনন্দ লাভ এবং সন্তানোৎপাদনও। কিন্তু
সন্তান না জন্মালে বিয়ে বাতিল হয়ে যায় না। বিয়ের কনট্রাক্ট একটি মজলিসে বসে
সাক্ষীদের সামনে করতে হয়। মুসলিম বিবাহে একটা ‘মাহর’ বা স্ত্রীধন ধার্য
হওয়া অপরিহার্য। এটি স্বামীর নিকট হতে স্ত্রী পেয়ে থাকেন। এর অর্ধেক
স্ত্রীর পক্ষ হতে দাবী করা মাত্রই দিতে হবে। বাকী অর্ধেক বিবাহ বর্তমান
থাকা অবস্থায় শোধ দিতে হবে। কিন্তু বিবাহের কনট্রাক্ট হওয়ার পরে নারী
পুরুষের সহবাসের ভিতর দিয়ে তার পরিপূর্ণতা লাভ (ঈড়হংঁসসধঃরড়হ) না হলে
স্ত্রীর স্ত্রীধন প্রাপ্য হয় না। বিয়েটা যখন কনট্রাক্টের মারফতে হয় তখন
বিবাহ বিচ্ছেদও আছে। কিন্তু এখানে পুরুষেরাই প্রবল পক্ষ। তারা যখন খুশী
মুখের কথায় বিয়ে বাতিল করে দিতে পারেন। কয়েকটি ব্যাপারে স্ত্রীরা বিয়ে
বাতিল করতে পারলেও তার জন্যে তাঁদের অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়। জবরদস্তীর
(ঈড়বৎপরড়হ) ভিতর দিয়ে, তা সে জবরদস্তী পুরুষ কিংবা নারী যার ওপরই হোক না
কেন, কোনো বিয়ে হলে সেই বিয়ে সঙ্গে সঙ্গেই অসিদ্ধ হয়ে যায়।
৫. ‘কেউ কেউ লিখেছেন, বিয়ের সময় কাবিনের শর্ত নিয়ে তর্ক হয়েছিলো। একথা আদৌ সত্য নয়।’ (পৃ:২০)
এখানে
মজুমদার সাহেবের যুক্তি হলো-নার্গিস-নজরুলের বিয়ে যদিও সামাজিক ও
প্রথাগতভাবে সম্পন্ন হয়েছে এবং মুসলমান বিয়ের বিধানানুযায়ী ‘কাবিননামা’ হতে
হয়, মূলত বিয়েটি ছিল এক নিটুল প্রেমের পরিণতি। সুতরাং কাবিনের শর্ত নিয়ে
তর্ক হওয়ার সুযোগ কোথায়? মজুমদার সাহেবের এ যুক্তিটি মেনে নেয়া যায়।
৬. ‘মহেশ প্রাঙ্গণে লোকমান্য বালগঙ্গাধর তিলকের সম্পর্কে অনুষ্ঠিত এক সভাতেও কবি গান গেয়েছেন।’
(পৃ:২৫)
মজুমদার সাহেবের এ তথ্যটি নতুন। লোকমান্য বালগঙ্গাধর তিলক কুমিল্লায় এসেছিলেন এবং সংবর্ধনা সভায় কবির গান পরিবেশন-এক ঐতিহাসিক ঘটনা।
৭. ‘কবি একদিন মার্চ মাসের প্রথম ভাগে আমার হোস্টেলে এসে একটা কবিতা লিখতে বসেন।... কবিতাটির নাম ‘বিজয়িনী’।...
হে মোর রাণী। তোমার কাছে হার মানি আজ শেষে।
আমার বিজয় কেতন লুটায় তোমার চরণ তলে এসে।
...
(পৃ:২৭)
এখানে
‘বিজয়িনী’ কবিতাটি লেখার ইতিবৃত্ত জানা গেল এবং দুলী তথা প্রমীলার
উদ্দেশ্যে লেখা হয়েছিল এবং ‘কবিতাটি যে কাগজে লিখেছিলেন সে কাগজটা ভাঁজ করে
আমার হাতে দিয়ে বললেন, আমি যেন সেটা তখনই দুলীর হাতে পৌঁছে দিয়ে আসি।’
মজুমদার সাহেব এ দায়িত্বটি সুচারুরূপে পালন করেছিলেন। এটিও একটি নতুন তথ্য।
৮. ‘তিনি তখন আমাকে জিজ্ঞেস করলেন একটা টিপ্রা গান ও সুর জোগাড় করতে পারি কিনা।’
(পৃ:২৯)
আমরা
জানি-নজরুল ইসলাম ছিলেন সুরের রাজা। তিনি তাঁর গানে বহুমাত্রিক সুরের
সমাবেশ ঘটিয়েছেন। কাজেই টিপ্রা গান ও সুরের প্রতি আগ্রহ থকা স্বাভাবিক। এ
তথ্যটি নতুন ও প্রাসঙ্গিক।
৯. নজরুল-প্রমীলার বিয়ে ব্যাপারে
হিন্দু-মুসলমান কেউ বিধি বিধান অনুযায়ী সম্পন্ন হয়েছে বলে মনে করেননি। অথচ
বিপ্লবী উল্লাসকর দত্তের পিতা চট্টগ্রাম কলেজের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ
দ্বিজদাস দত্ত বললেন-
‘যে কোন ধর্মের বিয়ে সম্পর্কে যে সব বিধান আছে তা
অনেকটা মানুষের গড়া। ভগবান বিয়ের যে বিধান দিয়েছেন তার মূলকথা হলো একে
অন্যকে স্বেচ্ছায় ও সানন্দে গ্রহণ করা। --- এরা যখন পরস্পর ভালোবেসেই বিয়ে
করেছে, তখন কোনো বিধান বা আইন যদি তারা না মেনেই থাকে তাতে দোষ কি? এরা
স্বামী স্ত্রীরূপে বসবাস করবার জন্যে একটা লৌকিক আচার তো বেছে নিয়েছে। আমরা
বলি, ‘যদিদং হৃদয়ং তব, তদিদং হৃদয় মম’। বাস্-দুটি আত্মার একাত্মসাধন এই
বাক্যটিই বিয়ের বীজমন্ত্র।’ (পৃ:৪১)
বিংশ শতাব্দীর প্রথম পাদে শিক্ষিত ও
উদারচেতা ব্যক্তিদের ব্যক্তিত্বের পরিচয়ের সাথে বিয়ের ব্যাপারে শাশ্বত
চিন্তাধারার যে পরিচয় ফুটে উঠেছে, তাতে শুধু অসাম্প্রদায়িক চেতনা নয়,
মানুষের মৌলিক মূল্যবোধের দিক নির্দেশনাও বর্তমান। মজুমদার সাহেব এ তথ্যটি
সংযোজন করে আধুনিক সমাজ-ব্যবস্থাপনার একটি সহজ সমাধানের পথ বাতলিয়ে
দিয়েছেন।
১০. ‘নজরুলের যাতায়াতকালীন কুমিল্লা’ অংশটি চমৎকার এবং
সমকালীন কুমিল্লার একটি রেখাচিত্র অংকিত হয়েছে। মজুমদার সাহেব দুটি বাক্য
ব্যবহার করেছেন, তা নি¤œরূপ-
ক. ‘রাজনৈতিক দিক দিয়ে কংগ্রেস পার্টিই ছিলো কুমিল্লার একমাত্র রাজনৈতিক দল।’
(পৃ:৪৯)
খ. ‘খিলাফত আন্দোলন ও অসহযোগ আন্দোলন একটা ঐক্যজোটভাবে কাজ করতে থাকে কুমিল্লাতে।’ (পৃ:৪৯)
কুমিল্লার
সামাজিক আবস্থা সব সময়ই অসাম্প্রদায়িক পরিবেশে পরিবর্ধিত ও লালিত। এই
ধারাবাহিকতা এখনও বর্তমান। মজুমদার সাহেবের লেখায় ঐতিহাসিক সত্যতা মিলে।
১১.
‘ফুলের জলসায় নীরব কেন কবি’ বইটি একটি ঐতিহাসিক দলিল। বিশেষত নজরুলের
জীবনী রচনায় এ বই-এর তথ্য প্রামাণিক দলিল হিসেবে স্বীকৃতিলাভ করবে, করেছে।
মজুমদার সাহেব কাজী নজরুল ইসলামের বন্ধু ছিলেন, তাঁর গুণগ্রাহী ও গুণমুগ্ধ
প্রীতিভাজন ছিলেন, কুমিল্লা ও কোলকাতায় দীর্ঘ সময় একসাথে কাটিয়েছেন- এ
ক্ষেত্রে সুলতান মাহমুদ মজুমদার যেমন গৌরবান্বিত হয়েছেন, কুমিল্লাবাসী
হিসেবে আমরাও ধন্য হয়েছি।
১৯২১ সালের ১৫ এপ্রিল তথা ১লা বৈশাখ ১৩২৮ থেকে
১৯৩০ সালের এপ্রিল মাস পর্যন্ত সুলতান মাহমুদ মজুমদার বহুবার কুমিল্লা ও
কোলকাতায় নজরুল ইসলামের সাথে একত্রে সময় কাটিয়েছেন। তাঁদের এই মেলামেশায়
একদিকে যেমন গড়ে উঠেছিল অনাবিল বন্ধুত্ব, অপরদিকে
সাহিত্য-সঙ্গীত-অভিনয়-আড্ডা থেকে সবকিছুই নান্দনিক হয়ে উঠেছিল। ফলে নজরুলের
অনেক অনাবিষ্কৃত দিক আমাদের জানা হয়ে গেলো। নজরুল-জীবনী রচনায় এ উপাদান
প্রামাণ্য দলিল হিসেবে স্বীকৃতি পেতে পারে। একজন কবিকে, বিশেষত, নজরুলকে,
যিনি কোনো প্রথা মেনে চলতে অভ্যস্ত ছিলেন না, তাঁকে অকৃত্রিমভাবে উন্মোচন
করা সহজসাধ্য বিষয় নয়। মজুমদার সাহেব একাজটি করেছেন দ্বিধাহীনভাবে। এতে
কবি-মানসের স্বরূপটি সহজেই জানা হয়ে যায়। নজরুল-চরিত্রের অস্থিরতাকে
মজুমদার সাহেব গ্রহণ করেছেন স্বাভাবিক ঔদার্যে, ফলে নজরুল-প্রমীলার প্রেমের
সাক্ষী হতে, ছাত্র হয়ে হোস্টেলে গানের আসর বসাতে, কবিকে সান্নিধ্য দিতে
এবং কোলকাতায় বৈরি পরিবেশে মিশতে দ্বিধা করেননি। একজন সম্ভ্রান্ত মুসলিম
পরিবারের সদস্য হয়েও কোলকাতা জীবনে মজুমদার সাহেব নিজের জীবনের পথ
ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে চেয়েছিলেন। যেমন অভিনয় জগতে প্রবেশ করার প্রস্তুতি
নেয়া, সাহিত্যচর্চায় মনোনিবেশ করে কোলকাতায় থেকে যাওয়ার পরিকল্পনা করা এবং
নজরুল-জীবনের সাথে একাত্ম হওয়ার বাসনাও অন্তরে যাপিত আত্মগত মনোনিবেশও
ছিল। ‘কোলকাতার শেষ পর্ব’ অংশে নজরুলের প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে মজুমদার
সাহেব বলেছিলেন-
‘মন দেয়া নেয়া অনেক করেছি,
মরেছি হাজার মরণে,
নূপুরের মতো বেজেছি চরণে চরণে।’
এটি
কেবলমাত্র মজুমদার সাহেবের হাল্কা অনুভবের কথা নয়, তার গভীরে যে রহস্য
রয়েছে, তা আমাদের অজানা। তিনি যখন বলেন, ‘মুখে হাসি ও মনে ব্যথা নিয়ে বিদায়
হলেম।’-‘মনে ব্যথা’র সন্ধান হয়তো পাবো না, তবে নজরুলের জন্য অর্থাৎ
নজরুল-বিরহে যে তিনি ব্যথিত হয়েছেন-তা হলফ করে বলা যায়। নজরুল ও সুলতান
মাহমুদ মজুমদার বন্ধু ও সহযাত্রী ছিলেন, এ পরিচয় শাশ্বত হোক, কুমিল্লাবাসী
তা-ই প্রত্যাশা করে।