তানভীর দিপু:
এত ঘটা করে চারুকলা প্রদর্শনীর আয়োজন এর আগে দেখেনি কুমিল্লাবাসী। কুমিল্লায় জন্মগ্রহণ করেছেন কিন্তু ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে সারাদেশে এমন ৫৪ জন শিল্পীর নিপুণ চিত্রকর্ম নিয়ে কুমিল্লা জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে চলছে চারুকলা প্রদর্শনী-২০২১। করোনাকালীন সময়ে ঘরবন্দী সময়ে প্রদর্শিত চিত্রকলার বেশির ভাগ এঁকেছেন কিংবা তৈরী করেছেন শিল্পীরা। শিল্পকলা একাডেমি ভবনের ভেতরের দেয়াল জুড়ে শোভা পাচ্ছে অন্তত ২০০টি চিত্রকর্ম।
জল রঙ, তেল রঙ, এ্যাক্রেলিক, পেন্সিল স্কেচ, কালার পেন্সিল, মিক্স মিডিয়া, ছাপচিত্র, রিকশা পেইন্টিং, উডকাট, ভাস্কর্য প্রদর্শিত হচ্ছে সেখানে। ৭ দিন ব্যাপি প্রদর্শণী দেখতে প্রতিদিন ভিড় জমাচ্ছেন শত শত মানুষ। বিভিন্ন বয়সী দর্শনার্থীরা ঘুরে ঘুরে দেখছেন অস্থায়ী ভাবে বানানো গ্যালারিটি।
আয়োজকরা জানান, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশত বার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে ৭দিন ব্যাপি চারুকলা প্রদর্শনী আয়োজন করা হয়েছে। ১০ মার্চ পর্যন্ত চলবে এই আয়োজন। জেলা শিল্পকলা একাডেমী ও পথিকৃত কুমিল্লা চারুশিল্পী পরিষদ প্রদর্শনীটি যৌথভাবে আয়োজন করেছে।
প্রদর্শনীর সমন্বয়ক ও জেলা কালচারাল অফিসার আয়াজ মাবুদ জানান, বরেণ্য চারুশিল্পী সমরজিত রায় চৌধুরী, খাঁজা কাইয়ুম, নাজমা আক্তার, উত্তম গুহসহ কুমিল্লার নবীণ প্রবীণ সব শিল্পীরা অংশগ্রহন করছে। চারুশিল্প প্রদর্শনী একটি উৎসবে পরিনত হয়েছে। এখন পর্যন্ত প্রায় ৫ হাজার
দর্শনার্থী ঘুরে দেখে গেছেন এই প্রদর্শণীটি।
প্রদর্শণীতে অংশ নেয়া দেশ বরেণ্য চিত্রশিল্পী ও ভাস্কর উত্তম গুহ জানান, এমন আয়োজন কুমিল্লার নবীণ চিত্র শিল্পীদের আরো উদ্বুদ্ধ করবে। কুমিল্লায় একটি স্থায়ী আর্ট গ্যালারি তৈরী করে ধারাবাহিক ভাবে এ আয়োজন করা উচিত।
স্বামী-সন্তানের সাথে প্রদর্শনীতে এসেছেন শিক্ষিকা কোহিনুর আক্তার জুঁই। প্রতিবেদকের সাথে আলাপকালে তিনি জানান, সুস্থ বিনোদনের মাধ্যম হিসেবে এধরনের আয়োজন সবার কাছেই গ্রহণযোগ্য। নতুন প্রজন্ম শুধু কুমিল্লার সীমানা কিংবা অবকাঠামোগত ঐতিহ্য জানলেই হবে না, কুমিল্লার যে কত গুণী মানুষ আছে তারও স্বাক্ষর রাখে এমন প্রদর্শণী। এসে খুব ভালো লেগেছে।
চারুকলা প্রদর্শণীটিতে শুধু ছবি দেখিয়ে কিংবা আলোচনা-পুরষ্কার বিতরণীর মধ্যেই সীমাবদ্ধ না। আয়োজনের প্রতিদিনই ছিলো চারুকলার নানান কর্মশালা ও প্রতিযোগিতা। এসব ইভেন্টে কুমিল্লার শিশু-কিশোররা অংশগ্রহণ করছে আবারিত ভাবে।