বরগুনা সদর উপজেলার ফুলঝুড়ি ইউনিয়নের ফসলের মাঠে ফেলে রাখা বিদ্যুতের তারে স্পৃষ্ট হয়ে নওশের খন্দকার (৬০) নামের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। একটি বাছুরের প্রাণ বাঁচাতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন তিনি। বুধবার (১০ মার্চ) সকাল সাড়ে ৭টার দিকে ইউনিয়ন পরিষদ কার্যলয়ের বিপরীতে ফসলের মাঠে এ ঘটনা ঘটে। নিহত নওশের ওই এলাকারই বাসিন্দা। এই ঘটনার পর এলাকাবাসী বিদ্যুৎ অফিসের লোকজনকে জিম্মি করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী স্কুলশিক্ষক কামাল হোসেন জানান, ফসলের মাঠের মাটি ঘেঁষে বিদ্যুতের তার টেনে নিয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগ। ফসলের মাঠে একটি বাছুর ঘাস খেতে গিয়ে ফেলে রাখা তারের স্পর্শে বিদ্যুতায়িত হয়। নওশের খন্দকার বাছুরটিকে ছাড়াতে গিয়ে বিদ্যুষ্পৃষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে নিহতের মরদহে উদ্ধার করে।
এ খবর ছড়িয়ে পড়লে লাইনম্যান মো. কবির মিয়াকে আটক করে এলাকবাসী। এছাড়া বরগুনা বিদ্যুৎ বিভাগের প্রকৌশলী মনিরুল ইসলাম ঘটনাস্থলে গেলে এলাকাবাসীর রোষাণলে পড়েন। পরে পুলিশের উপস্থিতিতে তিনি ঘটনার জন্য দুঃখপ্রকাশ কর ক্ষতিপূরণের আশ্বাস দেন। এরপরই তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।
ওই এলাকার ইউপি সদস্য আনিসুর রহমান টুটুল অভিযোগ করে বলেন, বিদ্যুৎ বিভাগ প্রায় এক বছর ধরে গাছের সঙ্গে বেঁধে পাঁচশ ফুট বিদ্যুতের লাইন টানে নিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আমরা একধিকবার বিদ্যুৎ বিভাগের সঙ্গে কথা বলেছি, লিখিত অভিযোগ করেছি। আমাদের অভিযোগ আমলে নেয়নি বিদ্যুৎ বিভাগ। এই মর্মান্তিক মৃত্যুর জন্য বিদ্যুৎ বিভাগ দায়ী। এই মৃত্যুর দায় বিদ্যুৎ বিভাগ এড়াতে পারে না। আমরা এলাকাবাসী ক্ষতিপূরণসহ বিচার দাবি করছি।
এবিষয়ে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড বরগুনা উপমহাব্যবস্থপক সাইদুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার ব্যবহৃত মুঠোফোন নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।
ওই এলাকার লাইন সংস্কারের কাজ করছেন ঠিকাদার কবির হোসেন। তিনি জানান, লাইনম্যানের ভুলের কারণে লাইনটি বিদ্যুতায়িত ছিল। যে কারণে দুর্ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে কবির হোসেন বলেন, নিহতের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।
বরগুনা সদর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কেএম তারিকুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে এসেছে। নিহতের পরিবার অভিযোগ করলে পুলিশ আইনগত ব্যবস্থা নেবে।