‘কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকায়’ চাঁদপুরের হাইমচর উপজেলা ভেটেরিনারি সার্জন ও ভারপ্রাপ্ত প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আবু হাসান লাভলুকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে।
গত মঙ্গলবার মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব রওনক মাহমুদ স্বাক্ষতির এক প্রজ্ঞাপনে একথা জানানো হয়েছে।
গত ২৩ ফেব্রুয়ারি হাইমচর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো. বখতিয়ার জেলা প্রশাসক বরাবর নিকট অভিযোগ দেন। এরপর এই বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে অভিযোগটি মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর পাঠান জেলা প্রশাসক।
অভিযোগে বলা হয়, আবু হাসান লাভলু গত ১৩ এপ্রিল ২০১৬ সালে হাইমচর উপজেলা ভেটেরিনারি সার্জন ও ভারপ্রাপ্ত প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করেন। যোগদানের পর থেকে তিনি কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকছেন। এতে বিভাগীয় কার্যক্রম, মাসিক রিপোর্টসহ অন্যান্য সকল বিভাগীয় কাজের বিঘ্ন ঘটে। এই ব্যাপারে ভেটেরিনারী সার্জন মো. আবু হাসান লাভলুকে বার বার সতর্ক করাসহ বেতন ভাতা বন্ধ করা সত্বেও তিনি সংশোধন হন নাই। উপরন্ত তার অনুপস্থিতির কারণে হাইমচর উপজেলায় কর্মরত কর্মচারীদের বেতন ভাতা বন্ধ হয়ে যায়।
অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে মন্ত্রণালয় এক প্রজ্ঞাপনে আবু হাসান লাভলুকে সাময়িক বরখাস্ত করে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, মো. আবু হাসান লাভলুর বিরুদ্ধে পাওয়া অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সরকারি কর্মচারী বিধি অনুযায়ী বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধন্ত গৃহীত হয়েছে।
“এই বিধি মোতাবেক কর্তৃপক্ষ তাকে চাকরি হতে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা প্রযোজন ও সমীচীন মনে করে।”
সেহেতু, মো. আবু হাসান লাভলুকে ৯ মার্চ থেকে সরকারি চাকরি থেকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হলো বলে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়।
সাময়িক বরখাস্তকালীন তাকে ঢাকায় প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরে ন্যস্ত করা হয়েছে এবং এ সময় তিনি বিধি অনুযায়ী খোরপোষ ভাতা প্রাপ্য হবেন বলেও বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়।
এই ব্যাপারে জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা বখতিয়ার বলেন, “ওই উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা যোগদানের পর থেকেই নিয়মিত অফিস করতেন না। তার জন্য হাইমচর উপজেলায় আমাদের বিভাগীয় কার্যক্রম অনেকটা অচল হয়ে পড়ে। এই বিষয়টি হাইমর উপজেলা চেয়ারম্যানসহ প্রশাসনের কর্মকর্তাবৃন্দও অবগত হয়। পরবর্তীতে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রশাসক বরাবর অভিযোগ পাঠানো হয়।”
জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ বলেন, “অভিযোগ পেয়ে আমরা তদন্ত করলে তার সত্যতা পাওয়া যায়। ওই প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা কর্মস্থলে আসতেন না। তাই তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে অভিযোগ পাঠানো হয়। পরে সেই অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।”
এই ব্যাপারে আবু হাসান লাভলু বলেন, “আমি বর্তমানে জামালপুরে আমার নিজ বাড়িতে আছি। তবে আগে পরে কোনো শোকজ লেটার পাইনি আমি। আমার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ থাকলে শোকজ আশা করেছিলাম। আমাকে বরখাস্ত করা হয়েছে তা ওয়েবসাইটে দেখেছি।”
এখনো অফিসিয়ালি কোনো চিঠি পাননি বলে জানান তিনি।