দেশে
করোনা রোগী শনাক্তের হার আবারও বাড়ছে। সপ্তাহখানেক আগে পরীা বিবেচনায়
শনাক্তের হার ছিল ২ শতাংশের কাছাকাছি। বুধবার এই হার আবার ৬ শতাংশ হয়েছে।
বাড়ছে মৃত্যুর হারও। মানুষ যেভাবে স্বাস্থ্যবিধি উপো করছে তাতে চিকিৎসা
বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, এই হার দ্রুত বাড়তে পারে। এর মধ্যে যুক্তরাজ্য ও
দণি আফ্রিকায় ছড়ানো অধিক সংক্রমণম ধরন বাংলাদেশেও পাওয়া গেছে। ফলে
পরিস্থিতি খুবই নাজুক হয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও
একই আশঙ্কা ব্যক্ত করে সবাইকে সতর্ক থাকার এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার
আহ্বান জানিয়েছেন। এদিকে সংক্রমণ বাড়ার প্রভাব পড়তে শুরু করেছে সরকারি
হাসপাতালগুলোতেও। হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ) রোগীতে ভরে
আছে। ফলে অতি জরুরি হলেও আইসিইউতে রোগী স্থানান্তর করা যাচ্ছে না। রোগীর
স্বজনরা হাসপাতাল থেকে হাসপাতালে ছুটে বেড়াচ্ছেন, কিন্তু কোনো লাভ হচ্ছে
না। আইসিইউ শয্যার জন্য অপোয় থাকতে থাকতেই মৃত্যু হচ্ছে অনেক রোগীর। আর এই
সুযোগে বেসরকারি হাসপাতালগুলো চুটিয়ে ব্যবসা করছে। আইসিইউ সেবার নামে কয়েক
গুণ অর্থ আদায় করছে।
করোনা মহামারি সারা পৃথিবীতে এখনো এক আতঙ্কের নাম।
কত দিনে, কিভাবে ও কী পরিমাণে এটিকে নিয়ন্ত্রণে আনা যাবে, তা-ও বলতে পারছেন
না বিজ্ঞানীরা। তাঁরা দ্রুততম সময়ে সমগ্র জনগোষ্ঠীকে টিকার আওতায় আনার
আহ্বান জানিয়েছেন। তাঁদের মতে, কিছু মানুষকে টিকার বাইরে রেখে এই ভাইরাসের
কার্যকর নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়। বাংলাদেশে ১৮ বছরের কম বয়সী ও গর্ভবতীদের বাদ
দিলে প্রায় ১০ কোটি মানুষকে ২০ কোটি ডোজ টিকা দিতে হবে; কিন্তু এখন পর্যন্ত
অর্ধকোটি মানুষকে টিকার আওতায় আনা যায়নি। দৈনিক টিকা প্রদানের সংখ্যা
ক্রমেই কমছে। টিকা সম্পর্কে এখনো মানুষের মধ্যে ব্যাপক ভুল ধারণা রয়েছে।
অনেকে নিবন্ধন করেও টিকা নিতে আসছে না। নি¤œ আয়ের মানুষের মধ্যে টিকা
নেওয়ার আগ্রহ খুবই কম। আবার প্রয়োজনীয় টিকা পাওয়া নিয়েই সংশয় আছে। মার্চে
সংক্রমণ আবার বাড়তে পারে এমন আশঙ্কা আগেই করা হয়েছিল। কিন্তু হাসপাতালগুলোর
ধারণমতা কিংবা আইসিইউ শয্যার সংখ্যা বাড়ানোয় েেত্রবিশেষ কোনো উন্নতি হয়েছে
বলে মনে হয় না।
অনেক দেশের তুলনায় বাংলাদেশের করোনা পরিস্থিতি এখনো
অনেক ভালো। এটি যেন নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে না যায়, সে ব্যাপারে এখন থেকেই
সচেষ্ট হতে হবে। মাস্ক পরা, সামাজিক দূরত্ব মেনে চলা, বারবার হাত ধোয়াসহ
জরুরি স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য মানুষকে সচেতন করতে হবে। প্রয়োজনে কঠোর
হতে হবে। টিকা প্রদানের গতি বাড়াতে হবে। হাসপাতালগুলোতে করোনায় নিবেদিত
ওয়ার্ড ও শয্যা সংখ্যা বাড়াতে হবে। বাড়াতে হবে আইসিইউ সেবার সুযোগ।
বেসরকারি হাসপাতালে আইসিইউসহ চিকিৎসাসেবার মূল্য নির্ধারণ করে দিতে হবে।