Published : Monday, 15 March, 2021 at 12:00 AM, Update: 15.03.2021 12:59:16 AM
রণবীর
ঘোষ কিংকর: কুমিল্লার দেবীদ্বার উপজেলার নবীয়াবাদে সরকারি খালে বাঁধ দিয়ে
নিজের ব্যক্তিগত হাঁসের খামার নির্মাণ করেছেন স্থানীয় এক প্রভাবশালী
ব্যক্তি।
চান্দিনা-দেবীদ্বার সড়কের পাশে নবীয়াবাদ ঈদগাহ সংলগ্ন এলাকায়
‘ভূইয়া’স এগ্রো ফার্ম এন্ড ফিসারিজ’ নামে ওই প্রতিষ্ঠানটি গড়ে তুলেছেন একই
এলাকার আবুল কালাম আজাদ ভূইয়া নামের এক ব্যক্তি। খালের উপরে স্টিলের ব্রীজ
ঘেঁষে টিনসেড সীমানা প্রচীর করে গড়ে তুলেছেন বহুতল ভবন। সামনে সাঁটিয়েছেন
বিশাল সাইনবোর্ড। ওই সাইনবোর্ডে কৃষি খামার ও ফিসারিজ লিখা থাকলেও প্রকৃত
পক্ষে গড়েছেন হাঁসের খামার।
সড়ক ঘেঁসে ব্রীজ পর্যন্ত টিনের সীমান
প্রচীর থাকার ফলে পরখ করে না দেখলে বুঝার উপায় নেই যে, সরকারি বিশাল খালটির
দুই পাশে বাঁধ দিয়ে গড়ে তুলেছেন ব্যক্তিগত খামার। তবে স্থানীয় বাসিন্দাদের
রয়েছে একাধিক অভিযোগ। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগও
করেছেন স্থানীয়রা। বিষয়টি তদন্ত শেষে ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় ১৫ দিনের মধ্যে
খামারটি সরিয়ে নিতে নির্দেশ প্রদান করার ৪ মাস অতিবাহিত হওয়ার পরও তোয়াক্কা
নেই খামার মালিকের।
খামারটির পাশের বাড়ির বাসিন্দা ফজলে রাব্বী খান
সজিব জানান- প্রায় ৬ মাস হলো সরকারি খালে বাঁধ দিয়ে হাঁসের খামার করেন আজাদ
ভূইয়া। এ বিষয়ে আমার পিতা বাংলাদেশ ভলিবল ফেডারেশনের সাবেক কোচ গোলাম রসুল
খান মেহেদী দেবীদ্বার উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট একটি লিখিত অভিযোগ
করেছিলেন। জনবসতি পূর্ণ এলাকায় এবং গ্রামের প্রধান ঈদগাহের সামনে হংস
খামারে একদিকে পরিবেশ দূষণ করছে, অপরদিকে সরকারি খালে বাঁধ দিয়ে পানি চলাচল
ব্যহত করেছে। এতে কৃষকরাও মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়েছে।
তিনি ক্ষোভ
প্রকাশ করে আরও বলেন- নির্মাণকালে আমার পিতা এলাকার মানুষের গণস্বাক্ষর
নেওয়ার সময় হঠাৎ বৃষ্টিতে ভিজে জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু বরণ করেন। উপজেলা
নির্বাহী অফিসার খামারটি সরিয়ে নিতে এবং খালের বাঁধ উঠিয়ে নিতে ১৫ দিনের
সময় বেঁধে দেন কিন্তু তাতে কোন তোয়াক্কা নেই খামার মালিক পক্ষের।
এলাকার
গণ্যমান্য ব্যক্তি এবং সর্বজন শ্রদ্ধেয় মুজিবুর রহমান বিএসসি জানান-
এলাকার প্রধান ঈদগাহের ১০ ফুট দূরত্বের মধ্যে পরিবেশ দূষণকারী হংস খামার
করায় এলাকার মুসল্লিদের মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। এছাড়া সরকারি খালের
দুই পাশে বাঁধ দেওয়ায় এলাকার কৃষকরা খড়া মৌসুমে জমিতে পানি সেচ করতে পারছে
না। উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নির্দেশ মোতাবেক ৫ নভেম্বরের মধ্যে খামারটি
সরিয়ে নেওয়ার কথা থাকলেও ৪ মাস অতিবাহিত হয়েছে।
বিষয়টি জানতে খামার মালিক আবুল কালাম আজাদ এর মোবাইল নম্বরে একাধিকবার চেষ্টা করলেও তার ফোনে সংযোগ পাওয়া সম্ভব হয়নি।
এ
ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) রাকিব হাসান জানান- এ সংক্রান্তে
নবীয়াবাদ গ্রামের বাসিন্দা গোলাম রসুল মেহেদী নামের এক ব্যক্তি গত বছরের
২৩ সেপ্টেম্বর একটি লিখিত অভিযোগ করেন। ওই অভিযোগের প্রেক্ষিতে আমি উপজেলা
প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তাকে বিষয়টি তদন্ত করার নির্দেশ দেই। উপজেলা প্রাণী
সম্পদ কর্মকর্তা তার তদন্ত প্রতিবেদনে ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় খামারটি সরিয়ে
নিতে গত ২০ অক্টোবর খামার মালিককে চিঠি দেই। এখনও খামারটি সরিয়ে না নেওয়ার
বিষয়টি আমার জানা নেই। শীঘ্রই ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।