তানভীর
দিপু: বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন- শিশুর হৃদয় হোক রঙিন- এই শ্লোগানকে সামনে রেখে
কুমিল্লায় যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হলো হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির
জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিুবুর রহমানের ১০১ তম জন্মদিন এবং জাতীয় শিশু দিবস।
দিবসটি উপলক্ষে গতকাল কুমিল্লা জেলায় প্রশাসনিক এবং রাজনৈতিক উদ্যোগে পালন
করা হয় নানান কর্মসূচী। বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন, প্রার্থনা,
আলোচনাসভা এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে পালন করা হয় দিনটিকে।
দিবসটি
উপলক্ষ্যে কুমিল্লায় আয়োজিত বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেছেন, বঙ্গবন্ধু
তাঁর জীবনের প্রতিটি ণ ব্যয় করেছেন বাঙালির মুক্তিসংগ্রামে। জীবনের প্রতিটি
ছত্রে ছিলেন শঙ্কাহীন, সাহসী ও আপসহীন। এক কথায় বলা চলে ‘বঙ্গবন্ধুই
বাংলাদেশ’। কারণ একজন মানুষ তাঁর পুরো জীবন, পারিবারিক সময়, আরাম-আয়েশ সব
তালাবন্দি রেখেছিলেন শুধু একটি দেশকে বাঁচাবেন বলে। দেশকে এনে দিয়েছিলেন
মুক্তির সনদ।
বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন উপলক্ষে গতকাল ১৭ মার্চ প্রত্যুষে
৩১বার তোপধ্বণির মধ্যদিয়ে দিবসটি শুরু হয়। ভোরে নগর উদ্যানে বঙ্গবন্ধুর
ম্যুরালে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন কুমিল্লা সদর আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব আ ক ম
বাহাউদ্দিন বাহার, সংরক্ষিত সংসদ সদস্য আঞ্জুম সুলতানা সীমা, জেলা পরিষদের
প্রশাসক রিয়ার এডমিরাল(অব) আবু তাহের, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল
হাসান, পুলিশ সুপার মোঃ ফারুক আহমেদ, উপজেলা চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম
টুটুল, সিভিল সার্জন মীর মোবারক হোসাইনসহ প্রশাসনের উর্দ্ধতন ব্যক্তিবর্গ।
এছাড়া বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও সরকারি দপ্তরের পক্ষে ফুলেল
শ্রদ্ধাঞ্জলি জ্ঞাপন করেন কার্যালয়ের প্রধানরা।
পরে শতকণ্ঠে জাতীয়
সংগীতের মধ্যদিয়ে দিবসটি উপলক্ষে কুমিল্লা জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে
অনুষ্ঠানমালা পরিবেশিত হয়। জেলাপ্রশাসনের আয়োজনে কুমিল্লা জেলা প্রশাসক
মোহাম্মদ কামরুল হোসাইনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে
উপস্থিত ছিলেন কুমিল্লা সদর আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব আ ক ম বাহাউদ্দিন
বাহার। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পুলিশ সুপার মোঃ ফারুক আহমেদ,
জেলা পরিষদের সাবেক প্রশাসক আলহাজ্ব ওমর ফারুক, কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের
সাবেক অধ্যক্ষ প্রফেসর আমির আলী চৌধুরী, জেলা পিপি জহিরুল হক সেলিম, বেগম
রোকেয়া পদকপ্রাপ্ত নারী নেত্রী পাঁপড়ি বোস, প্রবীণ সাংবাদিক আবুল হাসনাত
বাবুল, সিভিল সার্জন মীর মোবারক হোসাইনসহ অন্যান্যরা। আলোচনা সভায় বক্তারা
বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতা এনে
দিয়েছেন। তাঁর ডাকে সাড়া দিয়েই মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন লাখো বাঙালি।
অকুতোভয় বীরমুক্তিযোদ্ধা ও বীরঙ্গণাদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে এই দেশ। নতুন
প্রজন্মকে বঙ্গবন্ধু এবং বাংলাদেশে সঠিক ইতিহাস জানতে হবে এবং জানাতে হবে।
অনুষ্ঠানে
মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করে শিশু কিশোর শিল্পীরা। পরে
বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন উপলক্ষ্যে আয়োজিত বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক আয়োজনের
পুরষ্কার বিতরণ করেন অতিথিরা।
এছাড়া দিবসটি উপলক্ষে কুমিল্লায় বিভিন্ন
রাজনৈতিক দল তাদের দলীয় কার্যালয়ে নানান অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। বিভিন্ন
প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করা
হয়।
বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন উপলক্ষে কুমিল্লা সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান
গুলোতে আলোকসজ্জা করা হয়েছে। নগরীর মোড়ে মোড়ে লাগানো হয়েছে শুধুমাত্র
বঙ্গবন্ধুর ছবি সম্বলিত ফেষ্টুন। এছাড়া মসজিদ, মন্দির, গীর্জা, প্যাগোডায়
অনুষ্ঠিত হয়েছে বিশেষ প্রার্থনা। শিশু পরিবার, এতিখানা ও কারাগারে উন্নত
খাবার পরিবেশন করা হয়েছে।
আজ ১৮ মার্চ বুধবারও কুমিল্লায় রয়েছে নানান
জাঁকজমক আয়োজন। কুমিল্লা স্টেডিয়ামে মহানগর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে বিশেষ
আলোচনা সভা ও মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।