ই-পেপার ভিডিও ছবি বিজ্ঞাপন কুমিল্লার ইতিহাস ও ঐতিহ্য যোগাযোগ কুমিল্লার কাগজ পরিবার
মহামারীকালের বইমেলা শুরু
Published : Friday, 19 March, 2021 at 12:00 AM
নিজস্ব প্রতিবেদক: করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে পিছিয়ে যাওয়া অমর একুশে বইমেলার দুয়ার খুললো। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৃহস্পতিবার বিকালে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ‘অমর একুশে গ্রন্থমেলার’ উদ্বোধন ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, “আসুন সবাই মিলে আমরা বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলি। আমাদের আগামী প্রজন্মকেও যেন উৎসাহিত করি ।”
তবে মহামারীর মধ্যে এই মেলায় সবাই যেন স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলেন, সেই অনুরোধও করেন সরকারপ্রধান।
বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন একাডেমির সভাপতি অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান। সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ, সংস্কৃতি সচিব মো. বদরুল আরেফীন এবং বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক হাবীবুল্লাহ সিরাজীও উপস্থিত ছিলেন অনুষ্ঠানে।
স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর বছরের এই বইমেলা উৎসর্গ করা হয়েছে মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের স্মৃতির উদ্দেশ্যে।
এ অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু রচিত ও বাংলা একাডেমি প্রকাশিত ‘আমার দেখা নয়াচীনের’ ইংরেজি অনুবাদের মোড়ক উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এছাড়া ২০২০ সালের বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কারও দেওয়া হয়।
এ বছর আত্মজীবনী-স্মৃতিকথা-ভ্রমণকাহিনি শাখায় অভিনেত্রী ফেরদৌসী মজুমদার; কবিতায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য মুহাম্মদ সামাদ; কথাসাহিত্যে ঔপন্যাসিক, প্রাবন্ধিক ইমতিয়ার শামীম; প্রবন্ধ/গবেষণায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক বেগম আকতার কামাল; অনুবাদে অধ্যাপক ও অনুবাদক সুরেশরঞ্জন বসাক; নাটকে চট্টগ্রামের নাটকের দল তির্যক নাট্যদলের প্রতিষ্ঠাতা রবিউল আলম পুরস্কার পেয়েছেন।
এছাড়া শিশুসাহিত্যে ছড়াকার ও শিশু একাডেমির পরিচালক আনজীর লিটন, মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক গবেষণায় মুক্তিযুদ্ধ গবেষক সাহিদা বেগম, বিজ্ঞান/কল্পবিজ্ঞানে বাংলা একাডেমির জনসংযোগ বিভাগের প্রধান অপরেশ বন্দ্যোপাধ্যায়, ফোকলোরে- প্রতœতাত্ত্বিক গবেষক মুহাম্মদ হাবিবুল্লা পাঠান পেয়েছেন বাংলা একাডেমি পুরস্কার।
উদ্বোধন অনুষ্ঠান শেষে অতিথিরা বাইমেলা ঘুরে দেখার পর সাধারণ দর্শনার্থীদের জন্য বইমেলার দ্বার উন্মুক্ত করা হয়।
মহামারীর মধ্যে এবারের বইমেলায় নিরাপত্তার নজরদারির সঙ্গে স্বাস্থ্যবিধির কড়াকড়িও থাকবে। তাছাড়া মেলার সময় পিছিয়ে চৈত্রে আসায় থাকবে ঝড়বৃষ্টির ঝুঁকি।
প্রবেশপথে হাত ধোয়া ও হ্যান্ড স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। মাস্ক ছাড়া কাউকে মেলায় ঢুকতে দেওয়া হবে না বলেও সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে।
ভিড় এড়াতে এবার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের পূর্ব প্রান্তে নতুন প্রবেশ পথ করা হয়েছে। সব মিলে তিনটি প্রবেশ পথ ও তিনটি বের হওয়ার পথ থাকছে।
প্রত্যেক প্রবেশ পথে সুরতি ছাউনি থাকবে, যাতে বৃষ্টি ও ঝড়ের মধ্যে মানুষ আশ্রয় নিতে পারেন। বিশেষ দিনগুলোতে লেখক, সাংবাদিক, প্রকাশক, বাংলা একাডেমির ফেলো এবং রাষ্ট্রীয় সম্মাননাপ্রাপ্ত নাগরিকদের জন্য প্রবেশের বিশেষ ব্যবস্থা করা হবে।
এবারও শিশুচত্বর মেলার সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে থাকবে। তবে মহামারীর কারণে এবার প্রথম দিকে 'শিশুপ্রহর’ থাকছে না।
বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ ও ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের প্রায় ১৫ লাখ বর্গফুট জায়গায় এবারের বইমেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। একাডেমি প্রাঙ্গণে ১০৭টি প্রতিষ্ঠানকে ১৫৪টি এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে ৪৩৩টি প্রতিষ্ঠানকে ৬৮০টি ইউনিট; মোট ৫৪০টি প্রতিষ্ঠানকে ৮৩৪টি ইউনিট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। মেলায় থাকছে ৩৩টি প্যাভিলিয়ন।
এবার লিটল ম্যাগাজিন চত্বর স্থানান্তরিত হয়েছে সোহরাওয়্দাী উদ্যানের মূল মেলা প্রাঙ্গণে। সেখানে ১৩৫টি লিটলম্যাগকে স্টল বরাদ্দের পাশাপাশি ৫টি উন্মুক্ত স্টলসহ ১৪০টি স্টল দেওয়া হয়েছে।
একক ুদ্র প্রকাশনা সংস্থা এবং ব্যক্তি উদ্যোগে যারা বই প্রকাশ করেছেন তাদের বই ও বিক্রি বা প্রদর্শনের ব্যবস্থা থাকবে জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের স্টলে। বইমেলায় বাংলা একাডেমি এবং মেলায় অংশগ্রহণকারী অন্যান্য প্রতিষ্ঠান ২৫ শতাংশ কমিশনে বই বিক্রি করবে।
বইমেলা প্রতিদিন বিকেল ৩টায় শুরু হয়ে রাত ৯টা পর্যন্ত তা চলবে। ছুটির দিন বেলা ১১টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত মেলা খোলা থাকবে। তবে শুক্রবার বেলা ১টা থেকে বেলা ৩টা এবং শনিবার বেলা ১টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত বিরতি থাকবে। বইমেলা চলবে আগামী ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত।