এসিডে ঝলসে দেওয়া হলো মা-মেয়েকে
Published : Saturday, 20 March, 2021 at 12:00 AM
ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি ।।
আখাউড়ায়
পারিবারিক কলহের জের ধরে স্ত্রী-শাশুড়িকে এসিডে ঝলসে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে
মেয়ে জামাইয়ের বিরুদ্ধে। শুক্রবার (১৯ মার্চ) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে
উপজেলার ধরখার ইউনিয়নের ভাটামাথা গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। আহত মা ও মেয়েকে
উদ্ধার করে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসার
জন্য ভর্তি করা হয়েছে।
আহতরা হলেন, আখাউড়া উপজেলার ধরখার ইউনিয়নের ভাটামাথা গ্রামের কালিপদ পালের স্ত্রী পুতুল রাণী পাল (৫০) ও তার মেয়ে চন্দনা পাল (৩০)।
হাসপাতালে
নিয়ে আসা আহত পুতুল রানী পালের বড়মেয়ের স্বামী অজিত পাল জানান, পুতুল পাল
আমার শাশুড়ি ও চন্দনা পাল আমার শ্যালিকা হন। গত প্রায় ১০ বছর আগে আমার
শ্যালিকা চন্দনা পালকে ঢাকার তাঁতী বাজারের সোনা ব্যবসায়ী নিতাই পালের ছেলে
আনন্দ পালের কাছে বিয়ে দেওয়া হয়। তাদের পরিবারে ৯ বছরের একটি ছেলে সন্তান
রয়েছে। আনন্দ পাল জুয়াড়ি প্রকৃতির লোক ছিল। এ নিয়ে তাদের মধ্যে পারিবারিক
কলহ চলে আসছিল।
তিনি আরও বলেন, করোনার লকডাউনের মধ্যে আনন্দ পাল জুয়া
খেলে অনেক টাকা ঋণগ্রস্ত হয়ে যান। এ নিয়ে চন্দনা পাল ও আনন্দ পালের মধ্যে
কলহ চরম আকার ধারণ করে। পরে চন্দনাকে আমরা ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নিয়ে আসি। প্রায়
এক বছর ধরে আমার শ্যালিকা চন্দনা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ার ভাটামাথা গ্রামে
বাবার বাড়িতে বসবাস করছে। ইদানিং স্বামী আনন্দ পাল ফোনে ঢাকায় চলে যাওয়ার
জন্য চন্দনাকে চাপ দিতে থাকে। শুক্রবার সকালে আনন্দ পাল ভাটামাথা গ্রামে
চন্দনাদের বাড়িতে ব্যাগে কাপড় নিয়ে বেড়াতে আসেন। আসার পর চন্দনাকে ঢাকায়
ফিরে যেতে চাপ দেয় সে। তখন চন্দনা জানায়, আনন্দ পাল ঋণ শেষ করার পর সে
শ্বশুর বাড়ি ফিরে যাবে। এ নিয়ে উত্তেজনার এক পর্যায়ে আনন্দ চন্দনাকে মারধর
করে, পরে তার কাপড়ের ব্যাগ থেকে বোতল দিয়ে আনা এসিড চন্দনার ওপর নিপে করে।
এসময় চন্দনা চিৎকার করে দৌড়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় তার মা পুতুল পাল আসলে, তার
ওপরও আনন্দ পাল এসিড নিপে করে পালিয়ে যায়। পরে তাদের দুই জনকে উদ্ধার করে
এনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
আহত পুতুল রানীর
বড় মেয়ে তাপসি পাল বলেন, আমার মা এবং ছোট বোনের ওপর এসিড নিপে করা হয়েছে।
আমি এসিড নিপেকারীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর
হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. নাজমুল হক বলেন, আমরা মা-মেয়েকে এসিড দগ্ধ অবস্থায়
হাসপাতালে পেয়েছি। তাদের শরীরের বিভিন্ন অংশে এসিডে দগ্ধ হয়েছে। তবে তারা
আশঙ্কামুক্ত। ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা চলবে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আনিসুর রহমান জানান, এসিড নিেেপর খবর পেয়ে হাসপাতাল
এবং ঘটনাস্থলে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের পাঠানো হয়েছে। তদন্ত করে এ
বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।