তানভীর দিপু:
কুমিল্লায়
করোনার নমুনা পরীক্ষার শতকরা ১০ শতাংশ হারে পজেটিভ শনাক্ত হচ্ছে। কুমিল্লা
সিভল সার্জন কার্যালয় সূত্রে, ৭ দিনের টানা পরীক্ষার ফলাফল পর্যালোচনা করে
এই তথ্য পাওয়া গেছে। গত ১৩ মার্চ থেকে ১৯ মার্চ পর্যন্ত ৭দিনে কুমিল্লায়
পাওয়া ৫১০ টি রিপোর্টে পজেটিভ শনাক্ত হয়েছে ৫১ জন। এরমধ্যে ৩১ জনই কুমিল্লা
সিটি এলাকার।
এরই মধ্যে সারা দেশে করোনা শনাক্তের হারও ১০ শতাংশ বলে
জানিয়েছে অনেক জাতীয় সংবাদ মাধ্যম। ইতিমধ্যে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ
হাসপাতালের করোনা ইউনিটেও রোগীর চাপ কিছুটা বাড়ছে বলে জানিয়েছেন মেডিকেল
কলেজের পরিচালক ডা. মোঃ মহিউদ্দিন।
কুমিল্লা স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য
অনুসারে, সাম্প্রতিক সময়ে করোনা শনাক্তের বেশির ভাগই সিটি কর্পোরেশন
এলাকার। তবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সিটি এলাকায় পরীক্ষার হার বেশি বলেই
শনাক্তও বেশি বলে মনে হচ্ছে।
করোনা সংক্রমন ঠেকাতে ইতিমধ্যে মাস্ক
ব্যবহার নিয়ে মোবাইল কোর্ট পরিচালনারও নির্দেশনা দেন জেলা আইন শৃঙ্খলা
কমিটির সভাপতি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান। সে প্রেক্ষিতে কুমিল্লা
নগরীতে মোবাইল কোর্ট কার্যক্রম শুরু হয়েছে বলেও জানান তিনি। কুমিল্লা জেলা
করোনা প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান
কুমিল্লার কাগজকে জানান, প্রতিটি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তদের নির্দেশনা
দেয়া হয়েছে- করোনা প্রতিরোধ কমিটি গুলোকে উজ্জীবিত করা হচ্ছে। দ্রুতই জেলা
করোনা প্রতিরোধ কমিটি সভা অনুষ্ঠিত হবে। সেখান থেকে আমরা কুমিল্লায় নতুন কি
কি করণীয় এই ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিবো।
সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ ও
মনোহরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা নিসর্গ মেরাজ চৌধুরী জানান, এসময়ে
এসে করোনা বাড়ছে এর ২টি প্রধান কারন। প্রথমত অনেকেই ভাবছেন করোনা টিকার
প্রথম ডোজ নিয়ে সুরক্ষিত হয়ে গেছেন, মানছেন না স্বাস্থ্যবিধি। দ্বিতীয়ত,
অবাধ জন সমাগম। এমন অবস্থা থাকলে শুধু কুমিল্লা সিটিতে নয়, পুরো জেলাতেই
করোনা ছড়ানোর চিত্র বিস্তৃত হবে।
সিভিল সার্জন ডা. মীর মোবারক হোসাইন
কুমিল্লার কাগজকে জানান, মাস্ক ব্যবহারের কোন বিকল্প নেই। তবে আমরা আবার
পুণরায় ‘কনটাক্ট ট্রেসিং’ শুরু করেছি, যার মাধ্যমে করোনা রোগী শণাক্ত হলে
তার সাথে আর কে কে মিশেছেন সে বিষয়টি বেরে করছি। তাদেরকে আইসোলেশনের
ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
এছাড়া তিনি আরো জানান, যারা করোনা টিকার প্রথম ডোজ
নিয়েছেন, তারা দ্বিতীয় ডোজ নেয়া শুরু করবেন আরো বেশ কয়েকদিন পর থেকে,
কিন্তু এর মধ্যে কেউ অসচেতন হলে হবেনা। মাস্ক ব্যবহার এবং স্বাস্থ্যবিধি
জোরালো ভাবে বজায় রাখতে হবে।
সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, প্রথম ধাপের শুর”
থেকে এই পর্যন্ত পুরো জেলায় করোনা শনাক্ত হয়েছেন ৯ হাজার ৪ শ ৬২ জন, সুস্থ
হয়েছেন ৮ হাজার ৮ শ ৯০ জন। করোনায় মোট ২৮১ জন মৃত্যুবরন করেছেন।