ই-পেপার ভিডিও ছবি বিজ্ঞাপন কুমিল্লার ইতিহাস ও ঐতিহ্য যোগাযোগ কুমিল্লার কাগজ পরিবার
ক্ষেতমজুর সমিতি’র ৪০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত
গ্রামীণ বরাদ্দ লুটপাট বন্ধ ও পল্লী রেশনিং চালুর দাবিতে আন্দোলন জোরদারের আহবান
এবিএম আতিকুর রহমান বাশার
Published : Saturday, 20 March, 2021 at 7:19 PM, Update: 20.03.2021 7:39:04 PM
ক্ষেতমজুর সমিতি’র ৪০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিতদেবীদ্বারে বাংলাদেশ ক্ষেতমজুর সমিতির ৪০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনা সভায় নেতৃবৃন্দ বলেছেন স্বাধীনতার ৫০বছর উদযাপন করার সময় দেশের গ্রামাঞ্চলে ক্ষেতমজুরসহ গ্রামীণ মজুরদের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি। সারা বছর কাজ, ন্যায্য মজুরি, চিকিৎসা, সন্তানের শিক্ষা থেকে এখনও গ্রামের এসব দরিদ্র মানুষ বঞ্চিত। অভাবের তাড়নায় আত্মহত্যা ও গ্রাম থেকে পালিয়ে যাওয়ার খবর নিয়মিত হয়ে দাঁড়িয়েছে। লড়াই সংগ্রাম করেই অধিকার আদায় করতে হবে নেতৃবৃন্দ বলেন, ক্ষেতমজুর সমিতিকে শক্তিশালী করে এ আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। বর্তমান করোনা মহামারিকালেও গরিব মানুষের নামে বরাদ্দকৃত অনুদানের টাকাও লুট হয়ে গেছে উল্লেখ করে নেতৃবৃন্দ বলেন, সরকারের একশ্রেণীর অসাধু কর্মকর্তা ও সরকারি দলের টাউট বাটপারদের হাত থেকে সাধারণ মানুষের জন্য বরাদ্দ আদায় করতে হবে।
আজ ২০ মার্চ বিকেল ৪টায় দেবীদ্বার নিউমার্কেট ইবনে সিনা হাসপাতালের পেছনের মাঠে আয়োজিত ক্ষেতমজুর সমিতির উপজেলা সভাপতি আব্দুল ওয়াদুদের সভাপতিত্বে  এবং যুবইউনিয়ন নেতা মো. বিল্লাল হোসেন’র সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)’র কুমিল্লা জেলা কমিটি কুমিল্লা জেলা কমিটির সভাপতি কমরেড এবিএম আতিকুর রহমান বাশার,  বাংলাদেশ ক্ষেতমজুর সমিতি কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি ও বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)’র কুমিল্লা জেলা কমিটির সাধারন সম্পাদক কমরেড পরেশ কর, বাংলাদেশ কৃষক সমিতি কুমিল্লা জেলা সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা সুজাত আলী, সাধারন সম্পাদক সূধাংসু কুমার নন্দী, বাংলাদেশ যুব ইউনিয়ন কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সহ-সভাপতি শেখ আব্দুল মান্নান, নারী নেত্রী ও ক্ষেতমজুর সমিতি কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুফিয়া বেগম, জেলা কমিটির সাধারন সম্পাদক আব্দুস সালাম, যুব ইউনিয়ন কুমিল্লা জেলা সভাপতি এ,কে,এম মিজানুর রহমান কাউছার প্রমূখ। ক্ষেতমজুর সমিতি’র ৪০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)’র কুমিল্লা জেলা কমিটির সাধারন সম্পাদক কমরেড পরেশ কর বলেন, দীর্ঘ চল্লিশ বছর ধরে বাংলাদেশ ক্ষেতমজুর সমিতির লড়াই চলছে। ১৯৮১ সালের পূর্বে এই শ্রেণীর মানুষের কোন সংগঠন ছিলনা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ক্ষেতমজুর সমিতি গড়ে তোলার মধ্য দিয়ে গ্রামীণ এই শ্রমজীবী মানুষের ভরসার স্থান হয়ে উঠে এই সংগঠন। তিনি বলেন, ক্ষেতমজুরসহ গ্রামীণ মজুররা সারা বছর কাজ চায়, ন্যায্য মজুরি চায়। সরকার গরিবদের উন্নয়নের কথা বললেও গরিবদের উন্নয়ন হয়নি, বরং দেশে দ্রুত কোটিপতির সংখ্যা বৃদ্ধির হার বিশে^র মধ্যে রেকর্ড করেছে। অপরদিকে গরিব মানুষ কর্মহীন হয়ে বেকারের সংখ্যা বেড়ে চলেছে। তিনি বলেন, ক্ষেতমজুর সমিতির সুবর্ণজয়ন্তী পালিত হবে লুটপাট-দুর্নীতিমুক্ত গরিব মানুষের কল্যাণের মুক্তিযুদ্ধের আকাঙ্খার দেশ গঠনের মধ্য দিয়ে। যার নেতৃত্বে থাকবে ক্ষেতমজুরসহ গ্রামের শ্রমজীবী গরিব মানুষের প্রতিনিধিরা। তিনি নতুন প্রজন্মকে গ্রামে গিয়ে সাধারণ মেহনতী মানুষের পক্ষে অধিকার আদায়ের লড়াই অগ্রসর করার আহ্বান জানান।ক্ষেতমজুর সমিতি’র ৪০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত
আলোচনা সভায় নেতৃবৃন্দ বলেন, সারা বছর ক্ষেতমজুরদের যেমন কাজ থাকে না তেমনি সারা বছর মজুরিও এক রকম থাকে না। নারী-পুরুষের মজুরি বৈষম্য বেড়েই চলেছে। অসহায় নারী শ্রমিকরা ন্যায্য মজুরির দাবি করলে তাদের কাজ থেকে বাদ দেওয়া হয়।
নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, গ্রামেগঞ্জে সাম্প্রদায়িক হামলা, সংখ্যালঘু নির্যাতন, নারী-শিশু ধর্ষণ বেড়েই চলেছে। নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে নির্যাতন-নিপীড়ন-ধর্ষণ বন্ধে সরকারকে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানান।
বাংলাদেশ ক্ষেতমজুর সমিতির নেতৃত্বে অধিকার আদায় ও গণতন্ত্রের সংগ্রামে শহীদ হয়েছেন সংগঠনের নেতা ফজর আলী, জয়নাল আবেদীন, সোনা মিয়া, সৈয়দ আমিনুল হুদা টিটো, অজিত কুমার সরকার, নিরঞ্জন টুলু, লখাই হাওলাদার, রাহাব্বত আলী, ইউনুস ফরাজীসহ অনেকে। ‘গ্রামীণ বরাদ্দ লুটপাট বন্ধ কর, পল্লী রেশনিং চালু কর’- এ শ্লোগানকে ধারণ করে এবারের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনার সভার শুরুতে ক্ষেতমজুর সমিতির নেতৃত্বে আন্দোলন করতে যারা শহীদ হয়েছেন, তাদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে দাঁড়িয়ে ১ মিনিটি নিরবতা পালন করা হয়।
এছাড়াও সংগঠনের ৪০ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী সফল করতে একটি মিছিল উপজেলা সদরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে উপজেলা প্রেসক্লাবে এসে শেষ হয়।