Published : Sunday, 21 March, 2021 at 12:20 AM, Update: 21.03.2021 12:29:29 AM
স্টাফ রিপোর্টার।। কুমিল্লা জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের সাবেক ভিপি এবং স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের তুখোড় ছাত্র নেতা মিজানুর রহমান আজাদের রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার রাত ৯টায় ভারতের নদীয়ার কৃষ্ণনগর রেলওয়ে স্টেশনে ট্রেন থেকে নামার সময় পড়ে মাথায় আঘাত পাওয়ায় তিনি মারা যান বলে ভারতে অবস্থানরত একজন পূর্ব পরিচিত জানিয়েছেন। ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ায় দুুপুরে তার চুয়াডাঙ্গার দর্শনার জয়নগর স্থলবন্দর দিয়ে দেশে ফেরার কথা ছিল বলে পরিবারকে জানানো হয়। কিন্তু পরেই আবার জানানো হয় তিনি কিছুটা অসুস্থ শনিবার সকালে ফিরবেন। রাত ১১ টায় মিজানুর রহমান আজাদের স্ত্রীকে জানানো হয় আজাদ সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছেন। ফলে এ নিয়ে রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে।
শনিবার রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ভারতের নদীয়ার কৃষ্ণনগর থানায় মিজানুর রহমান আজাদের মরদেহ রয়েছে বলে জানান মিজানুর রহমান আজাদের ছোট ভাই কুমিল্লা সদর উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান তারিকুর রহমান জুয়েল। তিনি জানান, সাবেক ভিপি আজাদের মরদেহের ময়নাতদন্ত হয়েছে। কাগজপত্র তৈরি করে রবিবার যশোরের বেনাপোল দিয়ে মরদেহ হস্তান্তর করা হবে। কেননা করোনা পরিস্থিতির কারনে দর্শনার জয়নগর স্থলবন্দর বন্ধ রয়েছে। দূতাবাসেরও অনুমোদনের প্রয়োজন হবে।
জানা গেছে, গত ৮/৯ মাস আগে মিজানুর রহমান আজাদ ভারতে যান। করোনা পরিস্থিতির কারণে ভারতে অবস্থান করেন। কিন্তু তার ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় শুক্রবার দুপুরের পর চুয়াডাঙ্গার দর্শনার জয়নগর স্থলবন্দর দিয়ে দেশে ফেরার কথা ছিল। প্রাক্তণ চলচ্চিত্রকার দেবাশীষ নামে একজন ফোন করে জানান মিজানুর রহমান আজাদ অসুস্থ, শুক্রবার আসবেন না। শনিবার সকালে আসবেন। পরে রাত ১১টায় জানান, রাত ৯টার দিকে আজাদ সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছেন। মরদেহ নিতে চাইলে দর্শনা সীমান্তে আসতে বলেন তিনি, না হয় ভারতেই দাফন করার কথা বলেন। জানা গেছে, করোনা পরিস্থিতির কারনে দর্শনা স্থলবন্দর বন্ধ রয়েছে।
দৈনিক কুমিল্লার কাগজ থেকে ভারতের নদীয়ার কৃষ্ণনগর কোতয়ালী থানায় যোগাযোগ করা হলে কর্তব্যরত কর্মকর্তা জানান, মৃত্যুর কারণ জানতে শক্তিনগর জিলা হাসপাতালে যোগাযোগ করতে হবে। শক্তিনগর হাসপাতালে ফোন করা হলেও কেউ ফোন ধরেন নি।
এ দিকে মিজানুর রহমান আজাদের মৃত্যু নিয়ে রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে। আজাদের ভাই তারিকুর রহমান জুয়েল জানান, মরদেহ পাওয়ার পর বুঝতে পারবো আসলে কি হয়েছে। আমরা এখন সে অপেক্ষায় আছি।
অন্যদিকে আজাদের ঘনিষ্ঠজনরা ঘটনার বর্ণনা শুনে তার দুর্ঘটনায় মৃত্যু না হত্যাকা- তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন।
অপর একটি সূত্র জানায়, যে সাবেক চলচ্চিত্রকার দেবাশীষ মৃত্যুর খরব দিয়েছেন তার সাথে মিজানুর রহমান আজাদের পূর্ব বিরোধ ছিলো। এই দেবাশীষ ২০০৬ সালে ভারতে চলে যান। সেখানে বসবাস শুরু করেন। মিজানুর রহমান আজাদ ভারতে অবস্থানকালে তার কাছে ছিলেন বলে জানা গেছে। তিনিই আজাদের স্ত্রীকে ফোন করে সড়ক দুর্ঘটনা ও মৃত্যুর খবর জানান এবং অল্প সময়ের মধ্যেই কোলকাতা থেকে নদীয়ার কৃষ্ণনগরে পৌঁছান। মিজানুর রহমান আজাদের ফোন থেকে দেবাশীষকে ফোন করে দুর্ঘটনার কথা জানানো হয় বলে দেবাশীষ পরিবারকে জানান।
উল্লেখ্য, প্রাক্তণ এই প্রভাবশালী ছাত্র নেতা কুমিল্লার দৌলতপুরের বাসিন্দা। তার গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর থানার রসুলাবাদ ইউনিয়নের কালঘোড়া গ্রামে।