(পথিকৎ কুমিল্লা চারুশিল্পী পরিষদের প্রদর্শনী নিয়ে একটি পর্যবেক্ষণ ও অভিমত)
আহাম্মেদ কবীর ।।
ছবিরা
প্রাণের কথা বলে। প্রাণ মানেই সুন্দর। সুন্দরের অভিকল্পে প্রাণেরা
স্বতঃস্ফূর্ত ও সাবলিল বলেই প্রাণ এবং সুন্দর একে অপরের প্রতিভূ। আর
সেজন্যই সুন্দরের পক্ষপাতে জীবনের নানাদিক নিয়ে প্রকৃতি ও বিকাশের
সূত্রসত্যে ছবি বা ছবিচিত্র হয়ে ওঠে নান্দনিক উপস্থাপনা। জীবনকে দেখার চোখ
নানা জনের নানারকম অথবা ভিন্ন হতে পারে তবে প্রকাশভঙ্গির মহিমায় শিল্পীর
তুলিতে সৃষ্ট ছবিরা জীবনের অনৈক্যকে যেন বিনেসুতার মালায় গ্রন্থিত করার
প্রয়াস চালায়। শিল্প সৃষ্টির শুরুতেই সুন্দর, শেষে সুন্দর এবং শেষের শেষে
সুন্দরেরা অনাদিকালের যাত্রাপথে সুন্দরের গান গাইতে গাইতেই প্রাগ্রসর হতে
জানে বলেই শিল্পীর সৃষ্টি ও সৃষ্ট মহিমা ধ্রুপদী ও দুরুপসদ।
আমরা
জানি প্রাচীনকালে বাস্তবতার (রিয়েলিজম) সাধারণ প্রকাশই ঘটতো চিত্রকর্মের
মাধ্যমে। সে সময়কালের মানুষেরা ছবি বা ছবির মতো করে সংকেত ও প্রতীক আঁকতো।
সভ্যতার বিকাশের সাথে সাথেই তার উন্নতি ঘটে। মানুষের আঁকা চিত্রকর্মে
ক্রমেই যুক্ত হতে থাকে শিল্পীর নানা প্রকারের পরীক্ষা-নিরীক্ষা এবং
দৃষ্টিকোণ বা পরিপ্রেক্ষিত। সোজা, বাঁকা, কৌণিক, ঊর্ধেŸ কিংবা সমতল থেকে
দেখার ব্যাপারসমূহ যখন ছবিতে প্রকাশিত হতে থাকে তখন তাতে ‘ভিন্নতা ও
ব্যতিক্রম’ প্রকটিত হয়ে ওঠে। একইসাথে কৌণিক দূরত্ব, দেখার অস্পষ্টতা,
অনুভূতির প্রগাঢ় সরলতা, স্বপ্ন, ধূলিময় প্রজ্ঞান, না দেখে মনে রাখা,
খ-িতভাবে দেখা, অনুভূতির বিমূর্ততায় প্রকাশের বিচিত্র ব্যঞ্জনা,
আলো-আঁধারের উপস্থিতিতে ছবির স্পষ্টতায় ভিন্নতা ইত্যাদিও মুখ্য হয়ে উঠেছে।
সেজন্যই আধুনিককালের চিত্রশিল্প একপেশে, সরল ও একমুখী নয়। তাই বহুমুখী
বহুমাত্রিকতা বর্তমানকালের চিত্রকর্মের প্রধান বৈশিষ্ট্য ও অভিজ্ঞান। আর
সেই অভিজ্ঞান ও বৈশিষ্ট্যসমূহের স্বতন্বর স্বকীয়তা নিয়ে জাতির পিতা
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এর জন্মশত বার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণ
জয়ন্তী উপলক্ষে-‘কুমিল্লা চারুকলা প্রদর্শনী-২০২১’ এর আয়োজন করা হয়। আয়োজক
ছিলেন যৌথভাবে জেলা শিল্পকলা একাডেমি, কুমিল্লা এবং পথিকৎ কুমিল্লা
চারুশিল্পী পরিষদ। সাতদিন ধরে চলা প্রদর্শনীতে ৫৪ জন শিল্পীর ১৮৫টি
শিল্পকর্ম প্রদর্শন করা হয়।
কুমিল্লা প্রেক্ষিতে এ ধরনের প্রদর্শনী
শিল্পের বিকাশের ক্ষেত্রে অসাধারণ ভূমিকার সূচনা হয়েছে বলেই অনেকের অভিমত।
করোনা-উত্তর কালে সবার জীবন যখন সংকটের সন্ধিক্ষণে তখন শিল্পকলা চত্বরে এ
ধরনের প্রদর্শনীর আয়োজন নতুন আশার সঞ্চার করে। কুমিল্লার শিল্পরসিক
মানুষজনের উপস্থিতি প্রমাণ করে যে মানুষ আগামীমুখী। প্রাগ্রসর দুনিয়ার
দিকেই তার চলমানতা। তাই তাকে থামানো যাবেনা। বরং তার এগিয়ে চলার পথে তার
মনকে শিল্পিত করার প্রয়াস অবশ্যই আগামীর বিকাশে প্রধান ভূমিকা রাখবে।
এবার আসা যাক, প্রদর্শনীতে প্রদর্শিত চিত্রকর্মের নানাদিক প্রসঙ্গে।
প্রবীণ-নবীন মিলিয়ে ৫৪ জন শিল্পীর আঁকা ছবিগুলো শুধু অংশগ্রহণমূলকই ছিলনা
বরং বলা যায় এ অঞ্চলের বিকশিত শিল্প-সত্তার দীপিত ধারাবাহিকতা। শিল্পীরা
ছবিগুলো এঁকেছেন প্রধানত জলরং তৈলরং, এক্রিলিক, রঙিন পেন্সিল, কাঠ খোদাই,
মিশ্র মাধ্যম কালি-কলম, ডিজিটাল মাধ্যম ইত্যাদিতে। ছবিগুলোতে বৈচিত্রের
মাঝে ঐক্যের যোগসূত্র সূচিত ও বিকশিত হয়েছে। বড় ছবিতে শিল্পীর বৈশিষ্ট ও
স্বকীয়তা মূর্তমান। সেদিক থেকে বলা যায় যে, অনেক নবাগত শিল্পীরা বিরাট
ক্যানভাসে ছবি এঁকে নিজেদের যোগ্যতা যেমন প্রমাণ করেছে ঠিক তেমনি এ অঞ্চলের
শিল্প বিকাশের নতুন সম্ভাবনাকে সুস্পষ্ট করে তুলেছে। আমরা পর্যায়ক্রমে
তাদের কর্মযজ্ঞের সংক্ষিপ্ত মূল্যয়নের প্রয়াস চালাবো।
প্রথমেই আসা
যাক প্রবীণদের প্রসঙ্গে। তাঁদের ছবিগুলোর মধ্যে রয়েছে শৈল্পিক অভিনবত্ব ও
প্রকাশের রীতি-শৈলীর ভিন্নতা। উডকাট-এ গ্রামীণ নারীকে এঁকেছেন শিল্পী
সমরজিৎ রায় চৌধুরী। রেখার সম্মিলনে লেজার প্রতিবিম্বের মতোই এ চিত্রকর্ম
নতুন ভাবনাকে উস্কে দেয়। শিল্পী খাজা কাইয়ূম শাদা শাপলার আঁটিকে কলাপাতার
উপরে রেখে কয়েকটি ছোট ছোট মাছের উপস্থিতির মাধ্যমে ছবিতো নয় যেন ছবির
স্থিরচিত্র উপস্থাপন করেছেন। ছবিতে রঙের ব্যবহারে আভিজাত্য রয়েছে।
সাদা-কালো রঙে কৃষ্ণকে বাঁশি হাতে উপস্থাপিত করেছেন শিল্পী শাহরুল হায়দার।
ছবির বর্ণনার চাইতেও ছবির উপস্থাপনে যে ভিন্নতা রয়েছে সেটা মনকে প্রকৃত
ছবিমুখী করে- এটাই এ ছবির বিশেষ বৈশিষ্ট্য বলে মনে হয়। শিল্পী নাজমা
আক্তারের ছবিতে প্রতিচিত্রের বাস্তবতা মুখশ্রীতে রহস্য সৃষ্টি নব-ব্যঞ্জনার
জন্ম দেয়। পাশাপাশি বলা যায় শিল্পী উত্তম গুহ তিনটি ছবির মাধ্যমে গ্রামীণ
বাংলার নিসর্গ ও জলজ-অভিবাসের যে ছবি এঁকেছেন, তাতে দূরে ও কাছে, রঙের
স্বকীয়তা ও শিল্পীর মননশীলতাই প্রকটিত। বিশিষ্ট এই শিল্পী ছবির উপস্থাপনে
সবসময়েই স্বকীয়তা-শাসিত অন্বিষ্ট ধারার অভিজ্ঞানবাদী প্রজ্ঞাবান পুরুষ। ফলে
তাঁর ছবিতে বিম্বিত শৈলী উপস্থাপনরীতি নতুন কথা বলতেই পারঙ্গম।
অন্যদিকে শিল্পীর শিক্ষক, কুমিল্লার শিল্প-প্রাণ শিল্পী সুলতান শাহরীয়ার
অ্যাক্রিলিক মাধ্যমে উপস্থাপন করেছেন সময় আর প্রকৃতির অভিকল্প। করোনাকালে
আঁকা এ তিনটি ছবিই শুধু রঙ আর ঐতিহ্যই নয় অনুভূতির ব্যঞ্জনা সৃষ্টিকারী
সূক্ষ্ম ও নির্মোহ অনুভূতিকে জাগ্রত করে। শিল্পী শক্তিকাম সিনহা এঁকেছেন
দুটো ছবি। একটিতে নদী ও নৌকা আর অন্যটিতে গ্রামীণ বসতির প্রতিবিম্ব
ফুটিয়েছেন। শিল্পের শিক্ষক হিসেবে তাঁর বৈশিষ্ট্য সর্বজন স্বীকৃত। এর পরের
ছবি শিল্পী চন্দন দেবরায়-এর। শিক্ষক হিসেবে ‘রঙের ছন্দ’ প্রকাশের ঢঙটি
অনুভূতিতে জাগরণ সৃষ্টি করে। পরের ছবিটি বিখ্যাত শিল্পী মাসুক হেলালের। এটা
একটা পোট্রেট। এ ধরনের কর্মে জাতীয়ভাবেই তিনি বিখ্যাত।
প্রদর্শনীর
ছবিগুলো অনেকেরই দৃষ্টি কেড়েছে। এমনকি অনেককে অনুপ্রাণিত করেছে। সাত দিনের
দীর্ঘ সময়ে শিল্পকলা একাডেমির প্রাঙ্গণ ছিল শিল্পী, দর্শক আর বোদ্ধাদের
বিচরণ ক্ষেত্র। সবাই ঘুরে ঘুরে ছবিগুলো দেখছিল। কেউ কেউ ছবির সামনে মোবাইল
দিয়ে ছবি তুলছিল। অনেককেই দেখা গেছে শিল্পীদের সাথে নানা বিষয়ে কথা বলতে।
মোটকথা শিল্পীমুখর একটা পরিবেশ কুমিল্লার শিল্প-চর্চার গতিকে যে বেগবান
করবে সেটা বলার অপেক্ষা রাখেনা। নতুন শিল্পীদের মধ্যে অনেকেই শিক্ষা-জীবন
শেষ করেনি। আবার অনেকেই নানা ধরনের পেশার সাথে যুক্ত থেকেও শিল্প-চর্চাকে
ভুলতে পারে নি। ছবি প্রদর্শনীর এই ব্যাপারটা তাদেরকে উৎসাহিত করেছে বলেই
প্রদর্শনীটি সার্থক হয়েছে বলে অনেকেই মতামত প্রদান করেছেন।
এবার আসা
যাক আরো কিছু ছবি নিয়ে সংক্ষিপ্ত পরিসরে শৈল্পিক আলোচনা। এটা সবাই জানেন
যে, শিল্প সৃষ্টি মানুষের অনুভূতি-তাড়িত বিশ্বাস ও দক্ষতা থেকে উৎসারিত।
তবে সেটা সবার ক্ষেত্রে সমান নয় বলেই সব শিল্পকে যেমন শিল্প বলা যায় না ঠিক
তেমনি সবার আঁকা ছবিই শিল্প-সম্মত হবে এমনটি ভাবা সঠিক নয়। তবে এই পরিসরে
যাদের ছবি নিয়ে আলোচনা করা হবে-তাদের বাইরেও সে ভাল শিল্পী নেই তেমনটা ভাবা
অনুচিত। তাই যাঁদের ছবি নিয়ে আলোচনা করতে পারবোনা-তারা মন খারাপ করবেন না
এটাই আমার প্রত্যাশা।
বাংলা সম্মান শ্রেণির ছাত্রী নুসরাত জাহান মিম
ছবি এঁকেছে অ্যাক্রেলিক মাধ্যমে দুটো ছবি ‘মানব আচরণ’ এবং ‘জটিল শহর’।
জলরঙে আঁকা আরেকটি ছবি বান্দরবানের ভেলা খুমকে নিয়ে। তিনটি ছবিতেই তাঁর
দক্ষতা, উপস্থাপনের শৈলী বেশ সম্ভাবনাই মনে হয়েছে। চারুকলার নবীন শিক্ষক
জিলানী আলম এঁকেছেন সারেন্ডার সিরিজের তিনটি অর্ধ-বিমূর্ত ছবি। জীবনের
বোধকে গভীরভাবে উপস্থাপনের শৈলী এর মূর্ত-বিমূর্তের অভিব্যক্তি তাঁর ছবির
অন্যতম ঔষ্ণীক বৈশিষ্ট্য। রঙের ব্যবহারে পারঙ্গম শিল্পী সামিয়া সানজিদার
জলরঙে আঁকা বাংলার প্রকৃতি সত্যিই ভিন্নতার অনুরণন সৃষ্টি করে। একই রীতিতে
অর্থাৎ জলরঙে আঁকা শিল্পী সানজিদা আফরিন বিনতিয়ার দুটি ছবিতেই রঙের
আভিজাত্য অন্যরকম ব্যঞ্জনা সৃষ্টি করে। আরেক প্রবীণ শিল্পী মজিবুর রহমান
রিপন এঁকেছেন রিকসার জীবন। দুটি ছবি জলরঙে এবং একটি ছবি অ্যাক্রেলিকে।
ছবিগুলোতে একটা নিজস্বতা ও রঙের ঋদ্ধিমান স্বকীয়তা বিদ্যমান। এর পাশেই
শিল্পী শাহ মোঃ রিয়াজুল হক অ্যাক্রেলিকে তিনটি ছবি এঁকেছেন। শেষ ছবিটিতে
‘আল্লাহু আকবর’ শীর্র্ষক ক্যালিগ্রাফির যে সম্মিলন ঘটিয়েছেন সেটা ধর্মীয়
শ্রদ্ধাবোধকেই জাগ্রত করে। একইভাবে আরেক শিল্পী, রেজওয়ানা রহিম ঝুমু
অ্যাক্রেলিকে এঁকেছেন ইসলামি ক্যালিগ্রাফির ছবি। এক্ষেত্রেও বলা যায়, এ
ধরনের ছবি আঁকা খুবই কঠিন। আর সেই কঠিনকে আয়ত্বে এনে শিল্পী নতুন সম্ভাবনার
পথকে প্রশস্ত করেছেন।
চারুকলার আরেক শিক্ষক শিল্পী গোলাম মোস্তফা
নিসর্গ চিত্রের ছকি এঁকেছেন জলরঙে ও তৈলরঙে। পোটেট আঁকায় দক্ষ এ শিল্পী
সবসময়েই জীবনের বোধকে রঙে রঙিন ও বাস্তবতার মিশেলে দক্ষতার সাথেই উপস্থাপন
করে চলেছেন। ভিন্নতা ও ব্যতিক্রমের প্রসঙ্গ এলেই আরেক নবীন শিল্পী নুসরাত
জাহান-এর কথা উঠে আসে। এ শিল্পীর তিনটি ছবির মধ্যে বৃদ্ধের ছবিটি অসাধারণ
ব্যঞ্জনা-¯œাত। মুখের অভিব্যক্তিতে সুদৃঢ় দৃষ্টি-দৃক্ষা সবার মনেই
জিজ্ঞাসার সৃষ্টি করে। অর্ধ-বিমূত ছবি আঁকার ক্ষেত্রে শিল্পী ইমা কবির
ইনাকে অনেকটাই জটিল ও সূক্ষ্ম-বাস্তবতার প্রতিভূ মনে হয়েছে। তবে তাঁর কাজ
নিয়ে সংক্ষিপ্ত পরিসরে বলা খুবই কঠিন।
শিল্পী নয়ন দেবনাথের
বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে আঁকা ছবিটি অভিব্যক্তি ও প্রেক্ষিতগত কারণে কিছুটা ভিন্ন
ধারার। তাঁর কর্ম-গতি ঔজ্জ্বল্য-তাড়িত বলেই মনে হচ্ছে। অ্যাক্রেলিকে আঁকা
‘আশ্রয়’ ছবিটি শিল্পী সামিয়ুল আলম জাহেদ-এর প্রাণ ও মানবতাবোধকে প্রকাশ
করে। তাঁর আঁকা বাকি দুটি ছবিতেও তিনি জীবনের সংকট এবং বাঁচার আকাক্সক্ষাকে
মূর্ত করেছেন। শিল্পী এ কে এম মাসুদ পারভেজ অ্যাক্রেলিক ও তৈল চিত্রে
গ্রামীণ বাংলার ছবি এঁকেছেন। কিন্তু তাঁর ছবিতে আলোর যে ব্যঞ্জনা সেটা তাঁর
উচ্চ মার্গীয় শিল্পী সত্তাকে উপস্থাপিত করে। রঙের ব্যবহারে অনুভূতি জাগ্রত
করার নান্দনিক প্রয়াস লক্ষ্যনীয় শিল্পী উম্মে হাবিবা সুমি এবং শিল্পী
শর্বাণী রায় চৌধুরীর আঁকা ছবিগুলোতে। শিল্পী দেবদাস সিকদার জলরঙ ও
অ্যাক্রেলিকে এঁকেছেন তিনটি ছবি। গ্রামীণ সৌন্দর্য ও শৈশবের প্রেক্ষাপটে
আঁকা ছবিগুলো কিছুটা ব্যতিক্রম। শিল্পীর দৃষ্টিভঙ্গি ও রঙের কারুকাজে মনে
হয় সেও একজন রঙের রাউত। শিল্পী মিজানুর রহমান আকন এঁকেছেন তিনটি ছবি।
দুটিতে রঙের ব্যবহার আর অন্যটিতে আঁকা হয়েছে ‘সোনালু ফুল’। তিনটি ছবিতেই
তাঁর দক্ষতা প্রকটিত।
আমরা জানি সবকিছুতেই ভালমন্দের মিশেল থাকে তাই
মন্দের দিককে উচ্চকিত করা সবক্ষেত্রে সঠিক নয়। তবুও কিছু ব্যাপারে
শিল্পীদের সতর্ক থাকতে হবে। বিশেষ করে ছবি আঁকার সময় কৌণিক দূরত্ব,
পরিপ্রেক্ষিত এবং মূর্ত বিমূর্তের বাস্তবতাকে ঠিকভাবে উপস্থাপনের প্রয়োজন
রয়েছে। বিষয়বস্তু, ইতিহাসবোধ, মানবতা, নান্দনিকতা, সরলতা, দেশপ্রেম, সততা,
মহান মুক্তিযুদ্ধ এবং কাব্যপ্রেম ইত্যাদি একজন শিল্পীকে অনেক দূর নিয়ে যেতে
পারে। আগামীর বাংলাদেশকে গড়তে হলে প্রত্যেক শিল্পীকেই তাঁর বোধের দিক থেকে
সংস্কারমুক্ত, মাদকমুক্ত ও প্রজ্ঞাবান হতে হবে। নিজে শুদ্ধ হলে ছবি শুদ্ধ
হবে। ছবি শুদ্ধ হলে শিল্প সুন্দর হবে। আর সুন্দরের সুপথেই সংস্কৃতির বিকাশ।
আমরা সেই বিকশিত সংস্কৃতির স্বপ্ন দেখি এবং দেখবই।