অ্যাম্বুলেন্স পাঠাতে অস্বীকার করায় মহিষের গাড়িতে করে হাসপাতালে নিয়ে হয়েছে নয় মাসের এক গর্ভবতী নারীকে। তবে কোনো দুর্ঘটনা ছাড়াই ওই নারী সন্তান প্রসব করেছেন এবং নবজতাক ও মা বর্তমানে ভালো আছেন।
শুক্রবার (১৯ মার্চ) ভারতের বিহারের কাতির জেলায় এই ঘটনা ঘটেছে বলে গালফ নিউজ জানিয়েছে। এ ঘটনা রাজ্যের বেহাল স্বাস্থ্য ব্যস্থার চিত্রকে তুলে ধরেছে। কর্তৃপক্ষ এ ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে।
জানা গেছে, নয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা মেয়ের ব্যথা উঠলে জেলার আমদাবাদ এলাকার বাসিন্দা নাইমুল হক অ্যাম্বুলেন্সের জন্য স্থানীয় হাসপাতালে ফোন করেন। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কোনো সহযোগিতা করতে পারবে না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দেয়। এরপর নাইমুল হক আরেকটি হাসপাতালে ফোন করেন। তারাও একই কথা জানায়। রাস্তা খারাপের অজুহাতে অ্যাম্বুলেন্স পাঠাতে অস্বীকার করে তারা।
উপায়ন্তর না পেয়ে বাধ্য হয়ে দ্রুত তিনি একটি মহিষের গাড়ি ব্যবস্থা করে মেয়েকে নিকটস্থ প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নেয়ার ব্যবস্থা করেন। দুই ঘণ্টা সময় লাগে তাদের পৌঁছতে। তবে সুখবর হলো কোনো দুর্ঘটনা ছাড়াই তার মেয়ে সন্তানের জন্ম দেন।
এ পর্যন্ত সবকিছু ঠিকঠাকমতো হয়। তবে এরপরের ঘটনাও মন খারাপ হয়ে যাওয়ার মতো। বাড়ি ফেরার জন্য অ্যাম্বুলেন্স সহায়তা চাওয়া হলে আবারও তা দিতে অস্বীকার করে কর্তৃপক্ষ। শেষমেষ তাদের ওই মহিষের গাড়িতে করেই নবজাতক ও মাকে নিয়ে বাড়ি ফিরতে হয়।
জানা গেছে, রোগীর বাড়ি থেকে হাসপাতাল পর্যন্ত চার কিলোমিটার দীর্ঘ রাস্তা গত বছর বন্যার পানিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তবে এখনও তা সংস্কারে সরকারের কোনো উদ্যোগ দেখা যায়নি।
এ ঘটনায় ওই হাসপাতালের সুপারিনটেনডেন্ট আশা শরন বলেন, ‘এটি খুবই মর্মান্তিক। আমরা বিষয়টিকে গুরুত্বসহকারে নিয়েছি এবং তদন্তের নির্দেশ দিয়েছি। যেই দোষী হোক তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
বিহারে এ ধরনের ঘটনা এটিই প্রথম নয়। সময়সমতো হাসপাতালে ভর্তি না নেয়ার কারণে বিহারে মা ও নবজাতক মৃত্যুর বেশকিছু ঘটনা আছে। যদিও সরকারের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, মাতৃমৃত্যুর হার গত কয়েক বছরে কমেছে।