মাসুদ
আলম।। কুমিল্লাকে কিন ও গ্রীন কুমিল্লায় রূপান্তরে কাজ করতে চান কুমিল্লার
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান। ময়লা-আবর্জনা ও দূষণমুক্ত পরিচ্ছন্ন
কুমিল্লা গড়তে তিনি সিটি কর্পোরেশনের সহযোগিতা কামনা করছেন। এদিকে জেলা
প্রশাসকের বাংলোর সামনে কুমিল্লা বোটানিক্যাল গার্ডেন ও চিড়িয়াখানাকে ঘিরে
বখাটেদের উৎপাত বেড়েছে। সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত বখাটে কিশোর ও
যুবকরা আড্ডায় মেতে উঠে এই দুই বিনোদন কেন্দ্রের সামনে। বিষয়টি খতিয়ে দেখে
তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন
কুমিল্লা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান।
এছাড়াও অন্যান্য
বিষয়গুলোর মধ্যে কুমিল্লা সড়ক ও জনপথ বিভাগ, এলজিইডি, গণপূর্ত, শিক্ষা ও
স্বাস্থ্য প্রকৌশলী, পানি ও বিদ্যূৎ উন্নয়ন বোর্ডসহ বিভিন্ন উন্নয়নমূলক
বিভাগের কাজের মান নিয়ে অসন্তুষ্টি প্রকাশ করে জেলা প্রশাসক স্ব স্ব
বিভাগের প্রকৌশলীকে উন্নয়ন কাজের মান বাড়ানোর নির্দেশ প্রদান করেন।
এদিকে
করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে কুমিল্লায় সংক্রামণের হার বাড়ছে জানিয়ে সকলকে
সচেতনতা বৃদ্ধির পরামর্শ প্রদান করেন। সেই সাথে সাধারণ মানুষের মধ্যে
মাস্কের ব্যবহার নিশ্চিত করতে স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী
কর্মকর্তাদের নির্দেশ প্রদান করে তিনি জানান, শনিবার ৮৪ জন ব্যক্তির নমুনা
পরীক্ষা করলে ২০ জনের করোনা শনাক্ত করা হয়। পরিসংখ্যানে দেখা যায়, প্রতি
চারজনে একজন ব্যক্তি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছেন। করোনা এখনও যায়নি,
করোনা বাড়ছে।
রবিবার (২১ মার্চ) কুমিল্লা জেলা প্রশাসক সম্মেলন কক্ষে
জেলা উন্নয়ন ও সমন্বয় কমিটির সভায় জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান এইসব
বিষয় নিয়ে কথা বলেন।
সভায় সভাপতির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক বলেন,
কুমিল্লা দেশের ঐতিহ্যবাহী একটি জেলা। এই জেলায় আমি একজন নতুন জেলা প্রশাসক
হিসেবে কাজ শুরু করেছি। ঐতিহ্যের ও গর্বের গোমতী নদীকে ধ্বংস করছেন
দুর্বৃত্তরা নির্বিচারে চরের মাটি কেঁটে। এতে সবুজ প্রকৃতি হারাচ্ছেন নদী।
তাই এই গোমতীকে রক্ষায় আমরা এতোমধ্যে অভিযান অব্যাহত রেখেছি। ঠিক তেমনি
কুমিল্লাকে ময়লা, আবর্জনা ও দূষণমুক্ত করতে কাজ করতে চাই। গড়তে চাই কিন ও
গ্রীন কুমিল্লা। এই কাজে আমরা সিটি কর্পোরেশনের সহযোগিতা কামনা করছি।
কিন্তু জেলা উন্নয়ন ও সমন্বয় কমিটির দুই সভায় কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের
কোন প্রতিনিধি উপস্থিত নেই, তাহলে আমরা কাজ সাথে আমাদের উদ্যোগের বিষয়টি
শেয়ার করবো। কারণ কুমিল্লাকে কিন ও গ্রীন করার কাজে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা
থাকবে সিটি কর্পোরেশনের।
এদিকে কুমিল্লা সিভিল সার্জন ডা. মো. মোবারক
হোসেইনের দেওয়া একটি তথ্যের ভিত্তিতে জেলা প্রশাসক জানান, আগামী পয়লা
এপ্রিল থেকে কুমিল্লা মহানগর থেকে শুরু করে উপজেলার সকল অবৈধ কিনিক,
হাসপাতাল ও ডাক্তার পরিচয় দানকারী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে
ব্যবস্থা নেয়া হবে। তালিকা প্রস্তুতের জন্য সিভিল সার্জনকে তৈরি থাকার জন্য
নির্দেশ দিয়েছেন।
এই ঘেষণায় কুমিল্লা সিভিল সার্জন ডা. মো. মোবারক
হোসেইনের জানান, কুমিল্লা মহানগরসহ জেলায় ৪০০টি বৈধ হাসপাতাল ও কিনিক
রয়েছে। এই সংখ্যার বাহিরে সকল চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান অবৈধ।
এছাড়া
অন্যান্য বিষয়গুলোর মধ্যে, কুমিল্লা সড়ক ও জনপথ বিভাগ, এলজিইডি, গণপূর্ত,
শিক্ষা ও স্বাস্থ্য প্রকৌশলী, পানি ও বিদ্যূৎ উন্নয়ন বোর্ডসহ বিভিন্ন
উন্নয়নমূলক বিভাগের কাজের মান নিয়ে অসন্তুষ্টি প্রকাশ করে জেলা প্রশাসক স্ব
স্ব বিভাগের প্রকৌশলীকে উন্নয়ন কাজের মান বাড়ানোর নির্দেশ প্রদান করেন।
জেলা
প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসানের সভাপতিত্বে এসময় উপস্থিত ছিলেন, কুমিল্লা
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন, স্থানীয় সরকার
উপ-পরিচালক মোহাম্মদ শওকত ওসমান, কুমিল্লা জেলা সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ
মোবারক হোসাইন, কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজের পরিচালক ডা. মোহাম্মদ মহিউদ্দিন,
কুমিল্লা সদর উপজেলার চেয়ারম্যান এড. আমিনুল ইসলাম টুটুল, মনোহরগঞ্জ
উপজেলার চেয়ারম্যান জাকির হোসেন, মুরানগর উপজেলার চেয়ারম্যান আহসানুল আলম
কিশোর, ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার চেয়ারম্যান আবু জাহের, দাউদকান্দি পৌরসভার
মেয়র নাঈম ইউসুফ, কুমিল্লা সড়ক জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো.
রেজা-ই-রাব্বী, কুমিল্লা বিভাগীয় বন বিভাগের কর্মকর্তা মো. নুরুল করিমসহ
বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের প্রতিনিধিবৃন্দ ও নির্বাহী কর্মকর্তা
বৃন্দ।