আজ
মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে বিশ্বের মানচিত্রে নতুন
রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশের ঘোষণা দিয়েছিল একটি ভূখ-, যার নাম বাংলাদেশ।
সবুজ জমিনে রক্তিম সূর্যখচিত মানচিত্রের এ দেশটির স্বাধীনতার ৫০তম বার্ষিকী
আজ।
স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীর এ দিনটি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের
জন্মশতবার্ষিকীর বছরও। এবার তাই উদযাপনেও যোগ হয়েছে ভিন্ন মাত্রা। এর সাথে
আর একটি নতুন পালক যোগ হয়েছে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের
জাতিসংঘের চুড়ান্ত সুপারিশ।
মাথাপিছু আয়, মানবসম্পদ, জলবায়ু ও
অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতা যোগ্যতা নির্ধারণের তিনটি সূচকের ২০১৮ ও ২০২১ সালের
মূল্যায়নে মান অর্জন করায় এলডিসি থেকে উত্তরণের সুপারিশ পায় বাংলাদেশ।
জাতিসংঘের কমিটি ফর ডেভেলপমেন্ট পলিসি (সিডিপি) সম্প্রতি এ সুপারিশ করেছে।
বাংলাদেশের
এলডিসি উত্তরণের সুপারিশ করার এই ঘটনাকে বাংলাদেশের জন্য বড় অর্জন হিসেবে
আখ্যা দেওয়া হয়েছে প্রভাবশালী মার্কিন পত্রিকা ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের এক
প্রতিবেদনে। বলা হয়েছে, দণি কোরিয়া, চীন ও ভিয়েতনামের উন্নয়নের বিভিন্ন
পর্যায়ের সঙ্গে বাংলাদেশের মিল আছে। ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের প্রতিবেদনে,
দণি কোরিয়া, চীন ও ভিয়েতনামের উন্নয়নের বিভিন্ন পর্যায়ের সঙ্গে বাংলাদেশের
যে তুলনা দেওয়া হয়েছে, তার কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, এই দেশগুলোও
রপ্তানিভিত্তিক উন্নয়নের পথে হেঁটে আজ এত দূর গিয়েছে। আধুনিক ইতিহাসে দেখা
গেছে, রপ্তানিমুখী উন্নয়নের বদৌলতে অতি নি¤œ আয়ের দেশও মধ্য আয়ের দেশে
উন্নীত হতে পারে। বাংলাদেশকে দণি এশিয়ার সফল অর্থনীতি হিসেবেও আখ্যা দেওয়া
হয়েছে প্রতিবেদনে।
স্বাধীনতার পর বাংলাদেশকে ‘তলাবিহীন ঝুড়ির’ দেশ আখ্যা
দেয়া হয়েছিল। স্বাধীনতার ৫০ বছরে এসে দারিদ্র্য আর দুর্যোগের বাংলাদেশ
এখন উন্নয়নশীল দেশের কাতারে উত্তরণের পথে। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, স্বাস্থ্য,
শিা, নারীর মতায়ন, মাথাপিছু আয় বৃদ্ধিসহ আর্থসামাজিক প্রতিটি সূচকে
এগিয়েছে বাংলাদেশ। এ প্রাপ্তি নিয়েই এবার জাতি স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী
উদযাপন করবে।
দুঃখজনক হলেও সত্য, স্বাধীনতাবিরোধীদের ষড়যন্ত্র কখনই থেমে
থাকেনি। ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে
সপরিবারে হত্যার পর দেশ চলে যায় স্বাধীনতাবিরোধীদের কবজায়। একাত্তরের
ঘাতকরা ফিরে আসে রাষ্ট্রমতায়। দেশকে আবার পাকিস্তানি ভাবধারায় ফিরিয়ে
নেওয়ার এবং ইতিহাস বিকৃতির চেষ্টা চলতে থাকে। এবারও তারা সফল হতে পারেনি।
তাই একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধকারীদের বিচার হচ্ছে। সব ষড়যন্ত্রের জাল
ছিন্ন করে দেশ ক্রমে এগিয়ে চলেছে অর্থনৈতিক মুক্তির পথে। ২০১৫ সালে আমরা
নি¤œ মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০১৮ সালে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা অর্জন করেছি।
স্বাধীনতাবিরোধীদের ষড়যন্ত্র না থাকলে হয়তো আরো অনেক আগেই দেশ এই অবস্থানে
পৌঁছে যেত।