Published : Thursday, 8 April, 2021 at 12:00 AM, Update: 08.04.2021 1:27:07 AM
শাহীন আলম, দেবিদ্বার ।।
কুমিল্লার
দেবিদ্বারে একটি বেসরকারি হাসপাতালে সিজারিয়ান অপারেশনের প্রায় পাঁচ মাস
পর এক নারীর পেট থেকে বের করা হয় রক্ত মোছার গজ ব্যান্ডেজ। দীর্ঘ সময় গজটি
ওই নারীর পেটে থাকায় তাতে পচন ধরে তাঁর জীবন সংকটাপন্ন বলে জানান
চিকিৎসকরা। মঙ্গলবার (৬ এপ্রিল) রাতে আরেকটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে
অস্ত্রোপচারের পর তার পেট থেকে গজ ব্যান্ডেজ বের করা হয়। এ ঘটনায় সামাজিক
যোগাযোগ মাধ্যমে তোলপাড় চলছে। পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ৫
নভেম্বর জেলার দেবিদ্বার উপজেলা সদরের আল ইসলাম হাসপাতাল অ্যান্ড
ডায়াগনস্টিক সেন্টারে শারমিন আক্তারের সিজার হয়েছিল। তার সিজার করান
হাসপাতালের খ-কালীন চিকিৎসক এবং দেবিদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের
মেডিকেল অফিসার ও গাইনি বিশেষজ্ঞ ডা. রোজিনা আক্তার। গত ৯ নভেম্বর তাকে
হাসপাতাল থেকে রিলিজ দেয়া হয়।
ভুক্তভোগী ওই প্রসূতি শারমিন আক্তার (২৫)
মুরাদনগর উপজেলার মোগসাইর গ্রামের মো. রাসেল মিয়ার স্ত্রী। শারমিনের আগেও
তিন বছরের একটি মেয়ে সন্তান রয়েছে। এটি তার দ্বিতীয় সিজার। ভুক্তভোগী
শারমিনের বড় ভাই রহুল আমিন জানান, পাঁচ মাস আগে প্রসব যন্ত্রণা নিয়ে
দেবিদ্বারের আল ইসলাম হাসপাতালে এন্ড ডায়গনিষ্টিক সেন্টারে ভর্তি করা হয়।
সেখানকার কর্তব্যরত খন্ডকালীন চিকিৎসক রোজিনা আক্তার তাকে দেখে জরুরী সিজার
করতে পরামর্শ দেন। ডাক্তারের কথা শুনে সিজারে রাজী হলে ওইদিনই ও ডাক্তার
রোজিনা আক্তার ও ডা. শামীমা আক্তার লিন্টা সিজার করেন। এতে একটি ছেলে
সন্তান হয় । এর দুইদিন পর থেকে শারমিনের পেটে ব্যাথা হতে থাকলে হাসপাতাল
থেকে কিছু ওষধ দেয়া হয়। ৪দিন পর হাসপাতালে থেকে বাড়ি ফেরার পর অপারেশনের ত
থেকে পুঁজ বের হতে থাকে। পরে তাকে কুমিল্লাসহ ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে নিয়ে
গেলে চিকিৎসকরা ক্ষত শুকানোর জন্য এন্টিবায়টিক খেতে দেন। ভুক্তভোগী
শারমিনের স্বামী মো. রাসেল মিয়া জানান, আমার স্ত্রীর অবস্থা খারাপ দেখে
কুমিল্লা ময়নামতি ক্যান্টমেন্ট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডা.কর্ণেল আবু
দাউদ মো. শরীফুল ইসলাম নেতৃত্বে একদল চিকিৎসক অপারেশন করে রক্তাক্ত গজ
ব্যান্ডেজ বের করা হয়।
অভিযুক্ত গাইনি চিকিৎসক ডা. রোজিনার সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
আল
ইসলাম হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নিয়াজ মোহাম্মদ হোসেন (এনাম) বলেন,
ঘটনাটি পাঁচ মাস আগের। এরপর রোগীর স্বজনরা আমাদের সাথে আর যোগাযোগ করেনি।
পরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জানতে বিষয়টি পারি, এ ব্যাপারে আমরা অনুতপ্ত।
ময়নামতি ক্যান্টমেন্ট জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. কর্ণেল আবু দাউদ মো.
শরীফুল ইসলাম বলেন, মঙ্গলবার রাতে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে পেট থেকে
রক্তাক্ত গজ বের করা হয়। বর্তমানে রোগী সংকটাপন্ন রয়েছে। ৪/৫দিন গেলে
অবস্থা বুঝা যাবে। এ কুমিল্লা সিভিল সার্জন ডা. মীর মোবারক হোসাইন বলেন,
সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক ও কোন হাসপাতালে ঘটনাটি ঘটেছে তা উল্লেখ করে স্বজনদের
একটি লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা
নেয়া হবে।