রমজান
আসছে। নিত্যপণ্যের বাজারে প্রতিবছরের চেনা ছবি আবার নতুন করে দেখা যাচ্ছে।
রোজার মাসে নিত্যপণ্যের দাম বাড়তে থাকে। অনেক সময় ভোক্তার ক্রয়সীমার বাইরে
চলে যায়। এ বছরও এর ব্যতিক্রম হচ্ছে না। রোজার এক সপ্তাহ আগেই আঁচ লেগেছে
বাজারে। কালের কণ্ঠে প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, চাল ডাল তেল মুড়ির দাম বেড়ে
গেছে। টিসিবির হিসাবে রাজধানীর বাজারগুলোতে গত সপ্তাহের এই সময় যে চাল ৪৫
থেকে ৪৭ টাকা ছিল এখন তা বিক্রি হয়েছে ৪৬ থেকে ৫২ টাকায়। চিকন চালের দাম
বেড়েছে এক থেকে দুই টাকা। মাঝারি মানের চালের দাম বেড়েছে দুই থেকে চার
টাকা। ২০ টাকার আলু এখন ২৫ টাকায়ও বিক্রি হচ্ছে। পেঁয়াজের দাম কেজিতে পাঁচ
টাকা বেড়ে এখন ৪০ থেকে ৪৫ টাকায় উঠেছে। গত সপ্তাহের এ সময় ১১৯ থেকে ১২৫
টাকায় বিক্রি হওয়া খোলা সয়াবিন তেলের লিটার এখন ১২১ থেকে ১২৫ টাকা। রোজা
সামনে রেখে অন্যতম চাহিদার পণ্য মুড়ির দাম কেজিতে পাঁচ থেকে ১০ টাকা বেড়ে
এখন প্রতি কেজির দাম ৭০-৭৫ টাকা।
রোজার মাসে দ্রব্যমূল্য সহনীয় রাখতে
পারাটা সরকারের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। সেই চ্যালেঞ্জটা এবার আরো বড় হয়ে
দেখা দিয়েছে। করোনাকালে সরকারের কঠোর বিধি-নিষেধের কারণে বাজারে ক্রেতা
সমাগম বেড়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, ক্রেতার এই চাপের সুযোগ নিয়ে সরবরাহ সংকট
দেখিয়ে কিছু পণ্যের দাম বাড়িয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
শবেবরাত ও রোজা এলে
বাজারে ভোগ্য পণ্যের চাহিদা বাড়ে, এটা আমাদের চেনা চিত্র। যদিও এই সময়ে
চাহিদার সঙ্গে সরবরাহ শিকলে কোনো বিঘœ ঘটে না। অর্থনীতির সূত্র অনুযায়ী,
চাহিদার অনুপাতে সরবরাহ কম হলে তখন জিনিসপত্রের দাম বাড়ে। কিন্তু অর্থনীতির
এই সরল সূত্র বাংলাদেশের বাজারে অচল। এখানে সরবরাহ ঠিক থাকলেও হঠাৎ করে
চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় জিনিসপত্রের দাম বাড়তে থাকে। প্রতিবছর রোজা সামনে রেখে
নিত্যপণ্যের দাম বাড়ানো হয়। দাম বাড়ানোর যত রকম কারসাজি আছে, তা এ মাসে করা
হয়। এবারও তেমনটি ঘটতে যাচ্ছে বলে ধরে নেওয়া যেতে পারে।
কাজেই সরকারকে
এখন থেকেই বাজার নিয়ন্ত্রণে ব্যবস্থা নিতে হবে। বাজার মনিটরিংয়ের মাধ্যমে
শুরু থেকে লাগাম টানতে না পারলে বাজার নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না। যথেষ্ট মজুদ
থাকার পরও দাম বেড়ে যাওয়া অস্বাভাবিক। একই সঙ্গে টিসিবির আওতা বাড়াতে হবে।
মানুষের কাছে ন্যায্য মূল্যের পণ্য পৌঁছে দিলে কিছুুটা হলেও নিয়ন্ত্রণে
রাখা সম্ভব হবে। রোজায় নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির বিরুদ্ধে সরকারকে এখনই
কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।