Published : Friday, 9 April, 2021 at 12:00 AM, Update: 09.04.2021 12:47:37 AM
মাসুদ আলম।।
দ্বিতীয়
ঢেউয়ে করোনার সংক্রামণ রোধে ঘোষিত এক সপ্তাহের লকডাউনের মধ্যে শপিং মল ও
দোকানপাট খুলে দেওয়ায় কুমিল্লায় ব্যবসায়ীরা আনন্দ ও উচ্ছাস প্রকাশ করেছেন।
শুক্রবার ৯ এপ্রিল থেকে ১৩ এপ্রিল সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত
দোকানপাট ও শপিংমল খোলার সিদ্ধান্ত দেয়। বৃহস্পতিবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের
মাঠ প্রশাসন সমন্বয় অধিশাখা থেকে এই সিদ্ধান্ত জানানোর পর কুমিল্লায়
ব্যবসায়ীরা উচ্ছ্বসিত। সরকারের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে সামাজিক
দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে পণ্য বেঁচা বিক্রির অঙ্গিকার করেন ব্যবসায়ীরা।
এর
আগে করোনা সংক্রামণ রোধে গত সোমবার (৫ এপ্রিল) থেকে এক সপ্তাহের লকডাউনের
ঘোষণা দেয় সরকার। এই ঘোষণার আওতায় ছিলো গণপরিবহন, দূরপাল্লার বাস,
স্কুল-কলেজ ও মাদ্রাসাসহ সকল ধরণের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। কিন্তু ঘোষণার
প্রথমদিন থেকেই ঘোষিত লকডাউন ঢিলেঢালা ভাবে চলতে দেখা যায়। সেই সুযোগকে
কাজে লাগিয়ে ব্যবসায়ীরা লকডাউনের মধ্যেই স্বাস্থ্যবিধি মেনে শপিং মল ও
দোকানপাট খোলার দাবি তুলে ঢাকায় বিক্ষোভ শুরু করে। এরপর মঙ্গলবার (৬
এপ্রিল) কুমিল্লাসহ সারাদেশের ব্যবসায়ীরা লকডাউনেই দোকান খোলার দাবিতে
অবস্থান কমসূচী ও বিক্ষোভ মিছিল করে।
স্বাস্থ্যবিধি মেনে দোকানপাট
খোলার সিদ্ধান্তে ব্যবসায়ী নেতারা জানান, নির্ধারিত সময়ে স্বাস্থ্যবিধি
মেনে শপিং মল ও দোকানপাট খোলার নির্দেশনা আসায় ব্যবসায়ীদের মধ্যে
প্রাণচাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে। গত বছর করোনাকালিন সময়ে লকডাউনের কারণে প্রায়
আড়াই থেকে ৩ মাস দোকানপাট বন্ধ থাকায় তাদের ব্যবসায়ীরা ব্যবসা করতে
পারেননি। গেল পয়লা বৈশাখেও দোকানপাট বন্ধ ছিলো। সরকারি সাধারণ ছুটির কারণে
ওই বছর ঈদুল ফিতরেরও ব্যবসা করতে পারেননি। তখনকার লোকাসান এখনও টানছেন অনেক
ব্যবসায়ী। এবার আবার সামনে পয়লা বৈশাখ একই সাথে রমজান। মানুষ ঈদ-উল ফিতরের
কেনাকাটা করবেন। করোনা সংক্রামণ বেড়ে যাওয়া সরকার আবারও একই সময় এসে
লকডাউন ঘোষণা করেছেন।
কুমিল্লার কান্দিরপাড় এলাকার একটি বিপণিবিতানের
কাপড়ের ব্যবসায়ী জানান, গত বছর পয়লা বৈশাখ ও ঈদ-উল ফিতরসহ প্রায় আড়াই-তিন
মাসে দোকান বন্ধ থাকায় আয়হীন অবস্থায় ছিলাম। ওই সময় জমানো টাকা শেষ হয়ে
গেছে। ব্যবসায় অনেক লোকাসানের মুখোমুখি হয়েছি। করোনার প্রভাব কমিয়ে আসলে
দোকানপাট খুলে দেওয়ায় কিছুটা লোকাসান কাটিয়ে উঠেছি। এখন আবার সারাদেশে
করোনার সংক্রামণ বাড়ছে। সরকার এক সপ্তাহের জন্য আবারও লকডাউনের ঘোষণা
দিয়েছেন। কিন্তু আমরাতো মরে যাবো। সামনে পয়লা বৈশাখ এবং রমজান মাস। এই
সময়টায় বিক্রি করতে না পারলে ব্যবসায় বিশাল ক্ষতিগ্রস্তের মুখোমুখি হবে।
যাক একটু স্বস্তি লাগছে শুক্রবার থেকে আবারও দোকানপাট খোলার সিদ্ধান্ত
নিয়েছে সরকার। সরকারকে আমরা ধন্যবাদ জানাই।
কুমিল্লা চৌরঙ্গী শপিং
সেন্টারের কাপড় ব্যবসায়ী আবদুল আউয়াল দোকানপাট খুলে দেওয়ার সংবাদে সরকারকে
ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, করোনাকালিন সময়ে স্বাভাবিক ব্যবসাও করতে পারিনি। পয়লা
বৈশাখ এবং ঈদ সামনে রেখে আবারও লকডাউন পড়েছে গত বছরের মতো। ব্যবসা নিয়ে
খুব শঙ্কায় পড়েছি। স্বাস্থ্যবিধি মেনে দোকানপাট খোলার নির্দেশ দেওয়ায় আমরা
আনন্দিত।
কুমিল্লার দোকান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আতিক উল্লাহ
খোকন বলেন, দাবি অনুসারে সরকারের সিদ্ধান্তকে আমরা স্বাগত জানাই। আমরা সকল
ব্যবসায়ী নেতাদের নিয়ে বসেছি। এই বৈঠকে সদর উপজেলার সংসদ সদস্য
বীরমুক্তিযোদ্ধা আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহারের নেতৃত্বে সকল মার্কেট ও শপিং
মলের নেতা উপস্থিত ছিলেন। দোকানপাট খুলে দেওয়ায় আমাদের ব্যবসায়ীরা আনন্দিত।
তারা সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি মেনেই বেচাকেনা করবেন।
তিনি
বলেন, ব্যাংকে টাকা নেই। ব্যবসায়ীরা পয়লা বৈশাখ ও ঈদ-উল ফিরতকে ঘিরে
মালামাল কিনে স্টক করেছেন। দোকান বন্ধ থাকলে ব্যবসায়ীদের এই মালামাল
দোকানেই পড়ে থাকবে।