ই-পেপার ভিডিও ছবি বিজ্ঞাপন কুমিল্লার ইতিহাস ও ঐতিহ্য যোগাযোগ কুমিল্লার কাগজ পরিবার
আজ বাংলা নববর্ষ অগ্নিস্নানে শুচি হোক ধরা
Published : Wednesday, 14 April, 2021 at 12:00 AM, Update: 13.04.2021 11:56:22 PM
আজ বাংলা নববর্ষ অগ্নিস্নানে শুচি হোক ধরা‘মুছে যাক গ্লানি, ঘুচে যাক জরা/অগ্নিস্নানে শুচি হোক ধরা।’ বৈশাখকে এভাবে ধরাতলে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। বছরের আবর্জনা ধুয়ে, দুঃখ-হতাশা-গ্লানিময় অতীতকে মুছে নতুনের আবাহনে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয়ে এসেছে ১৪২৮ বঙ্গাব্দ। আজ বুধবার পহেলা বৈশাখ। একটি নতুন ভোরের সুচনার সঙ্গে শুরু হয়েছে নতুন বছর।
বারো মাসে তেরো পার্বণ উদ্যাপন করা বাংলায় বৈশাখ আসে উৎসবের রং ছড়িয়ে। পহেলা বৈশাখে জাতি-ধর্ম-বয়স, ধনী-দরিদ্র-নির্বিশেষে সব মানুষ মেতে ওঠে বর্ষবরণের সর্বজনীন উৎসবে। কিন্তু এবার নতুনকে আবাহনের কোনো আনুষ্ঠানিক আয়োজন নেই, নেই উৎসবের উত্তাপ। বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে সংকটের আবর্তে বিশ্বমানব। লকডাউন চলছে দেশে। মানুষকে ঘরে থাকার নির্দেশ জারি হয়েছে সর্বত্র। বাতিল হয়েছে সব ধরনের অনুষ্ঠান, জনসমাগম। বদেশে তাই এবার বর্ষবরণের কোনো আয়োজন নেই।
বাংলা বর্ষবরণ উদ্যাপন বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় অসাম্প্রদায়িক উৎসব। এটি এই ভূখ-ের সব মানুষের প্রাণের উৎসব। এ উৎসবের প্রধান বৈশিষ্ট্য এর সর্বজনীনতা।
বাংলা নববর্ষের সঙ্গে নিবিড় সম্পর্ক কৃষির। ইতিহাস থেকে জানা যায়, এ সম্পর্কের সূত্রেই বাংলা সাল প্রবর্তন করেন মোগল সম্রাট আকবর। গত শতকের ষাটের দশকে ঢাকার রমনা বটমূলে ছায়ানট সূচনা করে বাংলা বর্ষবরণ উৎসব। এই উৎসব বাঙালির আত্মপরিচয় প্রতিষ্ঠার আন্দোলন-সংগ্রামকে বেগবান করে।
লেখক-চিন্তাবিদ অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরীর ভাষায়, ‘পহেলা বৈশাখ আমাদের প্রাকৃতিক ও সামাজিক অর্থনীতির ইতিহাসের একটি অংশ। কারণ এতে একই সঙ্গে প্রকৃতি ও অর্থনৈতিক কর্মকা- জড়িয়ে আছে। নতুন বছরের আগমন উপলে চাষিদের খাজনা পরিশোধ করতে হতো। তাই চাষিকুলের জন্য এটি আনন্দের কোনো বিষয় ছিল না। তবে হ্যাঁ, মধ্যবিত্ত শ্রেণি একে উৎসবে পরিণত করেছে। এটা ব্যবসায়ী ও ভূমির মালিক জমিদারদের জন্য লাভজনক ছিল। এ সময় জমিদাররা খাজনা পেতেন, ব্যবসায়ীরা হালখাতা খুলে তাঁদের বকেয়া আদায় করতেন। তাঁরা আগের সব পাওনা বুঝে নিয়ে নতুনভাবে সব কিছু শুরু করতেন। তবে পহেলা বৈশাখ একটি সেক্যুলার উৎসব—এটা ঠিক।’
বাংলা নববর্ষের আরেকটি বৈশিষ্ট্য হলো, এই উৎসব শুরু হয় সূর্যোদয়ের সঙ্গে। পাশ্চাত্যের থার্টিফার্স্ট নাইটের মধ্যরাতের উন্মাদনা এর সঙ্গে নেই। খ্রিস্টাব্দের তারিখ গণনা শুরু হয় রাত ১২টার পর।