ই-পেপার ভিডিও ছবি বিজ্ঞাপন কুমিল্লার ইতিহাস ও ঐতিহ্য যোগাযোগ কুমিল্লার কাগজ পরিবার
জনমানবহীন পহেলা বৈশাখ!
Published : Friday, 16 April, 2021 at 12:00 AM, Update: 16.04.2021 1:13:01 AM
জনমানবহীন পহেলা বৈশাখ!তানভীর দিপু:
কোথাও কেউ নেই। চারদিকের শূন্যতা শুধুই মনে করিয়ে দেয়- ভয়ে আসেনি কেউ। পহেলা বৈশাখে নববর্ষ উদযাপনে যে জামতলায় মানুষের ভিড়ে পা রাখা দায় ছিলো, সেখানে যেন জনমানবহীন বিরান ভূমি। ১৪ এপ্রিল বুধবার পহেলা বৈশাখের দিনে কুমিল্লার পৌর উদ্যানে গিয়ে দেখা যায় ভেতরে প্রবেশের সব গেইট তালাবদ্ধ। জামতলায় পড়ে আছে শুধু রোদ ছায়া আর ঝরাপাতা। পৌর উদ্যানের পাশে ধর্মসাগর পাড়েও মানুষের কোন শব্দ নেই, অথচ কুমিল্লায় নববর্ষ উদযাপনের প্রাণ কেন্দ্র ধর্মসাগর পাড়ে মানুষের ভিড় সামলাতে প্রয়োজন হতো পুলিশের। মেলায় যাইরে- বাসন্তী রঙ শাড়ি পরে ললনারা হেঁটে যায়- যে গানের সুরে টাউন হলের মাঠের মেলায় ভিড় করতো হাজার হাজার মানুষ, সে মাঠও বৈশাখের প্রথম দিনে খা খা করছে। করোনা মহামারি কেড়ে নিয়েছে বাঙালির অন্যতম উৎসব পহেলা বৈশাখের সব আনন্দ উচ্ছাস। কুমিল্লাতে কোথাও হয়নি কোন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, মেলা কিংবা শোভাযাত্রা। বৈশাখের প্রথমদিনের ভোরে মঙ্গল শোভাযাত্রায় অংশ নিতে যেখানে সব বয়সের মানুষের রঙিণ প্রস্তুতিতে মুখর থাকতো কুমিল্লার প্রধান প্রধান সড়কগুলো, সেখানে এবার বসানো হয়েছে মানুষের চলাচল আটকে দেয়ার চেকপোস্ট। করোনার সংক্রমণ রোধে যে কারোই ঘরের বাইরে বেরুনো নিষেধ। এমন অনাড়ম্বর পহেলা বৈশাখ আসেনি কুমিল্লাবাসীর জীবনে।
১৪২৮ বঙ্গাব্দের প্রথম দিনেও করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সারাদেশে সর্বাত্মক লকডাউন পালিত হচ্ছে। গতবছরও পহেলা বৈশাখে করোনার সংক্রমণের ভয় নিয়েই পালিত হয় পহেলা বৈশাখ। গত বছরের তুলনায় এবছর ফেসবুকেও নববর্ষের শুভেচ্ছা বিনিময়ের চেয়ে বেশি ছিলো করোনায় আক্রান্তের খবর আর অক্সিজেন চেয়ে পোস্ট; অথবা করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর খবর। অনেকের ফেসবুকের দেয়ালেই দেখা গেছে বিগত বছরের নববর্ষ উদযাপনের স্মৃতিকাতর ছবি এবং স্ট্যাটাস।
পহেলা বৈশাখ উপলক্ষ্যে কুমিল্লা জেলা শিল্পকলা একাডেমীর আয়োজনে অনলাইনে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। জেলা কালচারাল অফিসার আয়াজ মাবুদের সঞ্চালনায় আলোচনায় অংশ নেন কুমিল্লা সদর আসনে সংসদ সদস্য আলহাজ্ব আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার, জেলাপ্রশাসক মোঃ কামরুল হাসানসহ জেলার নবীণ ও প্রবীণ সাংস্কৃতিক ব্যাক্তিত্বরা। আলোচনায় সবাই প্রত্যাশা করেন, আগামী পহেলা বৈশাখের আগেই পৃথিবী হবে মহামারি মুক্ত। আবারো মানুষ নববর্ষের উৎসবে অংশ নেবে ভয়-ভীতিহীন ভাবে।