ই-পেপার ভিডিও ছবি বিজ্ঞাপন কুমিল্লার ইতিহাস ও ঐতিহ্য যোগাযোগ কুমিল্লার কাগজ পরিবার
লকডাউন নিয়ে উদাসীন নগরবাসী!
অধিকাংশ মানুষই লকডাউন মানছে: জেলাপ্রশাসক
Published : Friday, 16 April, 2021 at 12:00 AM, Update: 16.04.2021 12:59:04 AM
লকডাউন নিয়ে উদাসীন নগরবাসী! তানভীর দিপু:
কুমিল্লা জেলায় করোনা আক্রান্ত শনাক্তের ৬০ শতাংশই সিটি কর্পোরেশনের, বাকি ৪০ শতাংশ জেলার বিভিন্ন উপজেলায়। গত কয়েকদিনে কুমিল্লা সিটিতে আশংকাজনকহারে করোনা আক্রান্ত শনাক্ত হলেও তাই চলমান লকডাউনে দেখা গেছে অসচেতনদের লকডাউন না মানার প্রবনতা। রেডজোনে থাকলেও কুমিল্লা সিটির অনেক বাসিন্দাই সকাল বিকাল যাচ্ছেন বাজারে। কেউ কেউ অযথাই আড্ডা তৈরী করছেন বাড়ির সামনে; অথবা রিকশায় চড়ে ঘুরে দেখে আসছেন- লকডাউনে শহর দেখতে কেমন। এরই মধ্যে সর্বাত্মক লকডাউনের প্রথমদিনে আইন অমান্য করেই রাজগঞ্জ এলাকায় বসেছে- পহেলা বৈশাখের মাছ বাজার। করোনার স্বাস্থ্যবিধিকে তোয়াক্কা না করে উৎসবের আমেজে ভিড় করে সাছ কিনেছেন কিছু অসচেতন নগরবাসী। এসব অসচেতনদের লকডাউন মানাতে কুমিল্লা সিটিতে জোরালো তৎপরতা চালাচ্ছে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ।
সর্বাত্মক লকডাউনের প্রথম দিনে রাজগঞ্জ মাছ বাজার এলাকায় গিয়ে কথা হয় মুরাদপুর এলাকার রুহুল আমিনের সাথে। বাজার বসেছে খবর শুনে তিনি এসেছেন নববর্ষের মাছ কিনতে। রুহুল আমিন জানান, জানি করোনা ভাইরাস আছে। তারপরও নববর্ষের দিনে বড় মাছ কেনা বছরের পর বছরের ঐতিহ্য, তাই চলে আসছি।
একই প্রতিক্রিয়া সুজানগরের দেলোয়ার হোসেনের। তিনি জানান, অনেককেই পুলিশ-ম্যাজিষ্ট্রেট আটকাচ্ছে। কিন্তু মানুষ যদি সচেতন না হয় প্রশাসন কি করবে। তবে যেখানে প্রশাসন কঠোর, সেখানে অনেকইে মানছে লকডাউন।   
এদিকে কুমিল্লায় সর্বাত্মক লকডাউন মানাতে সর্বাত্মক লকডাউনের প্রথম দিন থেকেই প্রশাসনের নিরবিচ্ছিন্ন তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। জেলাপ্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ও পুলিশের যৌথ উদ্যোগে কুমিল্লা নগরীতে লকডাউন পালনে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন উপজেলাতেও রয়েছে ভ্রাম্যমান আদালতের পর্যবেক্ষণ। যে কোন মূল্যে কুমিল্লায় করোনা সংক্রমণ কমিয়ে আনা হবে জানিয়ে জেলা প্রশাসক মোঃ কামরুল হাসান বলেন, সর্বাত্মক লকডাউনে জেলা পুলিশকে সাথে নিয়ে কুমিল্লা নগরীর ২১টি পয়েন্টে চেক পোস্ট বসিয়ে নগরীতে মানুষের আসা যাওয়া পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। ৬ জন ম্যাজিষ্ট্রেটের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমান আদালত নগরীতে সার্বক্ষনিক কাজ করছে। যে পরিমান মানুষ নগরীতে নিজ থেকে লকডাউন মানছে তা সন্তোষজনক।
জেলা প্রশাসক আরো জানান, জেলার সংক্রমণের ৬০ শতাংশই কুমিল্লা নগরীতে। তাই নগরীতে লকডাউন পালনে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। তবে উপজেলা পর্যায়েও ভ্রাম্যমান আদালত নিয়ে নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেটগণ তৎপর আছেন। আগামীকাল থেকে প্রশাসন আরো তৎপর থাকবে।  
পুলিশ সুপার মোঃ ফারুক আহমেদ জানান, নগরীতে জনসাধারণের চলাচল পর্যবেক্ষণে ২১টি পয়েন্টে পুলিশের চেকপোষ্ট আছে। পুরো লকডাউনের ৭ দিনই এই তৎপরতা চলবে। সবচেয়ে বড় কথা হলো সাধারণ মানুষকে সচেতন হয়ে ঘরে থাকতে হবে।
এদিকে কুমিল্লাবাসীকে লকডাউনে সচেতন করতে বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শনে বের হন কুমিল্লা সদর আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার, জেলা প্রশাসক মোঃ কামরুল হাসান ও পুলিশ সুপার ফারুক আহমেদ। তারা শহর এবং শহরতলীর এলাকাগুলোতে আকস্মিক পর্যবেক্ষনে গিয়ে সাধারণ মানুষকে লকডাউন মানাতে পরামর্শ দেন। কোথাও কোথাও তাদের নেতৃত্বে দোকানপাট ও যান চলাচল বন্ধ করা হয়।
জেলা প্রশাসক মোঃ কামরুল হাসান নগরীর সবচেয়ে জনাকীর্ণ রাজগঞ্জ বাজার পরিদর্শনে গিয়ে বন্ধ করে দেন বেশ কয়েকটি খাবারের দোকান ও খাবারের দোকান। এছাড়া রাজগঞজ বাজারে রাস্তার উপর যে কাঁচাবাজার বসেছে সেখানে প্রতিটি দোকানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ক্রেতা ও বিক্রেতাদের মাস্ক ব্যবহারে নির্দেশনা দেন।
অন্যদিকে নগরীর বাদুরতলা, ঝাউতলা, পুলিশ লাইন্স এলাকায় পরিদর্শনে বের হন সংসদ সদস্য আলহাজ্ব আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার। তিনি এসময় বাদুরতলা এলাকায় চলাচলকারী বিভিন্ন পরিবহন থামিয়ে চলাচলের কারণ জিজ্ঞাসাবাদ করেন এবং খোলা দোকানপাট বন্ধ করার নির্দেশনা দেন।