মাসুদ আলম।।করোনাভাইরাসের
সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ে কুমিল্লায় মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। গত ২৪
ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে আরও ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর আগের দিন মঙ্গলবার
মারা গেছেন ৪জন। সেই সাথে চলতি এপ্রিল মাসের ২১ দিনে কুমিল্লায় করোনায় ৬৫
জন মারা গেছেন। পরিসংখ্যানে দেখা যায় কুমিল্লায় দিনে গড়ে ৩ জনের বেশি মানুষ
করোনায় মারা যাচ্ছেন। সেই সাথে আক্রান্তের হারও দিন দিন উচ্চ হারে বাড়ছে।
নতুন রোগি বাড়তে থাকায় সামনে মৃত্যুও বেড়ে যাবে এমন আশঙ্কার কথা বলছেন
স্বাস্থ্যবিদেরা। তাঁরা বলছেন, গত এপ্রিল মাসের শুরু থেকে কুমিল্লায় যে
পরিমাণ নতুন রোগি শনাক্ত হচ্ছে তাতে সামনের সপ্তাহে মৃত্যু আরও বেড়ে যাওয়ার
শঙ্কা আছে।
এদিকে, এপ্রিলের গত ২১ দিনে কুমিল্লায় ১৫শ এর বেশি রোগি শনাক্ত হয়েছে। নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে রোগি শনাক্তের হার কমছে না।
শনাক্তের হার বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, কুমিল্লায় প্রতিদিন গড়ে শনাক্তের হার ২০ শতাংশের উপরে।
কুমিল্লা
সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা যায়, বুধবার একদিনে কুমিল্লায় করোনায় ৩ জন
মারা গেছেন। তাদের মধ্যে সবাই পুরুষ। এর আগের দিন মারা গেছেন ৪ জন। এনিয়ে
জেলায় এ পর্যন্ত ৩৫৩ জনের মৃত্যু হয়েছে।
বুধবার যে তিনজন মারা গেছেন
তাদের মধ্যে সবাই পুরুষ। তাদের মধ্যে কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন এলাকা দুই
পুরুষ (৭৬), (৭০) এবং দেবিদ্বারে এক পুরুষ (৪৬)।
এছাড়া ২৪ ঘন্টায় জেলায়
নতুন করে ৭১ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। জেলায় এই পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন
১১ হাজার ৫১১ জন। এদের মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ৯ হাজার ২৪২ জন।
কুমিল্লা
জেলা সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে আরও জানা যায়, বুধবার ২৪ ঘন্টায় প্রাপ্ত
৩৭৪টি রিপোর্টের মধ্যে নতুন করে কুমিল্লা ৭১ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। ১১
হাজার ৫১১ আক্রান্ত রোগির মধ্যে বুধবার ৪২ জনসহ সুস্থ হয়েছেন ৯ হাজার ২৪২।
বুধবার
করোনা শনাক্তদের মধ্যে কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন এলাকায় ৪৬ জন। এছাড়া আদর্শ
সদর, দাউদকান্দি, ব্রাহ্মণপাড়ায় একজন করে, দেবিদ্বার , বুড়িচং,
চৌদ্দগ্রামে পাঁচজন করে, লাকসাম তিনজন, বুরুড়া ও মুরাদনগরে দুইজন করে।
করোনা
সংক্রমণের শুরু থেকে কুমিল্লা মহানগরীতে করোনার সংক্রমণ ও মৃত্যু বেশি।
দ্বিতীয় দফা সংক্রমণে জেলার শহরে মৃত্যু আরও বাড়তে দেখা যাচ্ছে।
সংক্রমণ
ঠেকাতে সরকার সারাদেশে এক সপ্তাহ লকাডাউন শেষে গত ১৪ এপ্রিল থেকে আবারও
সর্বাত্মক লকডাউন ঘোষণা করা হয়। এটি বাড়িয়ে আগাম ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত এই
সর্বাত্মক লকডাউনের মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়। কিন্তু সরকারঘোষিত এই লকডাউন
ঢিলেঢালা ভাবে চলছে।
কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজের সাবেক পরিচালক ও
কুমিল্লার সাবেক সিভিল সার্জন ডা. মো. মুজিবুর রহমান বলেন, সংক্রমণের হার
কমাতে লকডাউনই এক মাত্র রাস্তা। সেই সাথে মানুষের যোগাযোগ কমাতে হবে।
মানুষকে যদি ঘরে আটকানো না যা, মাস্ক পড়ানো না যায় এই সংক্রমণ কোন ক্রমেই
কমানো যাবে না।
তিনি আরও বলেন, চলমান সরকার ঘোষিত সর্বাত্মক লকডাউনের কিছুটা সুফল আসবে। আশাকরি এই সুফল আসবে ১৪ দিন পর।
কুমিল্লার
সিভিল সাজর্ন ডা. মীর মোবারক হোসাইন বলেন, কুমিল্লায় আক্রান্ত ও মৃত্যু
বাড়ছে। লকডাউনও চলছে। আমরা আশা করছি সপ্তাহ/১০ দিন দিন আমরা লকডাউনের সুফল
পাবো। আক্রান্ত ও মৃত্যু কমে আসবে।