মহামারি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সরকারের সমালোচনা করে দেয়া টুইট সরিয়ে ফেলতে টুইটারকে নির্দেশ দিয়েছে ভারত সরকার। এই নির্দেশে সারা ভারত জুড়ে হাজার হাজার মানুষ ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। খবর বিবিসির।
টুইটারের এক মুখপাত্র নিশ্চিত করেছেন, তারা এমন কিছু পোস্ট ব্লক করে দিয়েছেন যেগুলো ভারত থেকে দেখা যায়।
এই নির্দেশ এমন এক সময়ে এলো যখন ভারতে সংক্রমণ ব্যাপকমাত্রায় বৃদ্ধি পেয়েছে এবং হাসপাতালগুলোতে অক্সিজেনের তীব্র সংকট চলছে।
একজন টুইটার ব্যবহারকারী সরকারের সমালোচনা করে লিখেছেন, ‘অক্সিজেন সরবরাহ নিশ্চিত করার চেয়ে টুইট সরিয়ে দেয়া সহজ।’
লুমেন নামক ডেটাবেজে টুইটার জানিয়েছে, ভারত সরকার টুইট ‘সেন্সর’ করতে এক জরুরি নির্দেশনা দিয়েছে। সারা বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সরকার টুইটারকে যেসব নির্দেশ দেয় তা নিয়মিত জানানো হয় এই ডেটাবেজে।
টুইটার নির্দিষ্ট করে জানায়নি ঠিক কোন পোস্ট তারা সরিয়ে দিয়েছে। তবে গণমাধ্যমগুলো জানাচ্ছে, এগুলোর মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের এক রাজনীতিকের টুইটও রয়েছে যেখানে তিনি করোনায় মৃত্যুর জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে সরাসরি দায়ী করেছেন। এছাড়া একজন অভিনেতার টুইটও সরিয়ে দেয়া হয়েছে যেখানে তিনি সংক্রমণ বৃদ্ধির মধ্যে রাজনৈতিক মিছিল করায় মোদির সমালোচনা করেছেন।
এক বিবৃতিতে টুইটার জানায়, ‘বৈধ আইনী অনুরোধ’ পাওয়ার পর তারা কনটেন্ট যাচাই করে দেখেছে। এক্ষেত্রে ভারতের সরকার ‘তথ্য-প্রযুক্তি আইন ২০০০’ উল্লেখ করেছে বলে জানা গেছে।
টুইটার জানায়, ‘যদি এমন হয় যে এটি একটি নির্দিষ্ট আইনের আওতায় অবৈধ বলে বিবেচিত কিন্তু টুইটারের নীতিমালার পরিপন্থী নয়, সেক্ষেত্রে আমরা সেটি শুধু ভারত থেকে দেখার সুযোগ বন্ধ করে দেই।’
ভারতের এক কর্মকর্তা জানান, এসব পোস্ট বিভ্রান্তিকর হতে পারে এবং আতঙ্ক ছড়াতে পারে।
ইলেক্ট্রনিক্স ও তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা দ্য হিন্দু পত্রিকাকে বলেছেন, ‘এসব ব্যবহারকারীরা, যারা অনৈতিক উদ্দেশ্যে এই মারাত্মক মানবিক সংকটের সময় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অপব্যবহার করছেন, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া জরুরি।’
তবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকেই তাদের শব্দ মোলায়েম করছেন না মোটেই। সরকারের এই সেন্সরশিপের কড়া সমালোচনা করে টুইট করেছেন অনেকেই।
সরকারের নির্দেশ মানায় অনেকে টুইটারের সমালোচনাও করছেন। প্রতিষ্ঠানটিকে ‘অবৈধ কাজের সহযোগী’ বলে উল্লেখ করছেন তারা।
ভারতে করোনার কারণে মানষজনের অসুস্থ হয়ে পড়া, অক্সিজেন ও বেডের সংকট প্রভৃতি সংক্রান্ত পোস্টে টুইটার সয়লাব হয়ে যাচ্ছে।
ভারত সরকারের নির্দেশ মানায় এর আগেও টুইটার সমালোচিত হয়েছে। গত ফেব্রুয়ারিতে, ভারতে কৃষক আন্দোলনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এমন ৫০০টিরও বেশি অ্যাকাউন্ট টুইটার বন্ধ করে দেয়।