Published : Monday, 26 April, 2021 at 12:00 AM, Update: 26.04.2021 2:46:17 AM
তানভীর
দিপু: লকডাউনের মধ্যে সরকারি সিদ্ধান্তে দোকানপাট খুলে দেয়ার প্রথম দিনেই
লোকারণ্য ছিলো কুমিল্লা নগরী। নগরীর সড়কে মানুষের পাশাপাশি যানবাহনও বেড়ে
যায় দ্বিগুন। সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক সকাল ১০ টা থেকে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান
খোলার কথা থাকলেও রবিবার খুব সকাল থেকেই নগরীতে খুলে দোকান ও শপিং মল।
দীর্ঘদিন টানা শপিংমল এবং অন্যান্য দোকান বন্ধ থাকায় সাধারণ মানুষের নিত্য
প্রয়োজনীয় অনেক কাজই থেমে ছিলো, সরকারি নির্দেশনায় আবার সব চালু হওয়ায়
মানুষ যেন হুমড়ি খেয়ে পড়ে নিজ নিজ প্রয়োজনীয় স্থানে। সকালে মুদি ও
স্টেশনারি দোকানে ভিড় দেখা যায় বেশি। এছাড়া টেইলার্স এবং জামা-কাপড়ের
দোকানেও ক্রেতা বাড়ে বেলা বাড়ার সাথে সাথে। অন্যদিকে মোবাইল ও কম্পিউটার
এক্সিসরি ও মেকানিকের দোকানেও ছিলো ক্রেতাদের ভিড়। বিকাল ৫টা পর থেকে কোন
ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলা থাকতে পারবেনা এমন নির্দেশনাও আছে সরকারের পক্ষ
থেকে, যে কারনে বিকালেও ভিড় বাড়ে দোকানগুলোতে। তবে ইফতার সামগ্রী বেচাকেনার
সময় হওয়া ৫টার পরও দেখা যায় খোলা থাকে অন্যান্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।
কুমিল্লা
নিউ মার্কেটের কম্পিউটার ব্যবসায়ি আবদুল খালেক জনি জানান, বেশ কিছুদিন পর
দোকান খুলেছে। অনেক কাস্টমারের কম্পিউটার মেরামতের কাজ জমে ছিলো। এখন সব
কাজ এক সাথে করতে হবে।
একই মার্কেটের টেইলার্স ব্যবসায়ি সুমন জানান,
ঈদকে সামনে রেখে এখন জামা বানানোর মৌসুম শুরু হবে। মানুষ বাড়তে শুরু করবে
মাসের শুরুতে, বেতন পেলে। তবে সরকার যে সিদ্ধান্ত নিবে এর বাইরে যাবার কোন
সুযোগ নেই। করোনা থেকে বাঁচতে ক্রেতা বিক্রেতা সবাইকে ব্যক্তিগত ভাবে সচেতন
হতে হবে।
লকডাউনের মাঝে বিশেষ নির্দেশনায় দোকানপাট খুলে দেয়া হলেও
ক্রেতাদের অনেকেই মানেনি করোনা স্বাস্থ্যবিধি। মাস্ক ছাড়াই অনেকে ঘুরে
বেড়িয়েছেন বাজারে-শপিং মলে। এছাড়া স্বাস্থ্যবিধি মানার বিষয়ে শপিংমলগুলোর
পক্ষ থেকেও সচেতনতামূলক কোন ব্যবস্থা নিতে দেখা যায় না। স্বাভাবিক দিনের
মতই চলে ব্যবসায়িক কার্যক্রম। ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ায় নগরীতে মানুষের
ভিড় বাড়লেও স্বাস্থ্যবিধি মনাতে প্রাশাসনের কোন অভিযান কিংবা ভ্রাম্যমান
আদালতের অভিযান চোখে পড়ে নি।
কুমিল্লা সাত্তার খান শপিং মলের ব্যবসায়ি
সমিতির সাধারণ সম্পাদক আনোয়র ফরহাদ সুমন জানান, আমারা মার্কেটের পক্ষ থেকে
করোনা স্বাস্থ্যবিধি নিয়েবিশেষ টিম গঠন করেছি, মার্কেটের সব দোকান
পর্যবেক্ষনের জন্য সব দোকানে সেনিটাইজার এবং মাস্ক বাধ্যতামূলক ব্যবহার না
করলে মার্কেটের পক্ষ থেকে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। এছাড়া মার্কেটে প্রবেশে
সময় জীবানুনাশক টানেল ব্যবহার করতে হবে।
কুমিল্লা দোকান মালিক সমিতির
সাধারণ সম্পাদক আতিক উল্যাহ খোকন জানান, আমরা প্রতিটি শপিং মলে এবং দোকানে
নির্দেশনা দিয়েছি তারা ক্রেতা এবং বিক্রেতাদের যেন শতভাগ করোনা
স্বাস্থ্যবিধি মানিয়ে চলার চেষ্টা করেন। এছাড়া স্যানিটাইজার এবং মাস্ক
ব্যবহার যেন বাধ্যতামূলক ভাবে ব্যবহার করেন। আর প্রশাসন এসময় বাজার এবং
শপিং মলে স্বাস্থ্যবিধি মানা নিয়ে যদি মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে ভালো হবে;
তাহলে সাধারণ মানুষের মধ্যে স্বাস্থ্য সচেতনতা বিষয়টি মানার প্রবণতা
বৃদ্ধি পাবে।
অবশ্য গতকাল রোববার সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত
কুমিল্লার সব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলা থাকলেও কেন্দ্রীয় দোকান মালিক সমিতির
সিদ্ধান্ত মোতাবেক তা বাড়িয়ে রাত ৯টা পর্যন্ত করা হয়েছে। আজ সোমবার থেকে এ
সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে।