ই-পেপার ভিডিও ছবি বিজ্ঞাপন কুমিল্লার ইতিহাস ও ঐতিহ্য যোগাযোগ কুমিল্লার কাগজ পরিবার
রোজার মেডিকেল ব্যাখ্যা-
Published : Wednesday, 28 April, 2021 at 12:00 AM
রোজার মেডিকেল ব্যাখ্যা-অধ্যাপক ডা.মোসলেহউদ্দিন আহমেদ ||

মুসলিমরা রোজা রাখলে তাকে বলা হয় ‘সিয়াম’। হিন্দু বা বৌদ্ধরা না খেয়ে থাকলে তাকে বলা হয় ‘উপবাস ’। খ্রিস্টানরা না খেয়ে থাকলে তাকে বলা হয় ‘ফাস্টিং’। বিপ্লবীরা না খেয়ে থাকলে তাকে বলা হয় ‘অনশন’। আর, মেডিক্যাল সাইন্সে উপবাস করলে তাকে বলা হয় অটোফেজি’। খুব বেশি দিন হয়নি, মেডিক্যাল সাইন্স ‘অটোফেজি’র সাথে পরিচিত হয়েছে। ২০১৬ সালে নোবেল কমিটি জাপানের ডাক্তার ‘ওশিনরি ওসুমি’-কে অটোফেজি আবিষ্কারের জন্য পুরষ্কার দেন। এরপর থেকে আধুনিক মানুষেরা ব্যাপকভাবে উপবাস করতে শুরু করেন। যাই হোক, ‘অঁঃড়ঢ়যধমু ‘কি.? অঁঃড়ঢ়যধম শব্দটি একটি গ্রিক শব্দ। অঁঃড় অর্থ নিজে নিজে, এবং চযধম অর্থ খাওয়া। সুতরাং, অটোফেজি মানে নিজে নিজেকে খাওয়া। না, মেডিক্যাল সাইন্স নিজের মাংস নিজে খেতে বলে না। শরীরের কোষগুলো বাইরে থেকে কোনো খাবার না পেয়ে নিজেই যখন নিজের অসুস্থ কোষগুলো খেতে শুরু করে, তখন মেডিক্যাল সাইন্সের ভাষায় তাকেই অটোফেজি বলা হয়। আরেকটু সহজভাবে বলি?
আমাদের ঘরে যেমন ডাস্টবিন থাকে, অথবা আমাদের কম্পিউটারে যেমন রিসাইকেল বিন থাকে, তেমনি আমাদের শরীরের প্রতিটি কোষের মাঝেও একটি করে ডাস্টবিন আছে। সারা বছর শরীরের কোষগুলো খুব ব্যস্ত থাকার কারণে, ডাস্টবিন পরিষ্কার করার সময় পায় না। ফলে, কোষগুলোতে অনেক আবর্জনা ও ময়লা জমে যায়। শরীরের কোষগুলো যদি নিয়মিত তাদের ডাস্টবিন পরিষ্কার করতে না পারে, তাহলে কোষগুলো একসময় নিষ্ক্রিয় হয়ে শরীরে বিভিন্ন প্রকারের রোগের উৎপন্ন করে। ক্যান্সার বা ডায়াবেটিসের মত অনেক বড় বড় রোগের শুরু হয় এখান থেকেই। মানুষ যখন খালি পেটে থাকে, তখন শরীরের কোষগুলো অনেকটা বেকার হয়ে পড়ে। কিন্তু তারা তো আর আমাদের মত অলস হয়ে বসে থাকে না, তাই প্রতিটি কোষ তার ভিতরের আবর্জনা ও ময়লাগুলো পরিষ্কার করতে শুরু করে দেয় ।
কোষগুলোর আমাদের মতন আবর্জনা ফেলার জায়গা নেই বলে তারা নিজের আবর্জনা নিজেই খেয়ে ফেলে। মেডিক্যাল সাইন্সে এই পদ্ধতিকে বলা হয় অটোফেজি। শুধুমাত্র এই জিনিসটা আবিষ্কার করেই জাপানের ওশিনরি ওসুমি (ণড়ংযরহড়ৎর ঙযংঁসর) ২০১৬ সালে নোবেল পুরস্কারটা নিয়ে গেলেন। তিনি আবিষ্কার করেন যে ১২-২৪ ঘন্টা রোজা রাখলে মানুষের দেহে অটোফেযি চালু হয়। তিনি প্রমাণ করেন যে, রোজা রাখার মাধ্যমে মানুষের নি¤œ লিখিত উপকার গুলো হয়-
১। দেহের সেল পরিস্কার হয়।
২। ক্যান্সার সেল ধ্বংস হয়।
৩। পাকস্থলীর প্রদাহ সেরে যায়।
৪। ব্রেইনের কার্যকরীতা বাড়ে।
৫। শরীর নিজে নিজেই সেরে যায় (অঁঃড়ঢ়যধুু)
৬। ডায়াবেটিস ভালো হয়।
৭। বার্ধক্য রোধ করা যায়।
৮। স্থুলতা দূর হয়।
৯। দীর্ঘ জীবন লাভ করা যায়।

আল্লাহ তায়ালা আমাদের সবাইকে রমজান মাসে সবগুলো রোজা রাখার তৌফিক দান করুক...(.সংগৃহীত)