মহাকাশে নিয়ন্ত্রণহীন চীনা রকেটের ধ্বংসাবশেষ রোববার প্রথম প্রহরের পর যেকোনো সময় পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করতে পারে বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের স্পেস-ফোকাসড রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট সেন্টার।
শুক্রবার সন্ধ্যায় যুক্তরাষ্ট্রের অ্যারোস্পেস কর্পোরেশন থেকে এক টুইটে বলা হয়, সিওআরডিএস-র সর্বশেষ অনুমান অনুযায়ী রোববার জিএমটি ০৪:১৯ মিনিটের আট ঘণ্টা আগে বা আট ঘণ্টা পরে চীনের ‘লং মার্চ ৫বি’ রকেটটির ধ্বংসাবশেষ পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করবে।
সিওআরডিএস-র অনুমানে পুনঃপ্রবেশের সম্ভাব্য অঞ্চল হিসেবে নিউ জিল্যান্ডের নর্থ আইল্যান্ডের আশেপাশের কথা বলা হয়েছে। সঙ্গে এটাও বলা হয়েছে, পৃথিবীতে প্রবেশ পথের যেকোনো জায়গায় রকেটের ধ্বংসাবশেষটি আছড়ে পড়তে পারে।
গত ২৯ এপ্রিল ‘লং মার্চ ৫বি’ নামের ওই রকেট চীনের হাইনান দ্বীপ থেকে তিয়ানহে মডিউল নিয়ে পৃথিবীর কক্ষপথের উদ্দেশ্যে রওনা হয়। তিয়ানহে মডিউল চীনের নির্মাণাধীন স্থায়ী মহাকাশ স্টেশনের খুবই গুরুত্বপূর্ণ অংশ। স্টেশনটির তিন ক্রুর বসবাসের কোয়ার্টার এই মডিউলটিতে করেই নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। মহাকাশ স্টেশন স্থাপনের জন্য কক্ষপথে মোট ১১টি মিশন পরিচালনা করবে চীন। এর প্রথমটিতেই ‘লং মার্চ ৫বি’ রকেটে করে তিয়ানহে মডিউল কক্ষপথে পাঠানো হয়।
লং মার্চ ৫বি’র ধ্বংসাবশেষ কতটা বিপদজনক হয়ে উঠতে পারে এ নিয়ে আশঙ্কার পাশপাশি অনেকে এজন্য চীনের তীব্র সমালোচনা করছেন।
যদিও চীনের দাবি, তাদের রকেটের ধ্বংসাবশেষ পৃথিবীর জন্য একদমই বিপদজনক হয়ে উঠবে না।
যে কোনো সময় পৃথিবীর উপর আছড়ে পড়বে চীনা রকেটের ধ্বংসাবশেষ
শুক্রবার চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়, পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশের পরপরই রকেটের ধ্বংসাবশেষ পুড়ে যাবে। তাই সেটির কারণে কোনো ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা নেই বললেই চলে।
তবে হার্ভার্ড ভিত্তিক জ্যোতির্বিজ্ঞানী জনাথন ম্যাকডোয়েল এর আগে রয়টার্সকে বলেছিলেন, পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশের পর রকেটের ধ্বংসাবশেষের পুরোটা পুড়ে না গিয়ে সেটার কিছু অংশ ভূমিতে আঘাত করতে পারে, হয়তো আবাসিক এলাকাতে।
লং মার্চ ৫বি এর ধ্বংসাবশেষের ওজন ২১ টন। এটি এখন পর্যন্ত পৃথিবীতে ধসে পড়তে যাওয়া সবচেয়ে বেশি ওজনের ধ্বংসাবশেষ হতে যাচ্ছে। ধ্বংসাবশেষটি ৯৮ ফুট লম্বা এবং ১৬ ফুট চওড়া। সেটি কক্ষপথ হয়ে পৃথিবীর দিকে ঘণ্টায় প্রায় ২৭ হাজার ৬০০ কিলোমিটার গতিতে ধেয়ে আসছে।