যশোরের একটি মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রে মাহফুজুর রহমান (২০) নামে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। শনিবার দুপুরে যশোর শহরের রেল রোডে মাদকাসক্তি নিরাময় ও পুর্নবাসন কেন্দ্র নামে ওই প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের বিরুদ্ধে এই হত্যার অভিযোগ উঠেছে। পুলিশ রবিবার ভোররাতে সেখানে অভিযান চালিয়ে ১৪ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্যে থানায় নিয়েছে।
নিহত মাহফুজ চুয়াডাঙ্গার জীবননগর বাসস্ট্যান্ড এলাকার মনিরুজ্জামানের ছেলে।
নিহতের বাবা মনিরুজ্জামান সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, মাহফুজ মাদকসেবন করতো। মাদকাসক্তি থেকে মুক্ত করতে গত ২৬ এপ্রিল তাকে যশোরের মাদকাসক্তি নিরাময় ও পুনর্বাসন কেন্দ্রে চিকিৎসার জন্য দেওয়া হয়।
তিনি বলেন, ‘শনিবার বিকালে খবর পাই, মাহফুজকে ওই প্রতিষ্ঠানের লোকজন মারপিট করে মেরে ফেলেছে। পরে তার মরদেহ অজ্ঞাত হিসেবে যশোর জেনারেল হাসপাতালে রেখে তারা চলে যায়। আমরা যশোরে এসে তার মরদেহ হাসপাতালের মর্গে পাই।’
হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ডাক্তার তন্ময় বিশ্বাস বলেন, ‘গতকাল দুপুরে মাদক নিরাময় কেন্দ্র থেকে একটি মৃতদেহ জরুরি বিভাগে আনা হয়। মরদেহ বহনকারী ও নিহত ব্যক্তির কোনও নাম-ঠিকানা লিপিবদ্ধ না করে তারা কৌশলে হাসপাতাল ত্যাগ করে।’
যশোর কোতয়ালি থানার এসআই শংকর বিশ্বাস বলেন, ‘সুরতহাল রিপোর্ট করার সময় মৃতের পিঠ, ঘাড় ও পশ্চাৎদেশে বেশকিছু আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে।’
জানতে চাইলে কোতয়ালি থানার ওসি মো. তাজুল ইসলাম বলেন, ‘রাতে প্রতিষ্ঠানটির সিসিটিভি ফুটেজ দেখে জানা যায়, মাহফুজকে মারপিট করে হত্যা করা হয়েছে। মারপিটের কারণে সে মলত্যাগ করে ফেলে। তখন তাকে দিয়েই ওই মল পরিষ্কার করানো হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘পুলিশের পৃথক কয়েকটি টিম অভিযান চালিয়ে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক পূর্ববারান্দীপাড়ার বাসিন্দা আবুল কাসেমের ছেলে মাসুম করিম ও অপর পরিচালক বারান্দীপাড়া বটতলা এলাকার আনোয়ার হোসেনের ছেলে আশরাফুল কবির, রেজাউল করিম, ওহেদুজ্জামান, ওহিদুল ইসলাম, আল শাহরিয়া, শাহিন, ইসমাইল হোসেন, শরিফুল ইসলাম, এএসএম সাগর আলী, অহেদুজ্জামান সাগর, নুর ইসলাম, হৃদয় ওরফে ফরহাদ ও আরিফুজ্জামানকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্যে থানায় আনা হয়েছে।’
তিনি জানান, মামলার প্রস্তুতি চলছে। তদন্তের পর জানা যাবে কারা ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত।