ই-পেপার ভিডিও ছবি বিজ্ঞাপন কুমিল্লার ইতিহাস ও ঐতিহ্য যোগাযোগ কুমিল্লার কাগজ পরিবার
স্বাস্থ্য দুর্নীতির সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিন
Published : Monday, 24 May, 2021 at 12:00 AM
স্বাস্থ্য দুর্নীতির সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিনস্বাস্থ্য খাতে একের পর এক অত্যন্ত ন্যক্কারজনক দুর্নীতির ঘটনা ঘটছে। রিজেন্ট কা-, জেকেজিকা-, কোটিপতি গাড়িচালক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দেশে-বিদেশে সম্পদের পাহাড়, কেনাকাটায় পুকুরচুরি এমন অনেক খবর প্রায়ই উঠে আসছে গণমাধ্যমে। এসব দুর্নীতি ও অনিয়মের সঙ্গে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও মন্ত্রণালয়ের অনেকের যোগসাজশের অভিযোগ আছে। গতকাল কালের কণ্ঠে প্রকাশিত খবরে জানা যায়, রাজধানীর তিনটি হাসপাতালের নথির সঙ্গে সেখানে থাকা এক্স-রে ফিল্মের সংখ্যার ব্যাপক গরমিল রয়েছে। এই হাসপাতালগুলো হচ্ছে : মুগদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল এবং জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন কেন্দ্র (নিটোর)। নথিপত্রে থাকলেও বাস্তবে প্রায় দেড় লাখ এক্স-রে ফিল্মের কোনো হদিস নেই। মন্ত্রণালয়ের পরিদর্শকদলের প্রতিবেদন অনুযায়ী কোনো কোনো হাসপাতালে এক্স-রে ফিল্ম সরবরাহ না করেই বিল নিয়ে গেছেন ঠিকাদার। আবার কোনোটিতে ১২৫টি ফিল্মের প্যাকেটে পাওয়া গেছে ১০০টি করে। এর আগেও ঢাকার ৯টি হাসপাতালের বিরুদ্ধে একই রকম দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। সেসব অভিযোগের মধ্যে ছিল বাজারমূল্যের চেয়ে অনেক বেশি দামে কেনাকাটা করা, ওষুধ বা উপকরণ না পেয়েই অর্থ পরিশোধ করা, নি¤œমানের উপকরণ, ওষুধ কেনাসহ আরো নানা অনিয়ম। এই যদি হয় দেশের স্বাস্থ্য খাতের অবস্থা, তাহলে দেশের মানুষ চিকিৎসার জন্য কোথায় যাবে?
স্বাস্থ্য খাতে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ দীর্ঘদিনের। অভিযোগ আছে, এখানে অনেক বড় বড় সিন্ডিকেট জড়িত। বলা হয়ে থাকে, এর মাথা থেকে পা পর্যন্ত সর্বত্র পচন ধরেছে। দেশে যখন করোনা মহামারি চলছে, ১২ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে, সাত লাখের বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়ে অত্যন্ত যন্ত্রণাময় জীবন কাটাচ্ছে, তখনো স্বাস্থ্য খাতের বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। মহামারিকে নাকি অনেকে লুটপাটের সুযোগ হিসেবেই দেখেছে। স্বাস্থ্য খাতের কর্তাব্যক্তিদের বিরুদ্ধে অদতার অভিযোগও প্রবল। বলা হচ্ছে, তাঁদের অদতার কারণেই বাংলাদেশ প্রয়োজনীয় টিকা সংগ্রহ করতে পারেনি। টিকাদান কার্যক্রম মাঝপথে বন্ধ হয়ে গেছে। কিন্তু সরকার এই অদ ও দুর্নীতিগ্রস্ত স্বাস্থ্য খাতকে ঠিক করার উদ্যোগ নিচ্ছে না কেন? প্রতিবছর শত শত কোটি টাকার দুর্নীতি হলে স্বাস্থ্য খাতে বাজেট বাড়িয়েই কি কাঙ্তি স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা যাবে?
স্বাস্থ্য খাত আর দশটি খাতের মতো নয়। এখানকার অনিয়ম বহু মানুষের জীবন-মৃত্যুর সঙ্গে সম্পর্কিত। নকল এক্স-রে ফিল্ম আর ভেজাল বা নি¤œমানের ইনগ্রেডিয়েন্ট দিয়ে সঠিক রোগ পরীা কখনো সম্ভব হবে না। আর ভুল রিপোর্টের ওপর ভিত্তি করে দেওয়া চিকিৎসা রোগীর কোনো কাজে আসবে না। রোগীর মৃত্যুই শুধু ত্বরান্বিত হবে। আমরা মনে করি, স্বাস্থ্য খাতের অনিয়ম-দুর্নীতি দূর করা অত্যন্ত জরুরি। এ জন্য বড় ধরনের শুদ্ধি অভিযান পরিচালনা করতে হবে। দুদক ও আর্থিক গোয়েন্দাদের তৎপর হতে হবে। নিয়মিতভাবে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সম্পদের হিসাব নিতে হবে। অনিয়মের প্রতিটি ঘটনাকে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।