শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান
খুলে দিতে সরকার তিন ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী
ডা. দীপু মনি। বুধবার (২৬ মে) দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের চলমান ছুটি এবং
শিক্ষা সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলন এ কথা জানান
তিনি।
শিক্ষামন্ত্রী প্রস্তুতির বিষয় তুলে ধরে বলেন, ‘শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান
খুলে দিতে তিন ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে। একটি হচ্ছে—শিক্ষক-কর্মচারীদের টিকা
নেওয়া, দ্বিতীয়টি হচ্ছে—শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো পরিষ্কার ও স্বাস্থ্যসম্মত
প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলা এবং তৃতীয়টা হচ্ছে—শিক্ষার্থীদের শারীরিক ও
মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়ে নজর দেওয়া।
করোনা টিকা:
শিক্ষামন্ত্রী
বলেন, ‘শিক্ষক-কর্মচারীদের যাদের বয়স চল্লিশের ওপর তারা প্রায় সবাই
ভ্যাকসিন নিয়ে নিয়েছেন। চল্লিশের নিচে যারা তাদেরও অনেকের নেওয়া হয়ে গেছে।
যারা এখনও বাকি রয়েছেন টিকা নিয়ে নিতে পারবেন।’ এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় খোলার
ক্ষেত্রে আবাসিক শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের অগ্রাধিকারভিত্তিতে টিকা দেওয়ার
ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান শিক্ষামন্ত্রী।
স্বাস্থ্যসম্মত প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলা:
মন্ত্রী
বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের যে প্রস্তুতি সেখানে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে
স্বাস্থ্যসম্মত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলার জন্য সঠিক রি-ওপেনিং
গাইডলাইন প্রস্তুত করা করেছিলাম, সেগুলো প্রতিষ্ঠানগুলো ইতোমধ্যেই আমরা
পাঠিয়েছি। স্বাস্থ্যবিধি মেনে যেনও আমরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলতে পারি,
গাইডলাইন অনুসরণ করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো ইতোমধ্যেই প্রস্তুতি সম্পন্ন
করেছে।
শিক্ষার্থীর শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য:
দীপু মনি বলেন,
শিক্ষার্থীদের শারীরিক ও মানসিক বিষয়টি নিয়ে আমরা এর মধ্যেই কাজ করেছি।
শিক্ষার্থীর শারীরিক সুস্থতার জন্য আমরা প্রায় এক লাখ শিক্ষক-কর্মকর্তাকে
প্রশিক্ষণ পুষ্টি বিষয়ক দিয়েছি। ২০ হাজার ২৫০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আমরা ওজন
মাপার যন্ত্র সরবরাহ করেছি। যখন আমাদের শিক্ষার্থীরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে
ফিরে আসবে তখন ওজন এবং উচ্চতা মেপে বিএমআই হিসেব করতে পারা যায়। এছাড়া
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সহায়তায় বিদ্যালয়গুলোর জন্য ৫ কোটি আয়রন ফলিক এসিড
সংগ্রহ করেছি যাতে ছাত্রীদের খাওয়ানো যায়।
তিনি বলেন, একটা স্বাভাবিক
জীবনের যে ব্যত্যয় ঘটেছে তাতে শিক্ষার্থীদের মানসিক অবস্থা অনেক সংকটের
মধ্য দিয়ে গেছে। শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন মানসিক সমস্যার উদ্ভব হতে পারে। এ
বিষয়কে মাথায় রেখে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার ব্যবস্থা করেছি। মানসিক
বিশেষজ্ঞদের সহায়তায় এ বিষয়ে একটি প্রশিক্ষণ ম্যানুয়াল প্রস্তুত করে ৫৪০ জন
শিক্ষক-কর্মকর্তার ওপর পাইলটিং করে এ বিষয়টি চূড়ান্ত করেছি। এখন আমরা ২০০
জন ট্রেইনার তৈরি করছি। এরপর আমরা ফেস টু ফেস এবং অনলাইনে অন্তত দুই লাখ
শিক্ষককে এ প্রশিক্ষণের আওতায় নিয়ে আসবো।
সংবাদ সম্মেলনে প্রাথমিক ও
গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন, শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার
মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা
বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব
মো. আমিনুল ইসলাম খান, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব গোলাম মো.
হাসিবুল আলম, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. সৈয়দ
মো. গোলাম ফারুক, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক আলমগীর মুহম্মদ
মনসুরুল আলম, ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক নেহাল আহমেদসহ
সংশ্লিষ্টরা সংযুক্ত ছিলেন।