অবিরাম বৃষ্টি আর ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার তিস্তা তীরবর্তী চরাঞ্চলের ১৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে চরাঞ্চলের প্রায় ২ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। তলিয়ে গেছে বাদাম, ভুট্টা, পাটসহ নানান জাতের ফসলের ক্ষেত।
অন্যদিকে কোলকোন্দ ইউনিয়নের বিনবিনা এলাকায় সদ্য নির্মিত একটি বাঁধ পানির তীব্র স্রোতে ভেঙে যাওয়ায় নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়ে পড়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, শনিবার (২৯ মে) তিস্তার ডালিয়া পয়েন্টে পানি বিপদসীমার ৩০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অন্যদিকে, গঙ্গাচড়া পয়েন্টে বিপদসীমার ৩২ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
সরেজমিনে গঙ্গাচড়া উপজেলার কোলকোন্দ ইউনিয়নের বিনবিনার চর এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, গত শুক্রবার দিবাগত রাত থেকে তিস্তায় পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় তীব্র স্রোতে বিনবিনা চর এলাকায় স্থানীয় মানুষের নিজস্ব অর্থায়নে সদ্যনির্মিত বাঁধের প্রায় ৬শ’ মিটারজুড়ে ভেঙে গেছে।
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান সোহরাব আলী রাজু জানান, স্থানীয় লোকজন নিজেরাই চাঁদা তুলে প্রায় ২৫ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করেছিলেন এই বাঁধ। বাঁধটি ভেঙে যাওয়ায় প্রায় ৭শ’ পরিবার পানিবন্দি হয়ে পরেছে। এছাড়া পানি বৃদ্ধির ফলে নোহালী ইউনিয়নের চর বাগডহরা, মিনা বাজার; আলমবিদিতর ইউনিয়নের ব্যাংক পাড়া; লক্ষ্মীটারী ইউনিয়নের ইচলী, বাগের হাট, জয়রাম ওঝা, চল্লিশ সাল; গজঘণ্টা ইউনিয়নের ছালাপাক; মর্নেয়া ইউনিয়নের বড় রুপাই, ছোট রুপাই, নরসিংহসহ বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এসব এলাকায় আরও এক হাজার ৩শ’ পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। সেইসঙ্গে তলিয়ে গেছে বাদাম, ভুট্টা, পাটসহ নানান জাতের ফসলের ক্ষেত।
এদিকে ভেঙে যাওয়া বাঁধ রক্ষায় পানি উন্নয়ন বোর্ড এখন পর্যন্ত কোনও পদক্ষেপ নেয়নি বলে এলাকাবাসী অভিযোগ করেছেন।
রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসান হাবীব জানান, ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে বৃষ্টিতে ভারতের উজানে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। ২-৪ দিনের মধ্যে পানি নেমে যাবে।