ই-পেপার ভিডিও ছবি বিজ্ঞাপন কুমিল্লার ইতিহাস ও ঐতিহ্য যোগাযোগ কুমিল্লার কাগজ পরিবার
সিলেটে আবার ভূকম্পন
Published : Sunday, 30 May, 2021 at 12:07 PM
সিলেটে আবার ভূকম্পনসিলেটে আরও এক দফা ‘সামান্য’ ভূকম্পন অনুভূত হয়েছে, যার মাত্রা ছিল রিখটার স্কেলে ২ দশমিক ৮।

দেশের উত্তর পূর্বাঞ্চলীয় এ বিভাগে শনিবার থেকে এ নিয়ে মোট পাঁচ দফা ভূমিকম্প হওয়ায় স্থানীয়দের মধ্যে এক ধরনের আতঙ্ক কাজ করছে।

ভবিষ্যতের বড় বিপদ বিবেচনায় প্রস্তুতির অংশ হিসেবে ভূমিকম্পের সময় করণীয় বিষয়ে মহড়া অনুষ্ঠানের তাগিদ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

সিলেট আবহাওয়া অধিদপ্তরের প্রধান আবহাওয়াবিদ সাঈদ আহমদ চৌধুরী জানান, সর্বশেষ ভূকম্পনটি অনুভূত হয় রোববার ভোর রাত ৪টা ৩৫ মিনিট ১৩ সেকেন্ডে। সিলেট অঞ্চলেই এর উৎপত্তিস্থল।  

আর ঢাকায় আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভূকম্পন পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ওয়্যারলেস সুপারভাইজার জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘খুবই সামান্য মাত্রার’ এই ভূমিকম্পটির কেন্দ্রস্থ্ল ছিল ঢাকা থেকে ২০৫ কিলোমিটার উত্তরপূর্বে।

এর আগে শনিবার সকাল ১০টা ৩৬ মিনিট ৫০ সেকেন্ডে রিখটার স্কেলে ৩ মাত্রার, ১০টা ৫০ মিনিট ৫৩ সেকেন্ডে ৪ দশমিক ১ মাত্রার, ১১টা ৩০ মিনিটে ২ দশমিক ৮ মাত্রার এবং ১টা ৫৮ মিনিট ৪০ সেকেন্ডে ৪ মাত্রার ভূকম্পন রেকর্ড করা হয় সিলেট অঞ্চলে।

দফায় দফায় ঝাঁকুনিতে সিলেট শহরে মানুষের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দেয়। অনেকেই উঁচু ভবন থেকে রাস্তায় নেমে আসেন। তবে কোথাও ক্ষয়ক্ষতির কোনো খবর পাওয়া যায়নি।

আবহাওয়াবিদ মমিনুল ইসলাম বলেন, “সিলেট অঞ্চল ভূমিকম্প ঝুঁকিপূর্ণ, কারণ সিলেট থেকে ৫০-৬০ কিলোমিটার দূরে ডাউকি ফল্টের অবস্থান। এই ফল্টলাইনগুলো ভূমিকম্পপ্রবণ।”

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থাপিত আর্থ অবজারভেটরির পরিচালক ভূতত্ত্ববিদ অধ্যাপক সৈয়দ হুমায়ুন আখতার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, দেশে ‘বিপজ্জনক ভূকম্পনের’ প্রধান উৎস দুটি। এর একটি হল ৩০০ কিলোমিটার দীর্ঘ ডাউকি ‘ফল্ট’। অপরটি টেকনাফ-পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি অঞ্চল সাবডাকশন জোন।

পৃথিবীর উপরিভাগের ৭০-১০০ কিলোমিটার পুরুত্বের লিথোস্ফিয়ার ছোট-বড় ১৩টি খণ্ডে (প্লেটে) বিভক্ত। উত্তপ্ত ও নরম এস্থোনোস্ফিয়ারের ওপর ভাসমান এ প্লেটগুলো গতিশীল।

প্লেটগুলো গতিশীল থাকায় ভূখণ্ড ধীরে ধীরে সরতে থাকে, যেটাকে ‘অ্যাকটিভ ফল্ট’ বা সক্রিয় চ্যুতি বলা হয়। প্লেটের স্থানচ্যুতির সময় জমে থাকা শক্তি বিপুল বেরিয়ে আসে, তখন সংযোগস্থলে ভূকম্পন হয়।

বাংলাদেশের উত্তরে ইন্ডিয়ান প্লেট ও ইউরেশিয়ান প্লেটের সংযোগস্থল; পূর্বে বার্মিজ প্লেট ও ইন্ডিয়ান প্লেটের সংযোগস্থল।

আর 'সাবডাকশন জোন' সমুদ্র তলদেশের এমন এলাকা, যেখানে দুটি টেকটনিক প্লেট মুখোমুখি অবস্থানে থাকে এবং প্লেট দুটো পরস্পরের দিকে এগিয়ে আসতে থাকে। এমন অবস্থায় একটি টেকটনিক প্লেট আরেকটির নিচে চলে গেলে সৃষ্টি হয় ভূমিকম্প।

বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের উপকূল বরাবর বঙ্গোপসাগরের একটি বিশাল 'সাবডাকশন জোন'  রয়েছে।