ভারতে ৫০ দিন করোনাভাইরাসে দৈনিক শনাক্তের সংখ্যা দেড় লাখের কাছাকাছি নেমে এসেছে। সোমবার সকালে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে নতুন করে আরও এক লাখ ৫২ হাজার ৭৩৪ জনের করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের এমন সংখ্যা ছিল সর্বশেষ গত ১১ এপ্রিল।
কোভিডে দৈনিক মৃতের সংখ্যাও গত কয়েকদিনের তুলনায় কমেছে। কিন্তু এখনও তা তিন হাজারের ওপরেই রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে তিন হাজার ১২৮ জনের।
বিভিন্ন রাজ্যেও শনাক্তের সংখ্যঅ কমতে শুরু করেছে। দেড় মাসেরও বেশি সময় পর মহারাষ্ট্রে শনাক্তের সংখ্যা ২০ হাজারের নিচে নেমেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় সেখানে আক্রান্ত হয়েছে ১৮ হাজার ৬০০ জন। কর্নাটক ও কেরালাতেও তা যথাক্রমে ২০ হাজার ৩৭৮ এবং ১৯ হাজার ৮৯৪। দুই সপ্তাহেরও বেশি সময় পর তামিলনাড়ুর দৈনিক সংক্রমণ ৩০ হাজারের নিচে নেমেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় সেখানে আক্রান্ত হয়েছে ২৮ হাজার ৮৬৪ জন।
অন্ধ্রপ্রদেশেও শনাক্ত নেমেছে ১৩ হাজারের ঘরে। পশ্চিমবঙ্গে ১১ হাজারের ঘরে। উড়িষ্যাতেও দৈনিক সংক্রমণ হচ্ছে ১০ হাজারের কম। আসামে এ সংখ্যা সাড়ে তিন হাজারেরও কম এবং পঞ্জাবে তা আড়াই হাজারের আশেপাশে।
উত্তরপ্রদেশ, রাজস্থান, গুজরাট, মধ্যপ্রদেশ, তেলেঙ্গানা, বিহার, হরিয়ানার মতো রাজ্যগুলোতে দৈনিক শনাক্ত দুই হাজারের নিচে নেমেছে। দিল্লি, ঝাড়খণ্ড, হিমাচল প্রদেশে এক হাজারের কম মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন গত কয়েকদিন ধরেই।
সংক্রমণ হ্রাসের জেরে সক্রিয় রোগীর সংখ্যাও কমছে। কমতে কমতে এ সংখ্যা এখন ২০ লাখ ২৬ হাজার ৯২ জনে দাঁড়িয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় সংক্রমণের হার ১০ শতাংশেরও কম।
এদিকে ভারতে করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ে আক্রান্তদের এক-চতুর্থাংশের বয়স ১৮ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে বলে জানা গেছে। দেশটির এক সরকারি সমীক্ষায় উঠে এসেছে এমন তথ্য। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রকাশিত এ সমীক্ষায় দেখা গেছে, ২০২১ সালের মে মাসে আক্রান্তদের ২৬ শতাংশেরও বেশি মানুষের বয়স ১৮ থেকে ৩০ বছর।
মে মাসের ১ থেকে ৭ তারিখের মধ্যে আক্রান্তদের ২৬ দশমিক ৫৮ শতাংশের বয়স ছিল ১৮ থেকে ৩০ বছর। ৮-১৪ মে আক্রান্তদের মধ্যে ১৮-৩০ বছর বয়সীদের হার ২৫ দশমিক ৮৯ শতাংশ। মে মাসের ১৫ থেকে ২১ তারিখের মধ্যে তা আরও কিছুটা কমে ২৫ দশমিক ৬৪ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। একই প্রবণতা দেখা গেছে ৩১ থেকে ৪০ বছর বয়সীদের ক্ষেত্রেও। মে মাসের প্রথম সপ্তাহে মোট আক্রান্তদের মধ্যে ২৩ দশমিক ১২ শতাংশ, দ্বিতীয় সপ্তাহে ২২ দশমিক ৭৯ শতাংশ এবং তৃতীয় সপ্তাহে ২২ দশমিক ৫৮ শতাংশ এই বয়সসীমাভুক্ত।
২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের হুবেই প্রদেশের রাজধানী উহান থেকে ছড়িয়ে পড়ে করোনাভাইরাস। এক পর্যায়ে উৎপত্তিস্থল চীনে ভাইরাসটির প্রাদুর্ভাব কমলেও বিশ্বের অন্যান্য দেশে এর প্রকোপ বাড়তে শুরু করে। চীনের বাইরে করোনাভাইরাসের প্রকোপ ১৩ গুণ বৃদ্ধি পাওয়ার প্রেক্ষাপটে গত ১১ মার্চ দুনিয়াজুড়ে মহামারি ঘোষণা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। তবে আশার কথা হচ্ছে, এরইমধ্যে করোনার একাধিক টিকা আবিষ্কৃত হয়েছে। সূত্র: আনন্দবাজার, ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।