ইসরায়েলের সবচেয়ে দীর্ঘ সময়ের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর দৌড়ের অবসান ঘটতে পারে। রবিবার সন্ধ্যায় ছোট ডানপন্থী দল ইয়ামিনার নেতা নাফতালি বেন্নেত জানিয়েছেন তিনি নতুন একটি সরকার গঠন করতে মধ্যপন্থী দল ইয়াস আতিদের নেতা ইয়াইর লাপিদের সঙ্গে জোট গঠনের চেষ্টা চালাচ্ছেন। ইসরায়েলি রাজনীতিতে ভূমিকম্প ঘটানো এই জোট গঠন সফল হলে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নেতানিয়াহুর ১২ বছরের যাত্রার অবসান ঘটবে। মার্কিন সম্প্রচারমাধ্যম সিএনএন’র প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
রবিবার প্রাইম-টাইম ভাষণে নাফতালি বেন্নেত ইসরায়েলিদের উদ্দেশে বলেন, তিনি পঞ্চম রাউন্ডের নির্বাচন ঠেকাতে এবং দেশকে ঘূর্ণিপাক থেকে উদ্ধারে নতুন একটি সরকারে যোগ দিচ্ছেন। তিনি বলেন, ‘চারটি নির্বাচন এবং তারপর আরও দুইমাস পার হওয়ার পর আমাদের সবার কাছে প্রমাণ হয়ে গেছে নেতানিয়াহুর নেতৃত্বে ডানপন্থী কোনও সরকার হচ্ছে না। হয় পঞ্চম দফার নির্বাচন হতে হবে নয়তো একটি জোট সরকার হবে।’
বিভিন্ন ধরনের একাধিক দলের সমন্বয়ে গঠিত হতে যাওয়া নতুন জোট সরকার কোনও বামপন্থী সরকার হবে এমন প্রচার উড়িয়ে দেন নাফতালি বেন্নেত। তিনি বলেন, সম্ভাব্য জোটসঙ্গীরা তাকে প্রধানমন্ত্রী বানাতেও প্রস্তুত আছে। তিনি বলেন, ‘বামরা কঠিন আপোস করে আমাকে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সুযোগ দিচ্ছে। নতুন এই সরকার যেমন আলোচনা বাদ দেবে না তেমনি কোনও এলাকা হস্তান্তর করে দেবে না, এমনকি প্রয়োজনে সামরিক অভিযানের প্রয়োজন পড়লে তা শুরু করতে ভীত হবে না।’
বেন্নেতের ভাষণের কিছুক্ষণ পর প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু নিজে বিবৃতি দেন। এতে ইয়ামিনা পার্টির নেতা বেন্নেতের সমালোচনা করে বলেন, তিনি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী হতে চাওয়া ছাড়া আর কিছুর পরোয়া করেন না। গত মার্চের নির্বাচনের আগের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে নেতানিয়াহু বলেন, ওই সময়ে তিনি বলেছিলেন তিনি লাপিদ পার্টির সঙ্গে জোট গঠন করবেন না। নেতানিয়াহু দাবি করেন তার প্রতিদ্বন্দ্বি ডানপন্থী দলটির মূলনীতির ভার পালকের সমানও নয়।
ধারণা করা হচ্ছে কোনও জোট সরকার ঘটন হলে প্রথমে প্রধানমন্ত্রী হবেন নাফতালি বেন্নেত আর পরে এই জায়গা পাবেন ইয়াইর লাপিদ।
সর্বশেষ নির্বাচনে মাত্র সাত আসনে জয় পেয়েছে বেন্নেতের দল। তবে ইসরায়েলি রাজনীতিতে অন্যতম ‘কিং মেকার’ হয়ে উঠেছে তার দল। নেতানিয়াহু এবং পরিবর্তনপন্থী ব্লক উভয়েই নিজেদের জোটে বেন্নেতের দলকে পেতে চেয়েছে। তাদের সাতটি আসন পেলে ইসরায়েলি পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে প্রয়োজনীয় ৬১ আসনের কাছাকাছি পৌঁছে যেতো যেকোনও দল।
সরকার গঠন করতে হলে এখন ইয়াইর লাপিদের সঙ্গে নাফতালি বেন্তেতের আনুষ্ঠানিক জোট চুক্তি স্বাক্ষর করতে হবে। সরকার গঠনে সম্মত হওয়া এই জোট চুক্তি স্বাক্ষরের পর তা প্রথমে ইসরায়েলি প্রেসিডেন্ট ও পরে পার্লামেন্টের স্পিকারের সামনে উপস্থাপন করতে হবে। পরে পার্লামেন্ট এক সপ্তাহের মধ্যে নতুন সরকার গঠনের অনুমোদন দেবে। সেই অনুমতি পেলে নতুন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী শপথ নিতে পারবেন।