দক্ষিণ চীন সাগরের বিতর্কিত জলসীমায় চীনের বিরুদ্ধে আকাশসীমা লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছে মালয়েশিয়া। দেশটির অভিযোগ, বিতর্কিত অঞ্চলের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য সারাওয়াকের আকাশপথে সোমবার ১৬টি সামরিক যুদ্ধবিমান উড়িয়েছে চীন। এই ঘটনাকে মালয়েশিয়ার স্বার্বভৌমত্বের জন্য মারাত্মক হুমকি উলেখ করে ইতোমধ্যে চীনের রাষ্ট্রদূতকে তলব করেছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তবে বেইজিংয়ের দাবি আন্তর্জাতিক আইন মেনে নিয়মিত মহড়ায় অংশ নিয়েছে তাদের সামরিক বিমান। বুধবার ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
মালয়েশিয়ার বিমান বাহিনীর এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, চীনের ১৬টি যুদ্ধবিমান সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ২৩ থেকে ২৭ হাজার ফুট উচ্চতায় ২৯০ নটিক্যাল মাইল বেগে মালয়েশিয়ার জলসীমায় অনুপ্রবেশ করে। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসামমুদ্দিন হোসাইন অভিযোগ করেন, চীনা বিমানগুলো মালয়েশিয়ার জলসীমায় বিনা অনুমতিতে প্রবেশ করে। বেইজিংয়ের কাছে এর ব্যাখা চাওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
মালয়েশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসামমুদ্দিন আরও বলেন, ‘মালয়েশিয়ার অবস্থান স্পষ্ট। যে কোন রাষ্ট্রের সঙ্গে তার দেশ কূটনৈতিকপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখতে চায়, কিন্তু তার মানে এই নয়, আমাদের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার বিষয়ে অন্য দেশের সঙ্গে কোন ধরনের আপোষ করবো।’
দুই দেশের উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতি নিয়ে কুয়ালালামপুরের চীনা দূতাবাসের এক মুখপাত্র বিবৃতিতে জানায়, ‘আন্তর্জাতিক আইনের প্রতি সম্মান জানিয়ে নিয়মিত সামরিক মহড়ায় অংশ নেয় বিমানগুলো। কোনও দেশের আকাশসীমানায় প্রবেশ করেনি।’ মালয়েশিয়া এবং চীন বন্ধু রাষ্ট্র বলেও উলেখ করে দূতাবাস।
উলেখ্য, মৎস্য সম্পদসহ খনিজ আহরণের গুরুত্বপূর্ণ দক্ষিণ চীন সাগর দিয়ে বছরে প্রায় ৫ লাখ কোটি ডলারের পণ্য পরিবহন হয়ে থাকে। এই অঞ্চলটি বিশ্ব দরবারে বেশ গুরুত্বপূর্ণ। আর এই পুরো সমুদ্রপথকে নিজেদের অঞ্চল বলে দাবি করে আসছে চীন। তবে আরও কয়েকটি দেশও ওই অঞ্চলের ওপর সার্বভৌমত্ব দাবি করে। দেশগুলো হচ্ছে মালয়েশিয়া, ব্রুনাই, ইন্দোনেশিয়া, তাইওয়ান, ফিলিপাইন ও ভিয়েতনাম। যুক্তরাষ্ট্র আনুষ্ঠানিকভাবে ওই অঞ্চলের দাবি না করলেও আন্তর্জাতিক সমুদ্রপথ হিসেবে ওই অঞ্চলে নিজেদের সামরিক উপস্থিতি ধরে রাখতে চায় তারা। বিতর্কিত অঞ্চলটি নিয়ে দশকের পর দশক ধরে প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলোর বিবাদে জড়িয়েছে চীন।