আফগানিস্তানের বিপক্ষে জয়খরা কাটাতে পারবে বাংলাদেশ?
Published : Thursday, 3 June, 2021 at 12:00 AM
বাংলাদেশের
২০২২ বিশ্বকাপ ও ২০২৩ এশিয়ান কাপ বাছাই শুরু হয়েছিল আফগানিস্তানের বিপক্ষে
খেলে। ওই অ্যাওয়ে ম্যাচে দারুণ খেলেও প্রথমার্ধে হজম করা গোলে হেরে যায়
বাংলাদেশ। বাছাইয়ের পাঁচটি ম্যাচ খেলে মাত্র এক পয়েন্ট নিয়ে আবারও আফগানদের
মুখোমুখি হচ্ছে লাল-সবুজ জার্সিধারীরা। তাজিকিস্তানের দুশানবেতে সবশেষ
হারের শোধ কাতারের দোহায় নেওয়ার অপেক্ষায় জামাল ভূঁইয়ারা।
এই
বাছাইপর্বের গত দুই ম্যাচেও বাংলাদেশ হেরেছে বড় ব্যবধানে। ওমানের কাছে ৪-১
আর কাতারের বিপক্ষে ৫-০ গোলের তিক্ত পরাজয়। এই দুটি ছাড়া অন্য তিন ম্যাচেই
বাংলাদেশের পারফরম্যান্স ভালোই ছিল বলা যায়। আফগানদের বিপক্ষে প্রথম দেখায়
২৭ মিনিটে একমাত্র গোল খাওয়ার পর অগণিত সুযোগ তারা নষ্ট করেছিল। কাতারের
বিপক্ষে ঘরের মাঠে ২-০ গোলে হারলেও ইতিবাচক লড়াই ছিল লক্ষণীয়। আর ভারতের
সঙ্গে তো এগিয়ে গিয়েও ১-১ গোলে করেছিল ড্র। ওই একটিই পয়েন্ট।
চলতি মাসে
আফগানিস্তান, ভারত ও ওমানের বিপক্ষে সবগুলো ম্যাচই বাংলাদেশের আয়োজন করার
কথা। কিন্তু করোনাভাইরাস মহামারির কারণে তা চলে গেছে বিশ্বকাপের মূল ভেন্যু
কাতারে। সেখানেই বৃহস্পতিবার (৩ জুন) দোহার জসিম বিন হামাদ স্টেডিয়ামে
মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ ও আফগানিস্তান। রাত ৮টায় হতে যাওয়া ম্যাচটি সরাসরি
সম্প্রচার করবে দেশের চ্যানেল টি স্পোর্টস ও গাজী টিভি।
‘ই’ গ্রুপের
পয়েন্ট টেবিলে যেমন সবার শেষে বাংলাদেশ, তেমনই পাঁচ দলের মধ্যে ফিফা
র্যাংকিংয়েও সবার নিচে তারা। তবে গুরুত্বপূর্ণ বাকি তিন ম্যাচ থেকে কিছু
পয়েন্ট অর্জন করতে চায় বাংলাদেশ। দক্ষিণ এশীয় প্রতিপক্ষের সঙ্গে আগের দেখায়
যে পারফরম্যান্স করেছিল তারা, সেটাই ছেলেদের কাছ থেকে দেখতে চান জেমি ডে।
অবশ্য প্রস্তুতির ঘাটতি ও ইনজুরির তালিকা লম্বা হওয়ায় তা কঠিন। আফগানদের
বিপক্ষে খেলা দলটির গোলকিপার আশরাফুল ইসলাম রানা, ডিফেন্ডার বিশ্বনাথ ঘোষ,
টুটুল হোসেন বাদশা, ফরোয়ার্ড সাদউদ্দিন ও নাবীব নেওয়াজ জীবন চোট পেয়ে মাঠের
বাইরে। মাহবুবুর রহমান সুফিল করোনার কারণে যেতে পারেননি কাতারে।
প্রস্তুতিতেও
আফগানিস্তান বেশ এগিয়ে। কাতারে আসার আগে ইন্দোনেশিয়া ও সিঙ্গাপুরের সঙ্গে
ম্যাচ খেলেছে তারা। আর ঢাকা ও কাতারে সব মিলিয়ে বাংলাদেশের অনুশীলন দুই
সপ্তাহের একটু বেশি। বিদেশি কোনও দলের বিপক্ষে ঘাম ঝরানো ম্যাচও খেলার
সুযোগ মেলেনি। কাতার আসার আগের দিন ঘরোয়া ক্লাব শেখ জামালের সঙ্গে একমাত্র
ম্যাচ খেলে তারা।
এমন চ্যালেঞ্জিং ম্যাচের আগে সতর্ক জেমি, ‘কাল
(বৃহস্পতিবার) আমাদের বড় একটা ম্যাচ। এটি খেলতে আমরা অধীর হয়ে আছি। জানি
আফগানিস্তানের সঙ্গে ম্যাচটি খুব কঠিন হবে, কারণ তাদের খুব ভালো দল এবং
অনেক খেলোয়াড় ইউরোপে খেলে। ফলে তারা কৌশলগতভাবে ভালো।’
সামনের তিন ম্যাচ
থেকে বাংলাদেশের ফুটবল ভক্তদের জন্য ভালো কিছু আনতে পারবেন বলে আশাবাদী
কোচ, ‘বাংলাদেশের মানুষের সমর্থন দরকার। এই তিন ম্যাচ খুব কঠিন হবে। তাদের
সমর্থন ছেলেদের সাহায্য করবে ভালো কিছু করতে, তারা ভালো ফল পেতে অনুপ্রাণিত
থাকবে। আশা করি তারা শুভ কামনা জানাবে এবং আমরা কিছু পয়েন্ট নিয়ে ফিরতে
পারবো।’
ফল পেতে সেরাটা দেওয়ার বিকল্প দেখছেন না জেমি। দলের কাছে তার
চাওয়া, ‘ফল পেতে আমাদের সেরাটা দিতে হবে। তারা সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে এবং
শতভাগ দেবে এটাই ছেলেদের কাছে আমার চাওয়া। তারা রক্ষণ সামলানোর পাশাপাশি
যেন সুযোগগুলো কাজে লাগাতে পারে।’
এ পর্যন্ত বাংলাদেশ ও আফগানিস্তানের
দেখা হয়েছে আটবার। তার মধ্যে মাত্র একটি জয় লাল-সবুজ জার্সিধারীরা পেয়েছে
১৯৭৯ সালে। এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের ওই লড়াইয়ে আফগানদের সঙ্গে প্রথমবার ২-২
গোলে ড্র করলেও দ্বিতীয় ম্যাচে বাংলাদেশ জেতে ৪-১ গোলে। পরের ছয় ম্যাচে আর
জয়ের দেখা পায়নি তারা। সবশেষ দুটি ম্যাচেই হেরে গেছে। এবার সেই ব্যর্থতার
বৃত্ত ভাঙার পালা। বাংলাদেশ সফল হবে কি না তা জানতে অপেক্ষা করতে হবে আর
একটা দিন।