ক্রিকেটের বৈশ্বিক আসরের সফল আয়োজক হিসেবে বাংলাদেশের বেশ সুনাম আছে। তবে অনেকদিন হলো বাংলাদেশে বসছে না বড় কোনও ক্রিকেট আসর।
বাংলাদেশ
সবশেষ বিশ্বকাপ আয়োজন করেছে প্রায় অর্ধযুগ আগে, ওয়ানডে বিশ্বকাপ আয়োজন এক
দশক আগে। ২০১১ বিশ্বকাপের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানসহ ৮টি ম্যাচ আয়োজন করেছিল
বাংলাদেশ। তারপর এককভাবে ২০১৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আয়োজন করে বাংলাদেশ আরও
একবার ক্রিকেট বিশ্বের নজর কাড়ে।
এখন বাংলাদেশের নতুন লক্ষ্য
পূর্ণাঙ্গভাবে একটি বিশ্বকাপ আয়োজনের। মঙ্গলবার আইসিসি ২০২৪ থেকে ২০৩১
সালের ৮ বছরের চক্রে পুরুষদের বৈশ্বিক টুর্নামেন্ট চূড়ান্ত করেছে। এ সময়ে
ওয়ানডে বিশ্বকাপ আছে দুটি, ২০২৭ ও ২০৩১ সালে। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আছে
চারটি; ২০২৪, ২০২৬, ২০২৮ এবং ২০৩০।
আইসিসি সিদ্ধান্ত নিয়েছে মোট ৮ দল
নিয়ে মিনি বিশ্বকাপ খ্যাত চ্যাম্পিয়নস ট্রফি আয়োজন করবে। ২০২৫ ও ২০২৯ সালে
আবার এই প্রতিযোগিতা শুরু হবে। এছাড়া যুব দল ও নারীদের বিশ্বকাপও রয়েছে এ
সময়ে।
ক্রিকেটের এসব মেগা আসর হাতছাড়া করতে নারাজ বিসিবি। সংস্থাটির
প্রধান নির্বাহী নিজামউদ্দীন চৌধুরী বলেন, ‘২০২৪ থেকে ২০৩১ পর্যন্ত আট
বছরের আইসিসি প্রতিযোগিতা চূড়ান্ত হয়েছে। পরবর্তী ধাপ হচ্ছে হোস্ট
অ্যালোকেশন হবে। আমরাও এতে অংশগ্রহণ করবো। যথাযথ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে
হোস্ট অ্যালোকেশন হবে। এটা আমাদের জন্য কিছুটা হলেও স্বস্তির।’
তবে
আয়োজক স্বত্ব কিভাবে নির্ধারণ হবে তা নিয়ে কিছুটা ধু¤্রজাল তৈরি করেছে।
বিসিবির প্রধান নির্বাহী নিজাম উদ্দীন চৌধুরী জানালেন, আগের সিদ্ধান্ত
অনুযায়ী বিডিং পদ্ধতিতে স্বাগতিক দেশ চূড়ান্ত হবে। কিন্তু আইসিসির গতকালের
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এ পদ্ধতি বাতিল করা হয়েছে। বাছাই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে
নির্ধারিত হবে বিশ্বকাপের আয়োজক।
‘বিডিং প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই আয়োজক
নির্ধারণ হওয়ার কথা। আইসিসির পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানার অপেক্ষায় আমরা। যদি
আইসিসি বিডিং প্রক্রিয়া বাতিলও করে থাকে আমরা বিশ্বকাপ আয়োজনের জোর চেষ্টা
চালাবো। এক্ষেত্রেও আমাদের সুবিধা হবে। আমাদের সঙ্গে অন্য সব বোর্ডের
সম্পর্ক ভালো। আমরা নিশ্চয়ই সবার সমর্থন পাবো।’ যোগ করেন বিসিবির প্রধান
নির্বাহী।
অবকাঠামোগত দিক থেকে বাংলাদেশ পিছিয়ে নেই। বাংলাদেশের বাজারও
বিস্তৃত। এর আগে যে দুটি বড় টুর্নামেন্ট হয়েছে সবকটিতেই আইসিসি লাভবান
হয়েছে। ২০২০ সালের জানুয়ারিতে আইসিসির ইভেন্টগুলো আয়োজনের সম্ভাবনা, বাজার
ব্যবস্থা, নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করতে বাংলাদেশে এসেছিলেন
আইসিসির প্রধান নির্বাহী (সিইও) মানু সোয়ানি ও বাণিজ্যিক ব্যবস্থাপক
(কমার্শিয়াল জেনারেল ম্যানেজার) ক্যাম্পবেল জেমিসন। বিসিবির সভাপতি নাজমুল
হাসান পাপন ও শীর্ষ কর্মকর্তাদের পাশাপাশি দুজন বৈঠক করেন
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গেও।
সেই সময়ে বিসিবির প্রধান নাজমুল হাসান
পাপন জানিয়েছিলেন, বিশ্বকাপ আয়োজনে সুবিধাজনক অবস্থানে আছে বাংলাদেশ। তার
ভাষ্য, ‘আমাদের সুবিধা হলো টেস্ট খেলুড়ে দেশ হিসেবে আমাদের অবকাঠামো
উন্নয়নে তেমন বিনিয়োগ লাগবে না। বিশ্বকাপ আয়োজন করতে হলে অন্ততপক্ষে ৮টি
মাঠের প্রয়োজন। আমরা সুবিধাজনক অবস্থানেই আছি।’ বড় পরিসরে বিশ্বকাপ আয়োজনের
লক্ষ্যে ঢাকার পূর্বাচলে শেখ হাসিনা আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের
নির্মাণ করছে বিসিবি। নিজস্ব খরচে ২০২৩ সালে স্টেডিয়াম নির্মাণ কাজ শেষ
করার ঘোষণা দিলেও কাজে গতি নেই কম।
দীর্ঘ সময়ে আইসিসির বৈশ্বিক
টুর্নামেন্টগুলোর আয়োজক করা হচ্ছে তা জানতে বেশিদিন অপেক্ষা করতে হচ্ছে না।
সেপ্টেম্বরের মধ্যে পুরুষদের বিশ্বকাপের আয়োজক ঘোষণা করা হবে। আর মেয়েদের ও
অনূর্ধ্ব-১৯ দলের বৈশ্বিক ইভেন্টের আয়োজক চূড়ান্ত করা হবে নভেম্বরের
মধ্যে।