ই-পেপার ভিডিও ছবি বিজ্ঞাপন কুমিল্লার ইতিহাস ও ঐতিহ্য যোগাযোগ কুমিল্লার কাগজ পরিবার
নদী বাঁচাতে শুধু আইন নয়, প্রয়োজন আইনের কঠোর প্রয়োগ
Published : Monday, 7 June, 2021 at 12:00 AM
নদী বাঁচাতে শুধু নতুন নতুন আইন পাস করলেই হবে না, বরং বিদ্যমান আইনগুলোর কঠোর প্রয়োগ প্রয়োজন বলে মনে করছেন বিশিষ্টজনরা। রবিবার (৬ মে) বিশ্ব পরিবেশ দিবস-২০২১ উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) উদ্যোগে ‘বাংলাদেশের নদী ব্যবস্থাপনা ও খনন’ শীর্ষক এক ওয়েবিনারে বক্তারা এমন মত দেন।
ওয়েবিনারে সভাপতিত্ব করেন বাপার সহ-সভাপতি ড. নজরুল ইসলাম। আলোচনা করেন নদী বিশেষজ্ঞ ও সিইজিআইএস এর উপদেষ্টা ড. মমিনুল হক সরকার, বাপার নির্বাহী সহ-সভাপতি ডা. মো. আব্দুল মতিন, যুক্তরাষ্ট্রের লকহ্যাভেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মো. খালেকুজ্জামান, জাতীয় নদী জোটের আহ্বায়ক শারমীন মুরশিদ, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক তুহিন ওয়াদুদ, চলনবিল রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্য আফজাল হোসেনসহ আরও অনেকেই। ওয়েবিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মুজিবুর রহমান হাওলাদার।
আলোচনায় আফজাল হোসেন বলেন, পদ্মা ও যমুনার সাথে সাথে চলনবিলকে ক্যাপিটাল ড্রেজিং-এর আওতায় নিয়ে আসা দরকার। চলনবিল পুরোটা খননের প্রয়োজন নেই। কিন্তু নিয়মিত ড্রেজিং করতে হবে। এর আগে যে ড্রেজিং করা হয়েছিল তাতে ড্রেজিং-এর মাটি এমন জায়গায় রাখা হচ্ছিল তাতে সেই মাটি আবার নদীতেই এসে পড়ছে। মাঝে অভিযোগ তোলার পর বন্ধ হলেও এখন আবার একইভাবেই ড্রেজিং চলছে। বড়াল নদীর ক্ষেত্রেও ড্রেজিং-এর একই অবস্থা। আমরা চাই পরিবেশ ও প্রতিবেশ বান্ধব ড্রেজিং করা হোক।
এ আলোচনার সূত্র ধরেই ড. খালেকুজ্জামান বলেন, আমাদের ড্রেজিং এবং পলিমাটির কোনও সঠিক তথ্য নেই। এত টাকা খরচ করে ড্রেজিং করার পর যদি আবার সেই মাটি নাদীতেই পড়ে তাহলে তো এর কোনও লাভ নেই। সঠিক পরিকল্পনা করে এই ড্রেজিং করতে হবে। সরকার বেশ কিছু ড্রেজার কিনেছে। এগুলো দিয়ে আসলে কী পরিমাণ ড্রেজিং করা যাবে তার পরিকল্পনা কিন্তু নেই।
ড্রেজিং-এর মাটির ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে বলতে গিয়ে তিনি বলেন, অনেক দেশ পলিমাটি কেনে। আমরা এই মাটি গ্রামের রাস্তা উঁচু করাসহ নানা কাজে ব্যবহার করতে পারি। এতে ড্রেজিং এর পরের মাটিগুলো কাজে লাগানো সম্ভব।
জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মুজিবুর রহমান হাওলাদার বলেন, নদী সমীক্ষা না করে ড্রেজিং করা উচিত নয়। নদীভিত্তিক কোনও প্রকল্প নিতে হলে সব ধরনের পরীক্ষা করতে হবে। নদী রক্ষায় সবাইকে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও তা হচ্ছে না। সমস্যাগুলো জানা আছে, আইনও আছে, এখন আমরা সকলে মিলে কাজ করলে নদী বাঁচানো সম্ভব। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে যারা ভাল কাজ করতে চান তারা করতে পারছেন না।
ওয়েবিনারের সভাপতির বক্তব্যে নজরুল ইসলাম বলেন, প্রকৃতিসম্মত পন্থা অবলম্বন করলে নদী খননের প্রয়োজনই হতো না। নদীর জীবন আছে, নদী একটি জীবন্ত সত্ত্বা। আমরা যদি প্রকৃতিসম্মত পন্থা অবলম্বন করতাম, তাহলে নদী মারা যেতো না। মূল ব্যর্থতাটা এখানেই।