Published : Tuesday, 8 June, 2021 at 7:28 PM, Update: 08.06.2021 7:30:43 PM
হেফাজতের নতুন ঘোষিত কমিটিতে স্থান পেয়েছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সহিংসতার ঘটনায় আলোচিত দুই নেতা সংগঠনটির জেলা কমিটির সভাপতি মাওলানা সাজিদুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক মুফতি মোবারক উল্লাহ।
কমিটিতে মাওলানা সাজিদুর রহমানকে যুগ্ম মহাসচিব এবং মুফতি মুবারক উল্লাহকে সদস্য পদ দেওয়া হয়েছে। সাজিদুর রহমান এর আগে হেফাজতের বিলুপ্ত কেন্দ্রীয় কমিটির নায়েবে আমির ছিলেন। সোমবার (০৭ জুন) বেলা ১১টার দিকে রাজধানীর খিলগাঁও মাখজানুল উলুম মাদরাসায় এক সংবাদ সম্মেলনে ৩৩ সদস্য বিশিষ্ট নতুন কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ।
কমিটি ঘোষণার সময় সংবাদ সম্মেলনে সাজিদুর রহমানকে বর্তমান মহাসচিব নুরুল ইসলাম জেহাদীর পাশে দেখা গেছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় গত মার্চ মাসের তিন দিনের (২৬-২৮ মার্চ) সহিংসতার ঘটনায় জেলা হেফাজতের এ দুই নেতাকে গ্রেফতারের দাবিতে জেলা আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনসহ এবং বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন মানববন্ধনসহ কর্মসূচি পালন করে আসছে। গত ২ জুন এ দুই নেতাকে গ্রেফতারের দাবিতে সচেতন ব্রাহ্মণবাড়িয়াবাসীর পক্ষে প্রধানমন্ত্রী বরাবর জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে স্মারকলিপি দেওয়া হয়। ওই সহিংসতার ঘটনায় জেলায় ১৫ জন নিহত হন।
অভিযোগ আছে, জেলার বিশিষ্টজনরা গ্রেফতারের দাবি তোলায় সংগঠনটির এই দুই নেতা লোকচক্ষুর অন্তরালে ছিলেন। এরই মধ্যে সহিংসতার ঘটনায় মাওলানা সাজিদুর রহমান ও মোবারক উল্লাহর বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী ১ মে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানায় একটি অভিযোগ জমা দেন। যদিও পুলিশ এখন পর্যন্ত এজাহারটি মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করেনি। এ নিয়ে অসন্তোষ জানিয়েছেন উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী।
এই দুই নেতা হেফাজতের কেন্দ্রীয় কমিটিতে পদ পাওয়ার বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন সরকার বলেন, তারা কোথায় জায়গা পেলো না পেলো এ নিয়ে আমাদের কোনও মাথাব্যথা নেই। তবে তারা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ঘটনায় অপরাধী। এ ঘটনায় তাদেরকে গ্রেফতার করতে হবে। তাদের অপরাধের ধরন অনুযায়ী শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। এটাই আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে দলগত প্রত্যাশা।
উল্লেখ্য, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের বিরোধিতা করে গত ২৬ থেকে ২৮ মার্চ পর্যন্ত তিনদিন ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরসহ বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক সহিংসতা চালায় হেফাজতের নেতাকর্মীরা। সহিংসতা চলাকালে তারা সরকারি-বেসরকারি অন্তত অর্ধশত স্থাপনায় ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। এসব ঘটনায় মোট ৫৬টি মামলা দায়ের হয়েছে। মামলাগুলোর এজাহারে ৪১৪ জনকে আসামি করা হয়েছে। এছাড়া অজ্ঞাত ৩০ থেকে ৩৫ হাজার জনকে আসামি করা হয়। পুলিশ গত আড়াই মাসে অন্তত পাঁচ শতাধিক আসামিকে গ্রেফতার করে।